সোমবার, ৭ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

সম্পত্তির হিসাব

ওনাদের জারিজুরি ফাঁস হোক

বাংলাদেশে সরকারি চাকুরেদের ক্ষমতা যে অবারিত তা ভুক্তভোগীদের অজানা নয়। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় এই মহাক্ষমতাধরদের বেতন ভাতা দেওয়া হলেও উৎকোচ ছাড়া সরকারি অফিসের সেবা পাওয়া আর আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া প্রায় সমান কথা। অবশ্য ক্ষমতাধরদের কথা আলাদা। ‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯’ অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীদের প্রতি পাঁচ বছর পর ডিসেম্বরে সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দেওয়ার বিধান থাকলেও তা কাজীর গরু কিতাবে আছে গোয়ালে নেই প্রবচনের উদাহরণ হয়ে উঠেছে। ৪৩ বছর আগের প্রণীত এই বিধানকে মানছেন না সরকারি চাকুরেরা। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের পর বিধিমালার সংশ্লিষ্ট ধারা উল্লেখ করে সরকারি চাকুরেদের সম্পদের হিসাব দিতে গত বছর জুনে সব মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তাতেও টনক নড়েনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। যথারীতি অন্যান্য বছরের মতো গত বছরও হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া বাকিরা দেননি তাদের সম্পদের হিসাব। এমন পরিস্থিতিতে সম্পদের হিসাব দিতে আবারও তাগিদ দিয়ে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে চিঠি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গত বছরের জুনে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার চিঠি দেওয়ার পরও তা অগ্রাহ্য করার ধৃষ্টতার পিছনে আইনের প্রতি সংশ্লিষ্টদের বেপরোয়া মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে। এ জন্য সরাসরি পদক্ষেপ না নিয়ে পুনরায় সম্পদের হিসাব দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে প্রকারান্তরে সরকারি চাকুরে নামের মহাক্ষমতাধরদের প্রতিপত্তিকে স্বীকার করা হয়েছে। আমরা আশা করব সর্বশেষ তাগিদের পর যারা হিসাব দেবেন সেগুলো যথাযথভাবে নিরীক্ষা করা হবে। প্রদত্ত হিসাবের পাশাপাশি সরকারি চাকরি নামের আলাদিনের চেরাগের বদৌলতে যারা নিজের বা পরিবারের সদস্য এবং অন্যদের নামে যে সম্পত্তি অর্জন করেছেন তা উদঘাটন করা হবে। বিদেশে যারা সম্পত্তির মালিক হয়েছেন তাদের জারিজুরি ফাঁস করাও জরুরি। দুর্নীতি উচ্ছেদ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় যার বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর