শনিবার, ২৬ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

কোরআন পাঠের ফজিলত...

মো. আমিনুল ইসলাম

কোরআন পাঠের ফজিলত...

কোরআন আল্লাহর বাণী বা ওহি। ওহির আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বার্তা, আদেশ, ইশারা। আল্লাহ রব্বুল আলামিন মানব জাতির জন্য যে বিধিবিধান, আইনকানুন ও নির্দেশনাবলি দুনিয়ায় সব নবী-রসুলের কাছে পাঠিয়েছেন তার নামই ওহি। আল্লাহ বলেন, ‘আমি তোমার কাছে ওহি পাঠিয়েছি যেমনিভাবে নুহ ও তাঁর পরবর্তী নবীদের কাছে পাঠিয়েছিলাম।’ (সুরা নিসা, আয়াত ১৬৩)। আল কোরআন রমজানে প্রিয় নবী রসুল (সা.)-এর ওপর নাজিল করা হয়। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই এটি সম্মানিত কোরআন, এটি রয়েছে একটি রক্ষিত গ্রন্থে, পবিত্র লোকেরা ছাড়া এটা অন্য কেউ স্পর্শ করে না। মহাবিশ্বের প্রভুর তরফ থেকে অবতীর্ণ।’ (সুরা ওয়াকিয়া, আয়াত ৭৭-৮০)। কোরআনকে স্পর্শ করতে গেলে যেমন পবিত্র হওয়া প্রয়োজন তেমনি কোরআনের অর্থও বুঝে পড়তে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘এ কোরআন একটি বরকতময় কিতাব, আমি তা আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি যেন মানুষ এর আয়াতগুলো অনুধাবন করে এবং জ্ঞানবান লোকেরা উপদেশ গ্রহণ করে।’ (সুরা সোয়াদ, আয়াত ২৯)।

আল্লাহ আরও বলেন, ‘আর এটি বরকতময় কিতাব, যা আমি নাজিল করেছি। সুতরাং তোমরা তার অনুসরণ কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, যাতে তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হও।’ (সুরা আনআম, আয়াত ১৫৫)। আমাদের বুঝতে হবে ইমানের ওপর একিন থাকার জন্য যেসব কঠিন সমস্যা ও সংকটের মুখোমুখি আমাদের হতে হয় সেসব কিছু মোকাবিলার জন্য বাস্তব ব্যবস্থা হিসেবে কোরআন তিলাওয়াত করা আমাদের প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য। কোরআনের ওপর আমল করা প্রতিটি মুমিন মুসলমানের জন্য ওয়াজিব। কোরআন যা হালাল বলেছে তা হালাল হিসেবে সাব্যস্ত করা, যা হারাম বলেছে তা হারাম হিসেবে মেনে নেওয়া, যা আদেশ করেছে তা পালন করা এবং যা নিষেধ করেছে তা থেকে বিরত থাকা একজন ইমানদার ব্যক্তির অন্যতম দায়িত্ব। আল্লাহ বলেন, ‘অনুরূপভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতগুলো বর্ণনা করে থাকেন, যেন তোমরা চিন্তাভাবনা করতে পার।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ২৬৬)। আল্লাহ আরও বলেন, ‘আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য, অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছ কি?’ (সুরা কামার, আয়াত ৩২)। কোরআন পড়ার সময় মনোযোগসহকারে শোনা ও চুপ থাকা উচিত। আল্লাহ বলেন, ‘যখন কোরআন পাঠ করা হয় তখন তোমরা মনোযোগসহকারে শুনবে এবং নীরব হয়ে থাকবে, যেন তোমাদের প্রতি দয়া করা হয়।’ (সুরা আরাফ, আয়াত ২০৪)। আমাদের মনে রাখতে হবে কোরআনের বড় আদব হলো যখন তা পাঠ করা হয় তখন শ্রোতা সেদিকে কান লাগিয়ে নিশ্চুপ থাকবে। নবী করিম (সা.) অন্যের কাছে কোরআন শুনতেন। আবদুল্লাহ ইবনে মাসুদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রসুল (সা.) আমাকে বললেন- আমার সামনে কোরআন পাঠ কর। আমি বললাম আমি আপনার কাছে কোরআন পাঠ করব অথচ তা আপনার ওপর অবতীর্ণ হয়েছে! তিনি বললেন আমি অন্যের পাঠ শুনতে পছন্দ করি।’ (বুখারি)।  কোরআন পাঠ করলে ইমান বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ বলেন, ‘মুমিন তো তারাই আল্লাহর স্মরণে যার অন্তর কেঁপে ওঠে আর যখন তাদের সামনে কোরআন তিলাওয়াত করা হয়, তখন তাদের ইমান বৃদ্ধি পায় এবং তারা তাদের রবের ওপরই ভরসা করে।’ (সুরা আনফাল, আয়াত ২)। আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে বেশি বেশি করে কোরআন পাঠ করার এবং কোরআনের আলোকে জীবন গড়ার তৌফিক দান করুন।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর