মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

খাদ্যে ভেজাল

জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে ঠেকাতে হবে

নকল-ভেজাল খাবার খেয়ে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে ভয়ংকর সব রোগে। রোজার মাসে ভেজাল খাদ্য তৈরি ও বিপণনের মহোৎসব চলছে দেশজুড়ে। ভোক্তাদের অসচেতনতায় চলছে নকল-ভেজাল খাদ্যের মহোৎসব। বিশেষ করে যেসব ইফতারি পণ্য বিক্রি হচ্ছে তার প্রায় শতভাগই অস্বাস্থ্যকর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় ৬০ কোটি মানুষ ভেজাল ও দূষিত খাদ্য গ্রহণের কারণে অসুস্থ হয়। এর মধ্যে মারা যায় ৪ লাখ ৪২ হাজার। দূষিত খাদ্য গ্রহণের কারণে পাঁচ বছরের কম বয়সী আক্রান্ত ৪৩ শতাংশ শিশুর মধ্যে মৃত্যুবরণ করে ১ লাখ ২৫ হাজার। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু ভেজাল খাদ্য গ্রহণের কারণে

প্রতি বছর দেশে ৩ লাখ লোক ক্যান্সারে, ২ লাখ কিডনি, দেড় লাখ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে।  ভেজাল খাদ্যে আক্রান্ত গর্ভবতী মায়েরা ১৫ লাখ বিকলাঙ্গ শিশুর জন্মদান করছেন। ভেজাল খাদ্য গ্রহণের ফলে দেশে হেপাটাইটিস, কিডনি, লিভার ও ফুসফুস সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও দিন দিন বেড়ে চলেছে। ২০১৫ সালে দিনাজপুরে কীটনাশক-মিশ্রিত লিচুর বিষক্রিয়ায় আট ও ২০১২ সালে ১৪ শিশুর প্রাণহানি ঘটে। রাজধানীতে পোলট্রি ফার্মের ডিমে ট্যানারি বর্জ্যরে বিষাক্ত ক্রোমিয়ামের অস্তিত্ব মিলেছে। আটায় মেশানো হচ্ছে চক পাউডার বা ক্যালসিয়াম কার্বনেট। মিষ্টিজাতীয় খাবারে ব্যবহার করা হয় বিষাক্ত রং, সোডা, স্যাকারিন ও মোম।  বাইরে থেকে কেনা তৈরি খাদ্যপণ্যে অস্বাস্থ্যকর উপাদান ব্যবহৃত হয় যথেচ্ছভাবে। শরীরের জন্য ক্ষতিকর রং, প্রিজারভেটিভ, ফরমালিন ব্যবহার হচ্ছে নির্বিবাদে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্য খেয়ে কিডনির ঝুঁকিতে পড়ছে মানুষ। ভোক্তারা আক্রান্ত হচ্ছে নানা দুরারোগ্য ব্যাধিতে। জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে ভেজাল পণ্য রোধে সরকারকে সক্রিয় হতে হবে। এসব দেখভালের জন্য জনগণের টাকায় যাদের পোষা হয় তাদের দায়বোধ নিশ্চিত করাও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর