বুধবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

তেঁতুলতলার মাঠ

শিশুদের খেলার স্থান হিসেবে টিকে থাকুক

রাজধানী থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে খেলার মাঠ। আমাদের শিশুরা বেড়ে উঠছে এক প্রতিবন্ধক পরিবেশে। রাজধানীতে এখনো যক্ষের ধনের মতো টিকে আছে যেসব মাঠ সেগুলোর অস্তিত্বও গিলে খাওয়ার চেষ্টা করছে বিবেকহীনরা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে মাঠ গিলে খাওয়ার অপচর্চায় জড়িত হয়ে পড়েছে পুলিশের নাম। কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠটি অর্ধশতাব্দী ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে এলাকার শিশু-কিশোরদের খেলার মাঠ হিসেবে। বলা নেই কওয়া নেই সে মাঠে থানা নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভূমি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে এলাকাবাসী। কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ার দায়ে পুলিশ সৈয়দা রত্না এবং তাঁর ছেলেকে ধরে নিয়ে থানায় আটকে রাখে। ওই মাঠটি খেলার মাঠ হিসেবে প্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকে তাঁরা সরে আসবেন এমন মুচলেকা দিতে তাঁদের বাধ্য করা হয়। তেঁতুলতলা মাঠ নিয়ে পুলিশের বাড়াবাড়ি বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি করেছে। জনগণের বন্ধু হিসেবে পুলিশ এলাকার একমাত্র মাঠটি রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে এমনটিই দেখতে চান এলাকাবাসী। তার বদলে তারা আন্দোলনকারীদের আটক করবে তা কোনোভাবে শোভনীয় নয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য থানার জন্য বিকল্প জায়গা খোঁজার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে খেলার মাঠটি সরকারিভাবে শিশু-কিশোরদের বরাদ্দ দেওয়ার জন্য বিবৃতি দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা। ১৯ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতিতে মতপ্রকাশের বাধাকে দেশ স্থবির করার নামান্তর বলে অভিহিত করা হয়েছে। মুচলেকা প্রত্যাহারেরও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। রাজধানী থেকে একের পর এক খেলার মাঠ উধাও হয়ে যাওয়ায় শিশুরা যেমন প্রতিবন্ধী মানসিকতার শিকার হচ্ছে, তেমন নিঃশ্বাস নেওয়ার মতো জায়গাও হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করব তেঁতুলতলা মাঠটি সুরক্ষা শুধু নয়, রাজধানীর যেখানেই খেলার মাঠ ও পার্ক রয়েছে সেগুলো সুসংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। কোনো মাঠ বা পার্ক যাতে অপদখল না হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখাও বাঞ্ছনীয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর