সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

অস্তিত্ব হারাচ্ছে নদ-নদী

প্রতিশ্রুত পানিবণ্টন চুক্তি প্রত্যাশিত

উজানে একের পর এক বাঁধ নির্মাণের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের সিংহভাগ নদ-নদী অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে। নদ-নদীর দেশ বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা পানি শূন্যতার শিকার হয়ে পড়ছে শুষ্ক মৌসুমে। সবচেয়ে ভয়ংকর প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে পদ্মা নদীতে ফারাক্কা ও তিস্তার গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণের ফলে। এর প্রতিক্রিয়ায় শুধু উত্তরাঞ্চলে প্রায় ২০০টির মতো নদী মরতে বসেছে। নদ-নদীর অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ায় আবহাওয়ায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে। জীববৈচিত্র্যও হুমকির মুখে। তিস্তা, পদ্মাসহ উত্তরাঞ্চলের অনেক নদী এখন হেঁটে পার হওয়া যায়। তিস্তা অববাহিকা অর্থাৎ রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় ৫০টির বেশি নদীর প্রবাহ থেমে যেতে বসেছে উজানে তৈরি গজলডোবা বাঁধের কারণে। দিনাজপুর ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলার ৪০টির বেশি নদীর প্রবাহ বইছে ক্ষীণভাবে। অর্ধশতাব্দী আগে এসব নদীতে ছিল পানির পর্যাপ্ত প্রবাহ ও প্রাণের স্পন্দন। বর্তমানে অনেক স্থানে নদীর অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া দায়। পদ্মা অববাহিকায়ও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ছোট ছোট প্রায় ১০০টি নদী কালের অতলে  হারিয়ে যেতে বসেছে। ব্রহ্মপুত্র নদের অবস্থা আরও করুণ। বাংলাদেশকে বলা হয় মিঠাপানির দেশ। মিঠাপানিই  বাংলাদেশের প্রধান প্রাকৃতিক সম্পদ। এ সম্পদ নিঃশেষ হওয়ার বিপদ সৃষ্টি হয়েছে উজানে একের পর এক বাঁধ সৃষ্টির কারণে। ফারাক্কায় বাঁধ দেওয়ায় পদ্মার অস্তিত্ব বিপদাপন্ন হয়ে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পদ্মার অস্তিত্ব জিইয়ে রাখার জন্য ফারাক্কা থেকে যে পানি ছাড়া হয় তা একেবারেই নগণ্য। অভিন্ন নদীর ওপর উজানের দেশের মতো ভাটির দেশেরও সমান অধিকার রয়েছে। এ অধিকারের প্রতি বন্ধু দেশের সহমত থাকলেও তিস্তার পানি বণ্টনে দুই দেশ প্রতিশ্রুত চুক্তিতে উপনীত হতে পারেনি। বাংলাদেশকে দেওয়া দিল্লির প্রতিশ্রুতি পূরণে অভিন্ন সব নদীর পানি বণ্টনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর