মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

রাজস্ব আদায়ে মন্দা

করভীতি কমাতে হবে

রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য পূরণ না হওয়া এ দেশে অপরিহার্য নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশ পরিচালনা ও উন্নয়নের জন্য অর্থ প্রয়োজন। এ অর্থ আসে রাজস্ব থেকে। সে ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকলে সরকার পরিচালনায় যেমন সংকটে পড়তে হয়, তেমন প্রত্যাশিত উন্নয়নও সম্ভব হয় না। আমাদের দেশে সেই মুঘল, পাঠান কিংবা তার আগে কৃষকের উৎপাদিত ফসলের এক তৃতীয়াংশ আদায় করা হতো রাজস্ব হিসেবে। আজ এ খাতটিতে সরকারের আয় শূন্য বললেও বেশি বলা হবে। কারণ জমিজমা থেকে যে রাজস্ব আদায় করে সরকার, তার চেয়েও বেশি ভর্তুকি দেয় সার, সেচ, ডিজেল ইত্যাদি খাতে। এখন অবশ্য দুনিয়ার কোনো দেশের রাজস্ব ফসল উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল নয়। কর আরোপের হাজারো মাধ্যম রয়েছে সরকারের হাতে। আমাদের দেশে কর আদায়ের বড় দুর্বলতা অদক্ষতা ও কর ফাঁকি। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হওয়ায় দুনিয়াজুড়ে ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এখন লাভে নেই। অর্থনীতিতে গতি কমে গেছে। ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আয় না বাড়লেও খরচ বেড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজস্ব বাড়াতে করহার কমিয়ে আয়কর ও ভ্যাটের আওতা সম্প্রসারণ করতে হবে। মুখে বড় কথা বললেও রাজস্ব আদায়ে এনবিআরের কোনো সংস্কার হয়নি। বরং কর আদায়ে দুর্বলতা ও অদক্ষতার পাশাপাশি কর ফাঁকি থাকায় সরকারি কোষাগারে সঠিকভাবে রাজস্ব জমা হচ্ছে না। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এখন আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য দিয়ে শুল্ককর আর বাড়ানোর সুযোগ নেই। ফলে রাজস্ব আদায় বড় চ্যালেঞ্জ। এ পরিস্থিতিতে অনেকটা স্বনির্ভর হয়ে ওঠা পোশাকশিল্পে ভর্তুকি কমানোর কথা ভাবতে হবে। এনবিআরকে নির্দিষ্ট গন্ডি থেকে বেরিয়ে গ্রাম ও জেলা শহরগুলোয় কর আদায়ে নজর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভ্যাটের বদলে আয়কর আদায়ে বেশি নজর দেওয়া প্রয়োজন। আয়কর আদায়ে আয়কর আইনজীবীর বদলে সরাসরি কর প্রদানের পদ্ধতি প্রবর্তন করলে অনেকেই আয়কর দিতে উৎসাহিত হবে। খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি হওয়ায় অনেকে যে করদেওয়ার প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকেন তা একটি মহাসত্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর