সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়ার লাগাম নেই

মেজর অব. আখতার

দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়ার লাগাম নেই

যে কোনো আলোচিত সময়ের দ্রব্য বা সেবার মূল্য সরাসরি মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। মুদ্রাস্ফীতি বাড়লে দ্রব্য ও সেবার মূল্য বাড়বে এটাই যেন ধ্রুব সত্য। তাই দ্রব্য বা সেবার মূল্য স্থিতিশীল রাখতে হলে সবার আগে মুদ্রাস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। মুদ্রাস্ফীতির সংজ্ঞা হিসেবে বলা হয়- কোনো নির্দিষ্ট সময়কালে সব ধরনের দ্রব্য ও সেবার মূল্য গড়ে বৃদ্ধি পাওয়া। কাজেই এটা খুব পরিষ্কার যে যখন মুদ্রাস্ফীতি হবে তখন দ্রব্য ও সেবার গড় মূল্য বৃদ্ধি পাবে। আবার যখন দ্রব্য ও সেবার গড় মূল্য বৃদ্ধি পাবে তখন মুদ্রাস্ফীতি ঘটবে। অর্থাৎ সংক্ষেপে বলা যায় কোনো কালপরিধিতে পণ্য ও সেবার মূল্য টাকার অঙ্কে বেড়ে গেলে অর্থনীতির ভাষায় তাকে বলা হয় মুদ্রাস্ফীতি। সাধারণত দ্রব্য বা সেবার দাম বেড়ে গেলে মুদ্রা দিয়ে ওই দ্রব্য বা সেবা ক্রয়ে বেশি পরিমাণ মুদ্রার প্রয়োজন কিংবা একই পরিমাণ মুদ্রা দিয়ে আগের পরিমাণ দ্রব্য বা সেবা ক্রয়ে পরিমাণে কম পাওয়া যায়। ফলে মুদ্রাস্ফীতিতে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়। কাজেই পরিষ্কার এবং স্পষ্ট ভাষায় বলা যায়, মুদ্রাস্ফীতি জনগণের সার্বিক স্বার্থের বিপরীত। মুদ্রাস্ফীতি যত বাড়বে জনগণের ভোগান্তি ততই বৃদ্ধি পাবে। কাজেই সর্বাগ্রে যে কোনো সরকারের উচিত হবে মুদ্রাস্ফীতিকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা। দ্রব্যমূল্য আন্দোলনের বিষয় নয় যে কোনো একটি পক্ষ জোরালো আন্দোলন করার ফলে সরকার মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে দেবে, যার ফলে দ্রব্য বা সেবার মূল্য কমে যাবে! মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সবার আগে প্রয়োজন এক দীর্ঘমেয়াদি লাগসই পরিকল্পনা, যথোপযুক্ত সুদৃঢ় কাঠামো ও দক্ষ জনবল। সেই সঙ্গে দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ যা জবাবদিহি সরকারের মাধ্যমে নিশ্চিত হবে। আমাদের প্রথমেই দেখতে হবে মুদ্রাস্ফীতি কেন হয়। মুদ্রাস্ফীতি প্রধানত দুটি কারণে হয়। একটি হলো চাহিদাজনিত এবং অন্যটি মূল্যজনিত। তবে দুটিই সমভাবে দ্রব্য ও সেবার মূল্যবৃদ্ধির জন্য প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে যদিও দুটি ভিন্নভাবে কাজ করে। যখন কোনো দ্রব্য বা সেবার চাহিদা গ্রাহকের কাছ থেকে বাড়ে তখন মূলত চাহিদাজনিত কারণে মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। অন্যদিকে দ্রব্য বা সেবার সরবরাহ বা ক্রেতার কাছে পৌঁছানোর ব্যয় বেড়ে গেলে মূল্যজনিত মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। চাহিদাজনিত মুদ্রাস্ফীতি দ্রব্য ও সেবার ক্রমবর্ধমান মূল্যের অন্যতম প্রধান কারণ। চাহিদাজনিত মুদ্রাস্ফীতি ঘটে যখন দ্রব্য বা সেবার জন্য ভোক্তার চাহিদা কোনো অনিয়ন্ত্রিত কারণে মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যায় তখন চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা কঠিন হয়ে যায়। যেসব কারণে চাহিদাজনিত মুদ্রাস্ফীতি ঘটে তার একটি হলো- যখন এক শ্রেণির মানুষের হাতে অতিরিক্ত অর্থ চলে আসে, এর ফলে চাহিদা বেড়ে যায়। আরেকটি কারণ হলো কালোবাজারি এবং এ কালোবাজারি যত বেশি হবে দ্রব্যের মূল্য তত বৃদ্ধি পাবে। যেমন দেশে প্রায়ই খাদ্যশস্যের মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়, যার প্রধান কারণ কালোবাজারি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণেও চাহিদাজনিত মুদ্রাস্ফীতি হতে পারে। সরকারের অযাচিত খরচ বৃদ্ধিও মুদ্রাস্ফীতির একটি বড় কারণ। কারণ এতে একটি শ্রেণির কাছে অর্থের সরবরাহ বেড়ে যায় ফলে হঠাৎ করে তাদের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। সরকারের অযাচিত বা অপ্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক ভর্তুকিও মুদ্রাস্ফীতি ঘটায়। কারণ এর ফলে একটি সুবিধাভোগী শ্রেণির কাছে অতিরিক্ত অর্থ চলে যায়, ফলে ওই শ্রেণির মানুষের চাহিদা বেড়ে মুদ্রাস্ফীতি ঘটায়। সরকারের ভুল বা অযৌক্তিক বাণিজ্য নীতির কারণে সরকারের বৈদেশিক বাণিজ্য ঋণ বেড়ে গেলে মুদ্রাস্ফীতি ঘটে যা সরাসরি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

মুদ্রাস্ফীতি মানেই হলো বাজারে একটি শ্রেণির হাতে প্রচুর টাকার ছড়াছড়ি। সেক্ষেত্রে টাকার দাম অর্থাৎ মান কমে যাবে। তখন টাকার মান ধরে রাখার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইচ্ছা করলেই নতুন নতুন টাকা ছাপাতে পারে না। টাকার মান কমে গেলে একশ্রেণির গ্রাহক অতিরিক্ত ব্যয়যোগ্য অর্থ আয় করে তখন আপনা আপনিই চাহিদাজনিত মুদ্রাস্ফীতি ঘটে যায়, ফলে দ্রব্যের বা সেবার মূল্য বৃদ্ধি পায় যা আমজনতার ক্রয়ক্ষমতার ওপর সরাসরি আঘাত করে। যখন কোনো একটি সরকারের ভ্রান্ত বা অসৎ উদ্দেশ্যে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড চালায় তখন মানুষের আয়ের ওপর প্রচন্ডতম অসঙ্গতি ও অসামঞ্জস্য দেখা দেয়, যার ফলে আয়ের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। ফলে একটি সুবিধাভোগী শ্রেণির কাছে প্রচুর অর্থ জমা হয়ে যায়, যার ফলে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর আয় লক্ষণীয়ভাবে কমে ও তাদের ভোগান্তি বৃদ্ধি পায়। চাহিদাজনিত মুদ্রাস্ফীতিতে সবচেয়ে বেশি আঘাতপ্রাপ্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমজনতা। রাজনৈতিক প্রতিকূল অবস্থার শিকার হয়ে এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষমতা ও নেতৃত্ব তারা হারিয়ে ফেলেছে, যার ফলে সামাজিক ন্যায়বিচার ও রাজনৈতিক অধিকার অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না। তার ওপরে শক্তিশালী বিরোধী দল ও জনগণের কাছে প্রিয় নেতৃত্বের লক্ষণীয় অভাব সামাজিক ও রাজনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলেছে, ফলে সবকিছুতেই সরকারের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। ফলে সুবিধাভোগী শ্রেণির কাছে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা হয়ে গেছে এতে প্রচন্ড চাহিদাজনিত মুদ্রাস্ফীতি ঘটে গেছে। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে যেমন মূল্যস্ফীতি কমবে না তেমনি দ্রব্য ও সেবার মূল্যও কমার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। এবার দেখা যাক মূল্যজনিত মুদ্রাস্ফীতি কীভাবে জনগণের নাভিশ্বাস তুলেছে। বাজারে যখন কোনো দ্রব্যের বা সেবার অতিরিক্ত চাহিদার সৃষ্টি হয় তখন এর সঙ্গে যৌথভাবে দ্রব্যের বা সেবার সরবরাহ ঘাটতি দেখা দেয়, তখন দ্রব্য প্রস্তুতকারী ও সেবা প্রদানকারীরা তাদের উৎপাদিত দ্রব্যের বা সেবার মূল্য বৃদ্ধির সুযোগ গ্রহণ করে যা মূল্যজনিত মুদ্রাস্ফীতি হিসেবে গণ্য হয়। যদিও মূল্যজনিত মুদ্রাস্ফীতির মূল কারণ হলো যখন কোনো দ্রব্য তৈরি করতে বা সেবা প্রদানে যে সামগ্রীগুলো লাগে তার মূল্য বৃদ্ধি ঘটলে সামগ্রীকভাবে দ্রব্য বা সেবার মূল্য বৃদ্ধি পায়। কোনো দ্রব্য উৎপাদন বা সেবা প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হলে চারটি উপাদানের প্রয়োজন পড়ে- যথা ভূমি, শ্রমিক, পুঁজি ও উদ্যোক্তা। এ চারটি উপাদান মিলে যে খরচ হয় সেটি হলো উৎপাদন পর্যায়ে মোট খরচ। তার সঙ্গে যোগ হয় সরকারের ধার্যকৃত কর। এর পরে বাজারজাতকরণের খরচ। বাজারজাতকরণ খরচের মধ্যে যথা পরিবহন, গুদামজাতকরণ, প্রচার-প্রচারণা তথা বিক্রয় খরচ। এসব উৎপাদন, কর নির্ধারণ ও বাজারজাতকরণের যে কোনো পর্যায়ে যদি খরচের তারতম্য ঘটে তাহলে অবশ্যই দ্রব্যের বা সেবার মূল্য বৃদ্ধি ঘটিয়ে মূল্যজনিত মুদ্রাস্ফীতির সুযোগ সৃষ্টি হয়। যেমন আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেলে দ্রব্যের বা সেবার পরিবহন খরচ বেড়ে যাবে। আবার সরকার যদি মাঝপথে খেয়াল খুশিমতো কর আরোপ করে তাহলেও মূল্য বৃদ্ধি পাবে। সরকারের স্বার্থে বা ছত্রছায়ায় যদি কেউ একচেটিয়া বাজার ভোগ করতে চায় তাহলেও মূল্য বৃদ্ধি পাবে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত উৎপাদনের পরিকাঠামো সংস্কারে অযথা কালক্ষেপণ করলেও মূল্য বৃদ্ধি পাবে। অবকাঠামো নির্মাণে অযথা দীর্ঘ সময় লাগলে বা চলমান নির্মাণ কার্যক্রমে অযথা সময় নিলে বা কালক্ষেপণ করলেও মুদ্রাজনিত মূল্যস্ফীতি ঘটবে। প্রাকৃতিক সম্পদের অব্যবস্থাপনা ও অলাভজনক ব্যবহারও মূল্যজনিত মুদ্রাস্ফীতিতে সরাসরি অবদান রাখে। এ ছাড়াও যখন কোনো সরকার মুদ্রার বিনিময় হার কমায় তখন আমদানিতে মূল্যজনিত মুদ্রাস্ফীতি তৈরি হয়। কারণ তখন সরবরাহ হ্রাস পায় ফলে বাজারে ঘাটতি সৃষ্টি করে। যার ফলশ্রুতিতে মূল্যজনিত মুদ্রাস্ফীতি ঘটে। তখন এর সুযোগ নিয়ে উৎপাদন ও সেবাপ্রদানকারীরা তাদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে দাম বৃদ্ধি করে। আমদানিকৃত দ্রব্য ও সেবায় অতিরিক্ত ও খেয়াল খুশি মতো করারোপও মূল্যজনিত মুদ্রাস্ফীতি ঘটায়।

বাংলাদেশ আমদানিনির্ভর একটি দেশে পরিণত হয়েছে। আমরা পুরো বাজার বিদেশিদের হাতে তুলে দিয়েছি। এক সময় আমরা কোনো কিছুর জন্যই বিদেশিদের মুখাপেক্ষী ছিলাম না। প্রাচীণকালে সাধারণত, আমাদের কোনো হাট-বাজারে ক্রয় করার জন্য আমাদের পূর্ব পুরুষেরা যেতেন না। তারা বাজারে যেতেন বিক্রি করার জন্য। বস্তায় ভরে ধান, সরিষা, ডাল, মসলা বা মাথায় করে পাট বা কার্পাস নিয়ে যেতেন যা বাইরের ব্যবসায়ীরা এসে কিনে নিয়ে যেত। মাছ, মুরগি, মাংস, দুধ, ডিম বা শাকসবজি কিনে খাওয়ার মতো কেউ ছিল না। সবার ঘরেই এগুলো ছিল। কিন্তু আজকের চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। আজকে চাল আসে মিয়ানমার থেকে যা খাওয়া যায় না, তেল আসে মালয়েশিয়া থেকে, ডাল আসে নেপাল থেকে, পিঁয়াজ আসে ভারত থেকে, আদা রসুন আসে চীন থেকে, আম আসে পাকিস্তান থেকে। সব বিদেশি পণ্যে বাজার ভর্তি। সবার হাতে বিদেশি টেলিফোন, কথা বলি অনর্গল। ওড়ে যাচ্ছে সব টাকা। বিদেশ থেকে ছেলেমেয়েদের শুধু ঘাম বা শ্রমে নয় তাদের রক্ত দিয়ে আয় করা টাকা বাতাসে উড়ছে! যেন প্রতিযোগিতা চলছে চাহিদা ও মূল্যজনিত মুদ্রাস্ফীতির ঊর্ধ্বশ্বাসের। আর নাভিশ্বাস উঠছে বিশাল মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্তের খেটে খাওয়া অসহায় মানুষগুলোর। বলা হচ্ছে এদেশের মানুষের চার গুণ ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের বক্তব্য অস্বীকার করার ক্ষমতা আমাদের নেই। তবে কথাতো এটি ঠিক যে দেশে চাহিদাজনিত মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে চার গুণ। সেই সঙ্গে মূল্যজনিত মুদ্রাস্ফীতিও ঘটেছে আরও কয়েক গুণ।

সমস্যা নিয়ে আমরা অনেক আলোচনা করতে পারব তাতে কিন্তু মূল্য হ্রাস হবে না বরং আরও বাড়বে। তারচেয়ে সমাধান খুঁজলে হয়তো সমাধান আসতে পারে যেখান থেকে আমরা সবাই মিলে শুরু করতে পারি আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির আন্দোলন। জানি, অনেকের কাছে অনেক ভালো ভালো সমাধান আছে। তারপরেও আমার মতো করে কয়েকটি সমাধান তুলে ধরলাম সবার তীব্র সমালোচনার জন্য।

১। আমাদের সব প্রয়োজনীয় পণ্য (পচনশীল বাদে) যা আমদানি করতে হয় তার তিন মাসের বাফার স্টকের ব্যবস্থা করা হোক। ২। কুতুবদিয়াতে বিশাল বিশাল কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত গুদাম তথা ওয়্যারহাউস নির্মাণ করা হোক যেখানে বিদেশি রপ্তানিকারকদের পণ্যের শুল্কমুক্ত ফরোয়ার্ড ওয়্যারহাউসের সুযোগ দেওয়া হবে, যেখান থেকে মালামাল বাংলাদেশে রপ্তানি করা হবে। উক্ত ওয়্যারহাউসগুলোতে বাংলাদেশি আমদানিকারকেরাও বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য ক্রয় করে এনে বিনাশুল্কে রাখতে পারবে এবং পরে যখন পণ্যগুলো ওয়্যারহাউস থেকে বের করবে তখন সব শুল্ক পরিশোধ করবে। ৩। ওয়্যারহাউস থেকে ছোট ছোট চালানে পণ্য বের করতে হবে যাতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কম পুঁজিতে ও নগদ বিনিয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য বাজারজাত করতে পারে। ৪। আমদানি শুল্ক বন্ধ করে মূল্য সংযোজন করের আওতা ব্যাপকতর করতে হবে। ৫। উৎপাদন ও পাইকারি পর্যায়ে সব শুল্ক নির্ধারণ পদ্ধতি রহিত করে খুচরা পর্যায়ে শুল্ক ধার্য ও পরিশোধের বিধিবিধান চালু করা দরকার। ৬। শুল্কমুক্ত ফরোয়ার্ড ওয়্যারহাউস থেকে সরাসরি বিদেশি মুদ্রায় পণ্য ক্রয়ের বিধিবিধান রাখাতে হবে। ৭। বাণিজ্যিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সঙ্গে পারস্পরিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য চুক্তি করে বি টু বি সংযোগ করে দেওয়া হোক যাতে ব্যবসায়ীরা সুবিধাজনকভাবে স্বল্প মূল্যে দ্রব্য ও সেবা আমদানি করতে পারে। ৮। কর রেয়াতি ও শুল্কবিহীন সব রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়া হোক। সেই সঙ্গে রপ্তানিতে সব প্রকার প্রণোদনাও বন্ধ করে দেওয়া হোক। ৯। প্রচলিত দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তন করে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে সহায়ক শিক্ষাব্যবস্থার প্রচলন করা হোক। সেই সঙ্গে স্নাতকোত্তর সব উচ্চশিক্ষায় রাষ্ট্রের ব্যয় নিয়ন্ত্রিত করা হোক। ১০। কৃষি উৎপাদনে আরও গুরুত্ব দিয়ে খাদ্য ও কৃষিদ্রব্যে দেশজ চাহিদা পূরণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। ১১। শিল্প উৎপাদন ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশের ভূমি দেশি ও বিদেশি উদ্যোক্তাদের কাছে সহজলভ্য করে দিতে হবে যাতে আমাদের দেশীয় শ্রমশক্তি নিয়োগ করে আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য দ্রব্য ও সেবার উৎপাদনে তাদের পুঁজি বিনিয়োগ করতে পারে। বিষয়টি একান্তভাবেই আমার ব্যক্তিগত চিন্তা ও চেতনার যা সবার সমালোচনার জন্য বিনীতভাবে উপস্থাপন করা হলো।

                লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য।

সর্বশেষ খবর