সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

ধর্ষণ মামলার বিচার

নারীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা বন্ধই কাম্য

দেড় শ বছরের পুরনো ধর্ষণ মামলা সংক্রান্ত প্রশ্নবিদ্ধ আইনটি অবশেষে সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ধর্ষণ মামলায় ভুক্তভোগীর চরিত্র সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে তাকে কোণঠাসা করার যে সুযোগ পেতেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তা সংশোধিত আইনে বাদ সাধা হবে। আইনটি সংশোধিত হলে ভুক্তভোগী নারীদের হেনস্তা হওয়া কমবে বলে আশা করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। ধর্ষণ মামলার শুনানিকালে বিদ্যমান সাক্ষ্য-প্রমাণ আইনের ১৫৫ ধারার ৪ উপধারার সুযোগ নিয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা ভুক্তভোগীকে ‘খারাপ মেয়ে’ বা ‘দুশ্চরিত্রা’ প্রমাণের চেষ্টা করেন। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে প্রণীত ওই আইনের ধারা অনুযায়ী মামলার জেরার সময় ধর্ষণের শিকার নারীকে অনেক অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করা হয়। ধর্ষণের অভিযোগ থেকে ধর্ষককে বাঁচাতে এ অপকৌশল অবলম্বন করা হয়। এ ধারাটি বাতিলের দাবি জানাচ্ছিলেন নারী অধিকার আন্দোলনকারীরা। বিদ্যমান আইনটির বিতর্কিত ১৫৫ ধারার ৪ উপধারা বাতিল ও ডিজিটাল রেকর্ড, ফরেনসিক সাক্ষ্যসহ বিভিন্ন বিষয় যুক্ত করে সংশোধন প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে আইন মন্ত্রণালয়। এটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রায় দেড় শ বছরের বিতর্কিত আইনটিকে কালো আইন বলে অভিহিত করতেন নারী অধিকার আন্দোলনকারীরা। একজন নারীর কাছে তার সম্ভ্রমের মূল্যই সবচেয়ে বেশি। কোনো নারী ধর্ষিত হলে দৈহিকভাবেই শুধু নয় মানসিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধর্ষণের পর থানায় অভিযোগ করলে অমার্জিত প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়ার অবাঞ্ছিত ঘটনাও ঘটে অধিকাংশ ক্ষেত্রে। আসামিকে ধর্ষণের অভিযোগ থেকে বাঁচাতে সাক্ষ্য-প্রমাণ আইনের ক্ষমতা বলে আইনজীবীরা ভুক্তভোগীকে হেনস্তা করার যে সুযোগ পান তা বাতিল হলে একটি কালো বিধানের অবলুপ্তি ঘটাবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর