শনিবার, ২ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

বখাটেদের দৌরাত্ম্য

সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে

বখাটেদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে রাজধানীসহ দেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চল। বখাটে নামের মানুষ শকুনদের দৌরাত্ম্যে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন অনেক ক্ষেত্রে মাঝপথে স্তব্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশে ৭০ ভাগ মেয়েকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে বাবা-মা বিয়ে দিতে বাধ্য হন এই সাক্ষাৎ শয়তানদের ভয়ে। দেশে ধর্ষণ ও নারী নিগ্রহের যত ঘটনা ঘটে তার অন্তত অর্ধেকাংশের সঙ্গে বখাটেদের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। বখাটেদের কুপ্রস্তাবে সাড়া না দিলেই হামলার শিকার হতে হচ্ছে ভুক্তভোগীকে। এমনকি দিতে হয় প্রাণও। কখনো কখনো ভুক্তভোগীর পরিবারের ওপর আক্রমণ করে বখাটেরা। বখাটেদের ইভ টিজিং ও যৌন হয়রানির কারণে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুজন আত্মহত্যা করেছে। এ সময় ১৬ জন তরুণী-কিশোরীকে যৌন হয়রানি করা হয়। এ কারণে দুর্বৃত্তের হামলায় ১৭ জন আহতও হন। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদনে এমনটি জানানো হয়েছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে বখাটেরা তাদের অপরাধের পরিণতি সম্পর্কে সচেতন নয়। তাই তারা কিছু বিবেচনা না করেই হামলা চালাচ্ছে। আর অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে না পারলে এভাবেই ইভ টিজিংয়ের শিকার হয়ে একের পর এক প্রাণ ঝরে যাবে। পাড়া-মহল্লায় গজিয়ে ওঠা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে, বিনোদন কেন্দ্রে, পাবলিক প্লেসে ও মার্কেট-সংলগ্ন এলাকায় দলগতভাবে বিভিন্ন বয়সী নারী-কিশোরীদের যৌন হয়রানি করছে। এমনকি ফেসবুক ও টিকটকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকেও তারা যৌন হয়রানির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। নারী শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি ও বাল্যবিয়ে বন্ধে সবকিছুর আগে বখাটেদের নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্যও বখাটেরা অন্যতম হুমকি বলে বিবেচিত। মাদকের বিরুদ্ধে আঘাত হানতে হলেও বখাটে নামের মানুষ শকুনদের থামাতে হবে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে যেমন কড়া হতে হবে তেমন সামাজিকভাবেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বাবা-মা যাতে বখে যাওয়া মস্তানদের নিয়ন্ত্রণ করতে বাধ্য হন, সে ব্যবস্থাও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর