বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

দুই বিমানের ধাক্কাধাক্কি

রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতি

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলের একটি প্রবাদ এখনো বেশ প্রচলিত। প্রবাদটি হলো ‘কোম্পানিকা মাল দরিয়ামে ঢাল’। ইংরেজ বণিকরা একসময় এ দেশের হর্তাকর্তা-বিধাতায় পরিণত হয়েছিল। শুধু বাংলা নয়, সারা দক্ষিণ এশিয়ায় বিস্তার হয়েছিল তাদের থাবা। বিদেশি বিজাতীয় ভিনদেশিদের শাসনামলে এ-দেশি কর্মচারীদের মধ্যে রাষ্ট্রীয় সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে যে দায়হীন মনোভাব বিরাজ করত কালের বিবর্তনে স্বাধীন স্বদেশে তা শতগুণ বেড়েছে বলেই মনে হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কর্মকর্তা-কর্মচারীর একাংশের মধ্যে এ অভ্যাস বেশ প্রকট। তার সর্বশেষ প্রমাণ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গারে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিমান নিজেদের আরেকটি বিমানের লেজে ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা। যাতে দুটি বিমানই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বিমানের বোয়িং-৭৩৭-এর সামনের অংশ ও বোয়িং-৭৭৭-এর পেছনের অংশ  ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রবিবার বিকালের এ ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে বিমানে। ক্ষতিগ্রস্ত উড়োজাহাজ দুটি পরিদর্শন শেষে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন প্রতিমন্ত্রী। এটি নাশকতা নাকি দুর্ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। উড়োজাহাজ দুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রবিবার রাতে বিমানের দুবাই ফ্লাইট বাতিল করা হয়। যাত্রীদের সোমবার সকালে নতুন ফ্লাইটে দুবাই পাঠানো হয়। নতুন কেনা দুটি বিমানের মধ্যে বোয়িং-৭৭৭-এর সামনের অংশে থাকা ওয়েদার র‌্যাডম নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ও বোয়িং-৭৩৭-এর লেজের ভার্টিক্যাল স্ট্যাবিলাইজার ভেঙে যাওয়ায় বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে বিমান। এমনিতেই বিমানের শিডিউল ঠিক থাকে না দায়িত্বহীনতার পরিণতিতে। জেদ্দায় এজন্য জরিমানাও গুনতে হয়েছে। যাত্রীরা জাতীয় বিমান সংস্থা নিয়ে অহরহ প্রশ্ন তুলছেন। রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি দেখভালের জন্য দেশবাসীর ট্যাক্সের টাকায় যেসব বিমানকর্মীকে বেতন-ভাতা দেওয়া হয় তাদের ব্যর্থতার দায়ভার তাদেরই নিতে হবে। এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বনের বিকল্প নেই।

সর্বশেষ খবর