বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

অশান্ত শ্রীলঙ্কা

স্বস্তি ফিরে আসুক সার্ক দেশটিতে

অর্থনৈতিক সংকটে পর্যুদস্ত শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক সহিংসতা দানা বেঁধে উঠেছে। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে অগ্রসর এই দেশটির অর্থনীতির প্রাণভোমরা ছিল পর্যটন আয়। দুই বছরের করোনা ঘাতে এ খাতের আয় প্রায় শূন্যে দাঁড়ায়। সস্তা জনপ্রিয়তার লোভে রাজাপক্ষে সরকার ভ্যাট ও করের হার কমিয়ে দেওয়ার যে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত দেয় তা-ও তাদের বিপদ ডেকে আনে। পর্যটন খাতের আয় ব্যাপকভাবে হ্রাস পাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হুমকির মুখে পড়ে। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়ায় খাদ্যাভাব। বৈদেশিক মুদ্রার খরচ কমাতে রাসায়নিক সার আমদানির বদলে জৈবিক সার ব্যবহারের সিদ্ধান্তে খাদ্য উৎপাদন প্রায় এক-চতুর্থাংশ হ্রাস পায়। এর আগে অপ্রয়োজনীয় বেশ কিছু মেগা প্রকল্প হাতে নিয়ে দেশটি আকাশছোঁয়া চীনা ঋণে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। বিদেশি ঋণের কিস্তি দূরের কথা, সুদ শোধ করাও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এ প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে গণদাবির মুখে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলে তাঁর পরিবারের পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যায়। শ্রীলঙ্কার অধঃপতিত অবস্থার জন্য রাজাপক্ষে পরিবার দায়ী এমন ধারণায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ দেখা দেয়। কারফিউ জারি করেও নিরস্ত করা যাচ্ছে না সাধারণ মানুষকে। তারা শাসক দলের এমপিদের বাড়িতে আগুন ও পার্টি অফিস ধ্বংস করে দিচ্ছে। ক্ষুব্ধ জনতা পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী রাজাপক্ষে ও সরকারদলীয় কয়েকজন এমপির বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। মঙ্গলবার হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাজাপক্ষের সরকারি বাসভবন টেম্পল ট্রিজের প্রধান গেট ভাঙার চেষ্টা করে। রাজাপক্ষকে বাঁচাতে সেনাবাহিনী বাড়ির ভিতরের সবাইকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এর পরও বিক্ষোভকারীরা বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। জনতার দাবি প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগ। তবে তাতেও শ্রীলঙ্কায় স্বস্তি ফিরে আসবে কি না সংশয় রয়েছে। সমস্যার সমাধানের সম্মিলিত উদ্যোগের বিকল্প নেই। সার্কের বন্ধু দেশ শ্রীলঙ্কার মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে সংকট মোকাবিলায় একাগ্র হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর