শনিবার, ৭ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

শাওয়ালের রোজার ফজিলত

মো. আমিনুল ইসলাম

শাওয়ালের রোজার ফজিলত

শাওয়াল শব্দের অর্থ উঁচু করা, পাল্লা ভারী করা, গৌরব করা, বিজয়ী হওয়া, মর্যাদা লাভ করা। রমজানের এক মাস রোজা রাখার পর শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখা সুন্নত। এ নেক আমলের দ্বারা মুত্তাকি তার ইবাদতে পূর্ণতা লাভ করে, নেকির পাল্লা ভারী করে। আল কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যখন তুমি ফরজ দায়িত্ব সম্পন্ন করবে তখন উঠে দাঁড়াবে এবং নফল ইবাদতের মাধ্যমে তোমার রবের প্রতি অনুরাগী হবে।’ (সুরা ইনশিরা, আয়াত ৭-৮) রসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানে ফরজ রোজা পালন করল, এরপর শাওয়ালে আরও ছয় দিন রোজা পালন করল, সে যেন সারা বছর রোজা রাখল।’ (মুসলিম) অর্থাৎ একজন মুমিন বান্দা যখন রমজানের রোজা রেখে তার সঙ্গে শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখল. সে এ রোজা রাখার কারণে মহান আল্লাহ তাঁকে পূর্ণ একটি বছর রোজা রাখার সওয়াব দান করেন।

অন্য একটি হাদিসে এসেছে, ‘কোনো ব্যক্তি রমজানের ৩০ রোজা রাখলে তার ১০ গুণ হবে ৩০০। আর শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার কারণে ১০ গুণ হবে ৬০। তাহলে ৩৬ রোজা মিলে ১০ গুণে দাঁড়াবে ৩৬০ যা এক বছর রোজা রাখার সমান।’ অর্থাৎ সেই মুমিন ব্যক্তি পুরো বছর রোজা রাখার সওয়াব অর্জন করল। হাদিস দুটি থেকে আমরা বুঝতে পারলাম শাওয়ালের ছয় রোজার গুরুত্ব ও ফজিলত। এ রোজা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। রোজাগুলো রমজানের রোজার ভুলত্রুটি ও অসম্পূর্ণতাকে সম্পূর্ণ করে। এ রোজাগুলো ১ শাওয়াল ঈদের দিন ছাড়া পুরো মাসের যে কোনো ছয় দিন একসঙ্গে বা ভেঙে ভেঙে রাখা যায়। তবে শাওয়ালের মধ্যেই তা আদায় করতে হবে। প্রত্যেক সুস্থসবল ব্যক্তির উচিত শাওয়ালের ছয় রোজা রেখে পূর্ণ এক বছর রোজা আদায়ের সওয়াব অর্জন করা। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘আমার ওপর রমজানের যে কাজা রোজা বাকি থাকত তা পরবর্তী শাবান ছাড়া আমি আদায় করতে পারতাম না।’ (বুখারি, মুসলিম) মনে রাখতে হবে, রমজানের ছুটে যাওয়া কাজা রোজা পরবর্তী রমজান আসার আগে যে কোনো সময়ে আদায় করা যাবে। রমজানের কাজা রোজা রাখার জন্য সময় সংকীর্ণ হলেও তার আগে নফল রোজা রাখা বৈধ ও শুদ্ধ। সুতরাং ফরজ রোজা কাজা করার আগে নফল রোজা রাখতে পারবেন। তবে সম্ভব হলে আগে ফরজ রোজার কাজা আদায় করাই উত্তম। (ফাতাওয়া ইসলামিয়া)

শাওয়ালের ছয় রোজা রাখা রমজানের রোজা কবুল হওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরিচায়ক। আল্লাহ রব্বুল আলামিন বান্দার কোনো আমল কবুল করলে তাকে আরও অনুরূপ আমল দান করেন যা থেকে সে আরও বেশি সওয়াব অর্জন করতে পারে। তাই নামাজ, রোজা, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির, নফল ইবাদত ইত্যাদি বছরজুড়ে আদায় করার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করবে। এটাই মুমিন বান্দার জন্য তাকওয়া আর নেক আমলের বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার তৌফিক দান করুন।

                লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর