সোমবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

পাকিস্তানে কি আবার সামরিক শাসন আসছে

মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার পিএসসি (অব.)

পাকিস্তানে কি আবার সামরিক শাসন আসছে

ইংরেজিতে একটা কথা আছে ব্যাক টু স্কয়ার ওয়ান, অর্থাৎ ঘুরেফিরে আবার একই স্থানে ফেরত। পাকিস্তানের পন্ডিত ব্যক্তিরাই পাকিস্তানকে আর স্বাভাবিক রাষ্ট্র মনে করেন না, অস্বাভাবিক রাষ্ট্র মনে করেন। কারণ, পাকিস্তানই পৃথিবীতে একমাত্র রাষ্ট্র, সেখানে ৭৫ বছরের মধ্যে কোনো প্রধানমন্ত্রীই পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। পাকিস্তানই একমাত্র রাষ্ট্র, যার সামরিক বাহিনী বেসামরিক ও রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের অধীনে কেতাবে থাকলেও বাস্তবে নেই, কখনো ছিল না। পাকিস্তানই একমাত্র রাষ্ট্র যেখানে বৈদেশিক নীতি, প্রতিরক্ষা নীতি ও বৈদেশিক সম্পর্কের বিষয়ে প্রধান ভূমিকায় থাকে সেনাবাহিনী এবং সেনা গোয়েন্দা সংস্থা। পাকিস্তানই একমাত্র রাষ্ট্র যেখানে সেনাশাসকগণ ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার পর কোনোরকম জবাবদিহিতা ও হেনস্তার শিকার হতে হয়নি। যদিও একজন, জেনারেল জিয়াউল হকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। পাকিস্তানই একমাত্র রাষ্ট্র, যার সেনাপ্রধান সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে না জানিয়ে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যুদ্ধ বাধিয়ে দিতে পারে, যার উদাহরণ ১৯৯৯ সালে ভারতের সঙ্গে কারগিল যুদ্ধ। তাই দেখা যায় ৭৫ বছরের ইতিহাসে বিরতি দিয়ে দিয়ে কয়েক দফায় বড় একটা সময় ধরে পাকিস্তানে সামরিক শাসন চলেছে। আবার সামরিক শাসন যখন ছিল না তখনো মূল রাষ্ট্র ক্ষমতা পরোক্ষভাবে সেনাবাহিনীর হাতেই থেকেছে, যে কারণে ওপরে উল্লেখ করেছি পাকিস্তান একটি অস্বাভাবিক রাষ্ট্র। বর্তমান বৈশ্বিক ব্যবস্থায় গ্রহণযোগ্যতার অভাবে সরাসরি সামরিক শাসনের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা কঠিন কাজ। তাই বিগত সময়ে রাজনৈতিক সরকারগুলোকে অনুগত রাখতে পিছন থেকে সেনাবাহিনী অনেক কলাকৌশল গ্রহণ করেছে। সেনাবাহিনীর নির্ধারিত নিয়ন্ত্রণ রেখা, রেডলাইনের বাইরে গেলেই তারা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। একজন প্রধানমন্ত্রীর ফাঁসি হয়েছে, একজন প্রধানমন্ত্রী সাবেক হওয়ার পর আততায়ীর গুলিতে নিহত হয়েছেন, আরেকজন রাজনীতি করার অধিকার হারিয়ে নির্বাসিত হয়েছেন। তিক্ত অভিজ্ঞতা এবং পক্ষগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থাহীনতার ধারাবাহিকতায় এবার মেয়াদ পূর্তির আগে ইমরান খান সরকারের পতন ঘটেছে। তবে সরাসরি সামরিক শাসন না দিয়ে পরোক্ষভাবে সেনা কর্তৃত্ব বজায় রাখার খুব বেশি বিকল্প এই সময়ে সেনাবাহিনীর হাতে নেই। তাই ভবিষ্যতের জন্য সেনাবাহিনীর স্বার্থেই ইমরান খানের রাজনীতি সচল থাকতে পারে। নতুন রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আগামী নির্বাচনের গতিবিধি যে দিকে যেতে পারে বলে আপাতত মনে হচ্ছে তাতে একটা সময়ে এসে এমন হতে পারে সেনাবাহিনীর হাতে সামরিক শাসন জারি করা ব্যতীত আর কোনো বিকল্প নেই। এই কথাগুলোই আজকের লেখায় বিচার-বিশ্লেষণ করব।

প্রথমে প্রাসঙ্গিকতার জন্য একটু পুরনো কথা বলতে হয়। ১৯৫১ সালে পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের রহস্যজনক হত্যাকান্ড এবং ১৯৫৩ সালে তৎকালীন সেনাপ্রধান আইয়ুব খান যখন একই সঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হলেন তখনই পাকিস্তানের আজকের পরিণতি নির্ধারিত হয়ে যায়। সেই পথ ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করার লক্ষ্যে সামরিক শাসন জারি, মোল্লা-মিলিটারির হরিহর আত্মার আঁতাত প্রতিষ্ঠা এবং বৃহত্তর জনমানুষকে দাবিয়ে রাখার জন্য ইসলাম রক্ষা আর হিন্দু ভারত চির শত্রু; এই মন্ত্রে সামরিক বাহিনী প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার পথ বেছে নিয়েছে। তাতে সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকার কেবলই পিছনে গেছে এবং সেই পথ ধরেই স্বাধীনতার মাত্র ২৩ বছরের মাথায় পাকিস্তান দ্বিখন্ডিত হয়ে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে এবং অবশিষ্ট অংশ বর্তমান পাকিস্তান অস্বাভাবিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। পাকিস্তান বিটুইন মস্ক অ্যান্ড মিলিটারি গ্রন্থে হুসেন হাক্কানি তথ্য-উপাত্তসহ বিস্তর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে দেখিয়েছেন অস্বাভাবিক রাষ্ট্র হওয়ার জন্য পাকিস্তানের মোল্লা-মিলিটারির ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অশুভ আঁতাতই প্রধানত দায়ী। মোল্লা-মিলিটারির অশুভ আঁতাতকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন জেনারেল জিয়াউল হক। জিয়াউল হকের সময়ে ইসলাম রক্ষা আর জিহাদ ফিসাবিল্লাহ হয়ে ওঠে রাষ্ট্রীয় স্লোগান। পাকিস্তানি শাসকের কথা শুনে মনে হবে পাকিস্তানের জন্মের আগে ইসলাম ছিল না এবং পাকিস্তান না থাকলে ইসলাম থাকবে না। হুসেন হাক্কানি বইতে উল্লেখ করেছেন একাত্তরের মার্চ মাসে ঢাকায় রাজনৈতিক সংলাপের সময় ইয়াহিয়া খান হুইস্কির গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে বলেছিলেন, আসুন শেখ মুজিব আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসলাম রক্ষা করি। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক অপরিপক্বতা এবং ভূ-রাজনীতির কৌশলে নাবালকত্বের পরিচয় দেওয়াসহ রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে ৫১ বছর আগে ইয়াহিয়া খানের সৃষ্ট উদাহরণের মতোই শেষ পর্যন্ত ইসলাম রক্ষার স্লোগান দিয়েও ইমরান খান নিজের ক্ষমতা রক্ষা করতে পারেননি। ক্ষমতার স্বাভাবিক মেয়াদ শেষ হওয়ার দেড় বছর আগেই ৯ এপ্রিল সংসদে অনাস্থা ভোট গৃহীত হওয়ার মধ্য দিয়ে ইমরান খান সরকারের পতন ঘটেছে। গত এক-দেড় মাস ধরে পাকিস্তানের রাজনৈতিক ক্ষমতার মঞ্চে যেসব নাটক হয়ে গেল তাতে আপাতদৃষ্টিতে ও বাহ্যিকভাবে সেনাবাহিনীর কোনো হাত নেই এরকমই বলা হচ্ছে। কিন্তু এ কথা যারা মানতে নারাজ তাদের মতে, ২০১৮ সালে ইমরান খানের নেতৃত্বে গঠিত কোয়ালিশন সরকারের দলগত সংসদীয় আসন প্রাপ্তির বিন্যাস বিশ্লেষণ করলেই দেখা যাবে সবকিছু সেনাবাহিনীর অদৃশ্য সুতার টানেই ঘটেছে। ক্ষমতার ট্রামকার্ড সেনাবাহিনীর হাতেই ছিল। মুসলিম লীগ (নওয়াজ) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি সর্ববৃহৎ দুই বড় দলের মধ্যে তখন সাপে-নেউলে সম্পর্ক এবং সেনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দুই দলেরই বিগত দিনের তিক্ত সম্পর্কের কারণে ইমরান খান ও তার দল পিটিআই বিকল্প হিসেবে সামনে চলে আসে। তাছাড়া ভূ-স্বামী (জমিদার) শ্রেণির ভুট্টো ডাইন্যাস্টি ও ধনিক পাঞ্জাবি শিল্পপতি শ্রেণির নওয়াজ শরিফ পরিবারের বাইরে উজ্জ্বল ক্রিকেট ব্যাকগ্রাউন্ডের ইমরান খান শহরকেন্দ্রিক নতুন মধ্যবিত্ত ও উঠতি যুব শ্রেণির কাছে একটা গ্রহণযোগ্য বিকল্প তৈরিতে সক্ষম হয়েছেন। এটাই ইমরান খানের বড় প্লাস পয়েন্ট। সবই ঠিক ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক বিপর্যয়, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হওয়ায় সব হিসাব-নিকাশ বদলে গেছে। জামায়াতি উলেমা-ই-ইসলামের প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান যখন ১১টি দল নিয়ে গঠিত পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্টের (পিডিএম) চেয়ারম্যান হলেন তখনই বোঝা গেছে ইমরান খানের দিন শেষ। এই মাওলানা সাহেব চরম দেওবন্দি ও উগ্র ধর্মবাদী, যিনি ইতিপূর্বে মোল্লা-মিলিটারি অক্ষের সব কাজে একজন গুরুত্বপূর্ণ বাহক ও সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করেছেন।

২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত বর্তমান সংসদের মেয়াদ আছে। মুসলিম লীগের বর্তমান সভাপতি, পাঞ্জাবের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী, নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই শাহবাজ শরিফ নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। পিডিএমের ১১টি দলের সবাই সরকারে থাকতে পারে। এখন প্রধান আলোচনার বিষয়, নতুন সরকার কি সংসদের বাকি মেয়াদ পূর্ণ করে নির্বাচনে যাবে, নাকি মধ্যবর্তী নির্বাচনে যাবে। এটা নিয়ে নতুন সংকট তৈরি হতে পারে। ইমরান খান নিজের দল ও মিত্রদের নিয়ে রাস্তায় বড় আন্দোলন গড়ে তুলতে চাইবে, যাতে নতুন সরকার তাড়াতাড়ি নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। অন্যদিকে নতুন সরকার নির্বাচন সংক্রান্ত কিছু আইন ও বিধিবিধান সংশোধন করতে চাইবে, যেটি গত নির্বাচনে ইমরান খানের দলকে সুবিধা দিয়েছে। তবে কতটুকু করতে পারবে তা যেমন এক প্রশ্ন, তেমনি সেটা করতে হলে একটা সময়েরও প্রয়োজন হবে। ইতোপূর্বে সব সময় পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন ও চারটি প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন একই সঙ্গে হয়েছে। কিন্তু জাতীয় পরিষদের জন্য মধ্যবর্তী নির্বাচন করতে চাইলে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন নিয়ে নতুন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। পাখতুনখোয়া প্রদেশে ইমরান খানের দল পিটিআই সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আছে। মেয়াদ পূর্তির আগে তারা ক্ষমতা ছাড়তে চাইবে না। সিন্ধু প্রদেশে পিপল্স পার্টি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আছে। শক্তিশালী পাঞ্জাব প্রদেশে ইমরান খানের পিটিআই কোয়ালিশন সরকার হিসেবে ক্ষমতায় আছে। সেখানেও কেন্দ্রের মতো অনাস্থা প্রস্তাব উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে অনাস্থা প্রস্তাব পাস হলে মুসলিম লীগ সেখানে নতুন সরকার গঠন করতে পারে। অনাস্থা প্রস্তাব পাস হবে কি হবে না, পাস হলে তারপর কী হবে ইত্যাদি সবকিছু মিলে পাঞ্জাবের পরিস্থিতি জাতীয় নির্বাচনের জন্য বড় ফ্যাক্টর হবে এবং নতুন সংকটও তৈরি করতে পারে। সুতরাং আগামী জাতীয় পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংকট কতদূর গড়াবে তার ওপর ভবিষ্যতের অনেক কিছুই নির্ভরশীল। পিপলস পার্টি ও মুসলিম লীগ (নওয়াজ) পরস্পরের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া বিগত দিনের তিক্ততাকে পিছনে ফেলে যদি ঐক্যবদ্ধ এবং জোটভুক্ত হয়ে জাতীয় নির্বাচনে যায় তাহলে সেই জোটের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি, যদি অদৃশ্য শক্তির অন্য কোনো ইচ্ছা না থাকে। ইমরান খান দৃশ্যপট থেকে সরে গেলে পিপলস পার্টি ও মুসলিম লীগের বাইরে আপাতত কোনো বিকল্প থাকে না। সুতরাং কেউ কেউ বলছেন হাতের পাঁচ হিসেবে সেনাবাহিনী ইমরান খানকে রাজনীতির মাঠে সজীব রাখতে চাইবে। তবে বিবিসি প্রদত্ত খবরটি সত্য হলে বিষয়টি আবার অন্যদিকে যাবে। সব নাটকে ব্যর্থ হয়ে শেষ মুহূর্তে ইমরান খান নাকি সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজোয়াকে বরখাস্তের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তাই সেনাবাহিনী ক্ষুব্ধ হলে সেই সুযোগে নতুন সরকার ইমরান খানের বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ আনতে পারে। সব সংকটকে পিছনে ফেলে নতুন জাতীয় নির্বাচনের পর পিপলস পার্টি ও মুসলিম লীগ এক হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে সেনাবাহিনীর জন্য কর্তৃত্ব রক্ষার বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হবে। বিগত দিনের ঘটনাবলি সে কথাই বলে। তবে বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর জন্য সরাসরি ক্ষমতা দখল করা কঠিন কাজ। তাই দুই বিপরীতমুখী পক্ষের সমীকরণ শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তার ওপর নির্ভর করবে ভবিষ্যতে পাকিস্তান কোন দিকে যাচ্ছে।

সেনাবাহিনীর আশীর্বাদপুষ্ট পিডিএমের বর্তমান চেয়ারম্যান মাওলানা ফজলুর রহমান প্রেসিডেন্ট হওয়ার আকাক্সক্ষা প্রকাশ করেছেন। তিনি প্রেসিডেন্ট হলে সেনাবাহিনীর জন্য একটা বড় ট্রামকার্ড তৈরি হবে। নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের জন্য সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য আরেকটি জাতীয় নির্বাচন ও সংখ্যাগরিষ্ঠ স্থিতিশীল সরকার গঠনের লক্ষ্যে আগামী দিনগুলোতে অত্যন্ত কঠিন ও পিচ্ছিল পথে হাঁটতে হবে। বড় ভাই নওয়াজ শরিফের তিন মেয়াদে বিশেষ করে ২০১৭ সালে যত ন্যক্কারজনকভাবে ক্ষমতাচ্যুতি ঘটেছে, তাতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক তৈরি করা শাহবাজ শরিফের জন্য খুব সহজ কাজ হবে না। পিপলস পার্টি ক্ষমতার হিস্যা কতখানি চাইবে সেটা বড় প্রশ্ন আকারে সামনে আসবে। অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করতে না পারলে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নেবে। অন্যদিকে নির্বাচনে হেরে গেলে কারচুপি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রের স্লোগানে ইমরান খান মাঠে নামবে। তাতে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। এ সুযোগে আইএস-আলকায়েদা ও তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামের জঙ্গি সংগঠনগুলো পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বড় বড় সন্ত্রাসী আক্রমণের ঘটনা ঘটাতে পারে, যে চেষ্টা তারা সম্প্রতি সময়ে অনেকবার করেছে। তাতে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে পড়বে। সেরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে জাতির ত্রাতা হিসেবে আগের মতোই সেনাবাহিনী সরাসরি সামনে আসতে পারে। কারণ, এতসব রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং নিরাপত্তার হুমকি সরাসরি সামরিক শাসনের পূর্ব লক্ষণ। তবে আগামী দিনের ঘটনাপ্রবাহের ওপর সবকিছু নির্ভর করছে।

লেখক : রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

[email protected]

সর্বশেষ খবর