শুক্রবার, ৬ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

সত্য এবং শান্তির জয় হবেই হবে

মেজর আখতার (অব.)

সত্য এবং শান্তির জয় হবেই হবে

সম্প্রতি একই মঞ্চে একই বিষয়ের অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দুটি ভিন্ন বিষয়ে বক্তব্যে জনমনে বেশ খটকা সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর প্রথম বক্তব্যটি ছিল র‌্যাব প্রসঙ্গে এবং দ্বিতীয়টি আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে। একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, ‘ঢাকায় নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, র‌্যাবের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে অভিযোগ রয়েছে, তার সুরাহার জন্য সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ এবং বাহিনীর সদস্যদের জবাবদিহি নিশ্চিত না হলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনো সুযোগ নেই।’ রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আইন প্রয়োগের বিষয়ে আমি সৎভাবে বলতে চাই, সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ ও জবাবদিহি ছাড়া র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনো সুযোগ নেই। আমরা এমন একটি র‌্যাব চাই, যারা সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে যেমন কঠিন থাকবে, তেমনি মৌলিক মানবাধিকার সমুন্নত রাখার বিষয়ে সজাগ থাকবে।’ তার মানে রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সুস্পষ্টভাবে বলে দিলেন র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা খুব সহজে প্রত্যাহার হচ্ছে না। যা জনগণ জলবৎ তরলং বুঝে গেছে। কিন্তু গোলমেলে ঠেকছে রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে। তিনি বলছেন, ‘সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ ও জবাবদিহি ছাড়া আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনো সুযোগ নেই।’ তাহলে স্বাভাবিকভাবে জনমনে প্রত্যাশা, ‘সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ’ বলতে তিনি কী বোঝাতে চাচ্ছেন তা সুনির্দিষ্ট করা। কিন্তু রাষ্ট্রদূত হাস তা করেননি। তিনি আবার বলেছেন, ‘জবাবদিহি ছাড়া’ কিন্তু জবাবদিহি কার কাছে করতে হবে তা-ও তিনি পরিষ্কার করেননি। অথচ তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, ‘আমরা এমন একটি র‌্যাব চাই, যারা সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে যেমন কঠিন থাকবে, তেমনি মৌলিক মানবাধিকার সমুন্নত রাখার বিষয়ে সজাগ থাকবে।’ বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি র‌্যাব চায় যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে কঠিন থাকবে। এখন অতি স্বাভাবিকভাবে জনমনে প্রশ্ন জাগে, তাহলে বর্তমান র‌্যাবের দোষ কোথায় এবং কেনই বা তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো? বর্তমান র‌্যাব সন্ত্রাসবাদ দমনে শুধু কঠিন নয়, তারা কঠিনতম এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বলা যেতে পারে। র‌্যাবের এ ধরনের উচ্চমানের অতীত স্বীকৃতি থাকার পরও তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জনমনে অবশ্যই কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। জনগণ মনে করে অন্তত এ কারণে নিষেধাজ্ঞা ধোপে টেকে না এবং জনগণের কাছে খুব একটা ন্যায্যও মনে হয়নি। তাই নিষেধাজ্ঞাটি পূর্ণ বিবেচনার দাবি রাখতেই পারে। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের প্রত্যাশা- মৌলিক মানবাধিকার সমুন্নত রাখার বিষয়ে র‌্যাব সজাগ থাকবে। এখানে এখন চারটি বিষয় সামনে চলে আসে। প্রথমটি হলো ‘মৌলিক মানবাধিকার’, দ্বিতীয় ‘মৌলিক মানবাধিকার বনাম মানবাধিকার’, তৃতীয় ‘গুরুতর মানবাধিকার যা লঙ্ঘন করার দায়ে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা’ এবং চতুর্থ ‘সজাগ থাকা’। গত বছরের ডিসেম্বরে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাব এবং এ বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। তখন কিন্তু মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়নি। বলা হয়েছিল গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে।

যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারি নিয়ে সেমিনারে রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, র‌্যাব এখন যেভাবে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করছে, সেভাবে বাহিনীটিকে কার্যকর দেখতে চান তারা। তবে তাদের মৌলিক মানবাধিকারও মেনে চলতে হবে। তাঁর বক্তব্যে এটি পরিষ্কার যে অতীতে র‌্যাব যেভাবে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করেছিল সেভাবেই যেন সন্ত্রাসবাদ দমনে কঠোর থাকে। কিন্তু মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কথামতো কঠোরভাবে সন্ত্রাসবাদ দমন করতে হলে র‌্যাবকে তো মানবাধিকার নিয়ে অত ভাবলে চলবে না। তখন বেচারারা কীভাবে নিষেধাজ্ঞার হাত থেকে রক্ষা পাবে তা কিন্তু রাষ্ট্রদূত বলেননি।

র‌্যাবের পক্ষে আমার সাফাই গাওয়ার কোনো অবস্থান নেই। কিন্তু আমার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান তথা যদি আগামীতে আমার দলের ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব হয় তাহলে আমাদেরও সন্ত্রাসবাদ দমনে কঠোর থাকতে হবে এবং র‌্যাবকেও বহাল তবিয়তে রেখে মার্কিন বন্ধুদের প্রত্যাশামতো র‌্যাবকে কার্যকর রাখতে হবে। সন্ত্রাসবাদ দমনে র‌্যাবকে কঠোরভাবে কার্যকর রাখতে হলে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হতেই পারে। তখন পুরনো নিষেধাজ্ঞারই কী হবে এবং নতুন নিষেধাজ্ঞা থেকে র‌্যাবকে কীভাবে বাঁচাব! বর্তমানে এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এবং সে লক্ষ্যে ২৪ এপ্রিল ২০২২ রবিবার ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক : সহযোগিতা ও অংশীদারত্ব জোরদারের পথে’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে র‌্যাবের ডিজিকে তাঁর বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। যদিও সেখানে আমাদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি। যেহেতু বিষয়টি পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারের প্রশ্ন তাই যে যা-ই বলুক এ ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য থাকতে হবে এবং থাকবে। যেহেতু রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে আমরা প্রত্যাশিত তাই আমাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য থাকবে যে সংসদ নির্বাচনের আগেই র‌্যাব) এবং এ বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া দরকার। এর জন্য যদি আমাদের ঢাকা-ওয়াশিংটনে ধরনা দিতে হয় তাহলে অবশ্যই তা দেওয়ার জন্য আমরা সব সময় প্রস্তুত থাকব।

রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের দ্বিতীয় বক্তব্যটি দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে। একই বিষয়ভিত্তিক সেমিনারে তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করেই বলছি, আগামী নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কোনো পক্ষ বেছে নেবে না। আমরা শুধু এমন একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া আশা করি, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে- কে দেশ পরিচালনা করবে।’ যুক্তরাষ্ট্রের এ খোলামেলা ঘোষণায় সরকার যথেষ্ট প্রীত ও খুশি। কারণ রাষ্ট্রদূত খুবই প্রাঞ্জল ভাষায় সরকারকে গ্যারান্টি দিয়ে দিয়েছেন যে সংসদ নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের মানে বিরোধীদের সঙ্গে থাকবে না অর্থাৎ আওয়ামী লীগ সরকারের বিপক্ষে তারা থাকবে না। এখন সরকারবিরোধীদের চিন্তা করে দেখতে হবে যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তি যে পক্ষে থাকবে সে পক্ষের বিপক্ষে গিয়ে নির্বাচনে জয়ের আশা কতটুকু করা যায়। তার পরও নির্বাচনে গিয়ে জয়লাভ করা যদি সম্ভবও হয় ক্ষমতায় যাওয়া কতটুকু সম্ভব হবে। ১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার পরও ইয়াহিয়ার সামরিক সরকার আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। কিন্তু তখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন আওয়ামী লীগের পক্ষে না থেকে ইয়াহিয়ার সামরিক সরকারের পক্ষেই ছিল। এমনকি আমেরিকার শত্রু চীনও সেদিন আওয়ামী লীগের বিপক্ষে ছিল। ১৯৮২ সালে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বিচারপতি সাত্তারকে যখন বন্দুকের নলে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে এইচ এম এরশাদ ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়েছিলেন তখনো কোনো শব্দ করেনি। আবার ২০১৮ সালে যখন নির্বাচনের আগের রাতে ভোট ছিনিয়ে পর দিন আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হলো তখন কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র চীন, জাপান, ভারত ও রাশিয়ার সঙ্গে মিলে নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে নির্বাচনের পরপরই সন্ধ্যা ৮টার মধ্যে বিজয়ীর স্বীকৃতি দিয়ে অত্যন্ত রহস্যজনকভাবে তাদের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা অভিনন্দন দিয়ে দিলেন। আর এবার আগে থেকেই ঘোষণা দিয়ে দিচ্ছেন যে আগামী সংসদ নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে মানে বিরোধী দলের সঙ্গে থাকবে না! আমাদের তথা বিরোধী দলের সঙ্গে শুরু থেকেই ভারত নেই। তার পরও আমাদের পুরনো বন্ধু চীন আমাদের বৈরী আচরণে আমাদের বিপক্ষে চলে গেছে। আমাদের পক্ষে চীনের ফিরে আসার কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। জাপানও গোসসা করে আছে আমাদের সঙ্গে। অথচ গোসসা ভাঙানোর কোনো উদ্যোগ নেই। যুক্তরাজ্যও বিভিন্ন কারণে আমাদের ওপর যথেষ্ট আস্থা রাখছে না। তার ওপর লন্ডন থেকে রাজনৈতিক তৎপরতার কারণে তারাও যথেষ্ট বিব্রত! অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে আমাদের প্রতি ফরাসিদেরও তেমন আগ্রহ নেই। মৌলবাদের প্রতি আমাদের অবস্থানগত দুর্বলতার কারণে ইউরোপীয় অন্যান্য রাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে দূরত্ব রেখে চলার চেষ্টা করে। আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামী রাষ্ট্রগুলোর আনুকূল্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সত্য, সে আনুকূল্য আমরা ধরে রাখতে পারিনি। তার ওপর হলো ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’- রোহিঙ্গা ইস্যু। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বার্থে জাতিসংঘের প্রধান দফতর সরকারের সঙ্গে অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ। তারা আমাদের উৎপাত মনে করে। তাই আমাদের কোনো ইস্যু নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। তার ওপর এখন যদি খোদ যুক্তরাষ্ট্র নিজে থেকেই সরকারকে আশ্বস্ত করে যে তারা বিরোধী দলের পক্ষে থাকবে না তাহলে আমরা কোন ভরসায় সামনে এগোব তা আমাদের পুনর্মূল্যায়ন করার প্রয়োজন রয়েছে।

অনেকে হয়তো যুক্তি নিয়ে সামনে আসবেন যে বিরোধী দলের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র থাকবে না- তা তো রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেননি। কিন্তু তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সেমিনারে যেখানে বিরোধী দলের কোনো প্রতিনিধিত্ব ছিল না, সেখানে কেন এবং কোন প্রেক্ষাপটে বললেন আগামী সংসদ নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কারও পক্ষ নেবে না। তার এ অনাহূত বক্তব্য যদি কেউ সহজ ও সরলভাবে নিতে চান তাহলে অবশ্যই তাঁর সঙ্গে একমত পোষণ করতে বিরত থাকব। রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বক্তব্যের পেছনে অবশ্যই গুরুতর কারণ আছে। নিশ্চয় কোনো পক্ষ বা তাদের পক্ষের কোনো পরাশক্তি এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিষ্কার করার চাপ সৃষ্টি করেছিল। না হলে সেদিন আলোচিত সেমিনারে এ বক্তব্য আসতে পারে না। আমার মনে হয় যুক্তরাষ্ট্রের এ খোলামেলা অবস্থান আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার বড় অন্তরায় সৃষ্টি করবে।

পরিশেষে আমি পরিষ্কার মনে করি, হয় আমাদের জনগণের শক্তিতে সর্বশক্তি নিয়ে রাজপথে সরকার পরিবর্তনের আন্দোলনে মাঠে নামতে হবে। হয় সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করতে হবে নতুবা নিজেদের বিলীন করে দিতে হবে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও চরম সত্য, বর্তমান অবস্থায় সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে বাধ্য করার মতো রাজনৈতিক শক্তি ও নেতৃত্ব আমাদের নেই। কারও আছে কি না তা-ও আমার জানা নেই। তা ছাড়া ইতোমধ্যে আমাদের নেতৃত্ব সরকারের সঙ্গে আপস করে ফেলেছে। তাই এখন আন্দোলনে যাওয়া মানেই হলো নিজেদের বিলীন করে দেওয়া। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, আগামীতেও সন্ত্রাসবাদ দমনে যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাবকে কঠোর দেখতে চায় যা সেদিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন। তাই আমি বিলীনের পক্ষপাতী নই। নতুন করে আমি ও আমার কর্মীদের সন্ত্রাসবাদের অপবাদ নিয়ে গুম, খুন, জেল-জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হতে দিতে চাই না। আমি আমার প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে পারি না। রাজপথে গুলি খেয়ে মরতে রাজি আছি, রাজি আছি জেল-জুলুম ও কারা নির্যাতন ভোগ করতে। রাজপথে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী আমরা। যত দিন পর্যন্ত রাজপথে থেকে আন্দোলন করার সামর্থ্য অর্জন করতে না পারব তত দিন আপসের দিকে যেতে চাই আমরা। আমরা সরকারকেও স্থান ছেড়ে দিতে চাই এবং নিজেদের স্থানও তৈরি করে নিতে চাই। আমি সংসদ নির্বাচনের পক্ষে। তবে আগামী নির্বাচনে আমি যুক্তরাষ্ট্রকে আমার পক্ষে চাই না। কোনো ভাগাভাগির নির্বাচনে নয়, আমরা নির্বাচনের মাঠে নিজেদের মতো করে থাকতে চাই। তাই আমরা আবারও নিঃশর্তে নির্বাচনে যেতে চাই। জানি আমাদের হারানো হবে। বারবার হারাতে চাইবে। তবু আমি জনগণের কাছে যাব। আমি সন্ত্রাসবাদে নয়, জনগণের শক্তিতে বিশ্বাসী। জয় একদিন হবেই হবে। কারণ আমি সত্যের পথে, শান্তির পথে- যার বিজয় অবশ্যম্ভাবী।

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য।

সর্বশেষ খবর