নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। সম্প্রতি করোনা সামাল দেওয়ার পরও নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভবপর হয়নি। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব অনুযায়ী গত দুই বছরে মোটা চালের দাম ৩৭ দশমিক ১৪ আর পাইজামের দাম বেড়েছে ২২ শতাংশের বেশি। বেড়েছে ডাল, গুঁড়া দুধ, ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসের দামও। চালের দাম বাড়ার পেছনে সরকারের সংগ্রহনীতি দায়ী। প্রতি বছর ধান-চাল সংগ্রহের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় তা পূরণ হয় না। আমদানি পণ্যের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বিশ্ববাজারের দোহাই দেওয়া হয়। অনেক সময় দেখা যায় বিশ্ববাজারে কোনো পণ্যের দাম কেজিতে ১০ টাকা বাড়লে বাংলাদেশে ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়ার নজির আছে। বাংলাদেশে আমদানি পণ্য নিয়ন্ত্রণ করে কয়েকটি বড় ব্যবসায়ী গ্রুপ। তারা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ায়। সরকারের নীতিনির্ধারকরা ব্যবসায়ীদের এসব কারসাজি জানলেও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। রাজধানীর নিম্ন আয়ের মানুষের বাড়ি ভাড়া বেড়েছে। কম ভাড়ার বাসা খুঁজছেন কিন্তু বাজেটের মধ্যে বাসা পাচ্ছেন না। অনেকেই মাছ-মাংস খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। রোজা শুরুর আগেই ডাল, পিঁয়াজ, রসুন, চালসহ অনেক পণ্যের দাম বেড়েছে। এসবের মধ্যেও ৫ বা ১০ শতাংশ মানুষের আয় বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। জিনিসপত্রের দামের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে পারছে না সরকার। এ ছাড়া আয় যাদের কমেছে তাদের প্রয়োজনমতো সহায়তা দেওয়া হচ্ছে না। স্বল্প আয়ের মানুষ ভীষণ চাপে আছে। এ অবস্থায় দাম বাড়বে না বলে জনগণকে মৌখিক আশ্বাস শুনিয়ে কোনো লাভ হবে না। বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারকে নিত্যপণ্য, বিশেষ করে খাদ্যপণ্যের মজুদ ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে ঘুমন্ত টিসিবিকে জাগ্রত করতে হবে। পণ্যের সরবরাহ ঠিক থাকলে ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ইচ্ছামতো দাম বাড়াতে পারবেন না।