রবিবার, ৮ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

ডলার সংকট

অপ্রয়োজনীয় আমদানি বন্ধ হোক

টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে অস্বস্তি হয়ে দেখা দিয়েছে। দুনিয়াজুড়ে মুদ্রাবাজারে ডলারের শক্ত অবস্থান রয়েছে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর থেকে। টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি প্রকারান্তরে বাংলাদেশি মুদ্রার দাম কমে যাওয়ার ইঙ্গিতই দিচ্ছে। রপ্তানিকারকরা ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে খুশি হলেও আমদানিকারকরা পড়েছেন বিপাকে। এর ফলে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত সব ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নানা উদ্যোগ নিয়েও ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। ফলে ৮০ টাকার ডলার এখন ৯২-৯৩ টাকায় কিনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। সাধারণ ক্রেতা পর্যায়ে কোথাও কোথাও এর চেয়ে বেশি দরে ডলারের বেচাকেনা চলছে। এ টালমাটাল পরিস্থিতি চলতে থাকলে ১০০ টাকায় পৌঁছাবে ডলারের দর, এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছে। ডলারের দর বেড়ে যাওয়ায় আমদানি-রপ্তানি খাতে বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে। বাজার স্বাভাবিক রাখতে প্রতিদিনই ডলার খোলাবাজারে ছাড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতনে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে কিছু সুবিধা পাওয়া গেলেও আমদানি খাতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। ফলে বাড়ছে পণ্যমূল্য। ব্যাংকার ও ব্যবসায়ীদের মতে, কোনো কোনো ব্যাংক ডলার ঘাটতির কারণে এলসি পর্যন্ত খুলতে পারছে না। আন্তব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বেশি দামে কেউ কেউ ধার করছে ডলার। সম্প্রতি দেশে আমদানিনির্ভর কয়েকটি পণ্যের দর বৃদ্ধির পেছনেও ডলারের এ টালমাটাল পরিস্থিতিকে দায়ী করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসী দ্রব্য আমদানি নিরুৎসাহ করার তাগিদ দিয়েছেন। করোনাকালে দেশের অর্থনীতি চাপের মুখে থাকলেও দুই বছরে ডলারের দাম বাড়েনি। করোনা-পরবর্তীতে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড জোরেশোরে শুরু হওয়ার মুহূর্তে ডলারের দাম বৃদ্ধি ঘোরতর সংকট হয়ে দেখা দিতে পারে। এ বাস্তবতায় বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে সরকারকে সচেতন থাকতে হবে। ভোগ্যপণ্য ও শিল্পকারখানার মূলধনী যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল আমদানি ছাড়া অন্য সব আমদানি খাতকে নিরুৎসাহ করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর