মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

শিশুরাও ধর্ষণের শিকার

ধর্ষকদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন

বাংলাদেশকে বলা হয় ধর্মভীরু মানুষের দেশ। পৃথিবীর অন্য সব দেশের মানুষ ধর্মাচারে বাংলাদেশের চেয়ে যে পিছিয়ে এটি মনে করার যৌক্তিক কারণ রয়েছে। ধর্মনিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাঙালি মুসলমানদের তুলনা যেমন নেই তেমন সনাতন ধর্মাবলম্বী, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের জন্যও তা সত্যি। পৃথিবীর সব ধর্মে ধর্ষণ ও নারী-শিশু নির্যাতনকে মহাঅপরাধের দৃষ্টিতে দেখা হলেও বাংলাদেশ দিনে দিনে ধর্ষকদের অভয়ারণ্যে পরিণত হচ্ছে। দেশে যত ধর্ষণ ঘটে মানসম্মানের ভয়ে তার সিংহাভাগই বলা যায় ৯৫ শতাংশের বেশি প্রকাশ্যে আসে না। তার পরও ২০২১ সালে সারা দেশে ১ হাজার ১১৭ কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে একক ধর্ষণের শিকার ৭২৩ আর দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় ১৫৫ জন। যার মধ্যে ২০০ প্রতিবন্ধী কন্যাশিশুও রয়েছে। রবিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ২০২১ সালের কন্যাশিশু নির্যাতন নিয়ে জরিপ প্রকাশ করে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে এ জরিপ পরিচালিত হয়। জরিপ অনুযায়ী গত এক বছরে দেশে কন্যাশিশু ধর্ষণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে ৭৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ২০২১ সালে মোট ১১৬ কন্যাশিশু যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজন বিশেষ শিশুও আছে। ২০২০ সালে এ সংখ্যা ছিল ১০৪। গত বছরের তুলনায় এ বছর যৌন হয়রানি বৃদ্ধির হার প্রায় ১২ শতাংশ। এ ছাড়া ২০২১ সালে পর্নোগ্রাফির শিকার হয়েছে ৫২ কন্যাশিশু। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী দেশে প্রতিদিন সহস্রাধিক কন্যাশিশু পর্নোগ্রাফি ও সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়। এর মধ্যে গড়ে ২৫-৩০ জন ভিকটিম সাইবার হয়রানি সম্পর্কিত অভিযোগ কেন্দ্রে মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ দাখিল করে। দেশে ধর্ষকদের দৌরাত্ম্য নিঃসন্দেহে জাতীয় লজ্জার ঘটনা। এ অপরাধ রোধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ সব সামাজিক প্রতিষ্ঠানকে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে করতে হবে সক্রিয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর