শনিবার, ১৪ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

দোয়া কী ও কেন?

মো. আমিনুল ইসলাম

দোয়া কী ও কেন?

দোয়া শব্দের অর্থ আল্লাহর কাছে চাওয়া, প্রার্থনা করা। নিজের মনের সব আকুতি নিয়ে বিনয়ের সঙ্গে আল্লাহ রব্বুল আলামিনের কাছে কল্যাণ ও উপকার লাভের জন্য এবং ক্ষতি ও অপকার থেকে বেঁচে থাকার জন্য প্রার্থনা করাই হলো দোয়া। রসুল (সা.) বলেছেন, দোয়াই ইবাদত। (তিরমিজি)। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের রব বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। নিঃসন্দেহে যারা অহংকারের কারণে আমার ইবাদত থেকে নাফরমানি করে অচিরেই তারা অপমানিত ও অপদস্থ হবে এবং জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সুরা আল মোমেন, আয়াত ৬০)। এই আয়াতটিতে মানুষকে পরকালের সৌভাগ্য অর্জনের জন্য আল্লাহর কাছে চাইতে বলা হয়েছে। কারণ দোয়ার প্রকৃত অর্থ হলো চাওয়া। আর প্রয়োজনে আল্লাহর কাছে মনের আকুতি নিয়ে চাওয়াই হলো ইবাদত। আমরা সবাই আল্লাহর মুখাপেক্ষী। তাঁর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি অর্জন ছাড়া আমাদের পক্ষে দুনিয়ার শান্তি সমৃদ্ধি লাভ ও পরকালে মুক্তি লাভ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। দোয়া বা ইবাদত ছাড়া পরকালে মুক্তির কোনো উপায় আমাদের কারও নেই। আমরা প্রত্যেকটি মানুষই কিছু না কিছু সমস্যায় জর্জরিত। কারও অসুস্থতা, কারও অর্থনৈতিক সমস্যা, কারও পারিবারিক সমস্যা, কারও প্রফেশনে সমস্যা। অর্থাৎ আমাদের জীবন সমস্যাবহুল। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের একমাত্র আল্লাহর শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। তাঁর কাছে কায়মনোবাক্যে আবেদন করাই দোয়া। সমস্যা সমাধানের জন্য তাঁর কাছে বিনয়ের সঙ্গে চাইতে হবে। কারণ আল্লাহ তো তাঁর বান্দাকে দেখেন। তার অভাব, অনটন, বিপদ, সমস্যা সব বিষয়ে তিনি ওয়াকিবহাল। সুতরাং যে যত বেশি আল্লাহকে স্মরণ করবে সে আল্লাহর তত নৈকট্য লাভ করতে পারবে। আর এই অনুভূতিগুলো যত বেশি দোয়ার মধ্যে প্রকাশ পায় তা অন্য ইবাদতে তেমনভাবে প্রকাশ পায় না। তাই দোয়াকে ইবাদতের সারবস্তু হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

দোয়া কবুল হওয়ারও কিছু শর্ত আছে। যেহেতু আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য দোয়া করতে হবে সেই জন্য দোয়া করার আগে খালেস দিল নিয়ে দোয়া করতে হবে। দোয়া করার প্রধান শর্ত হচ্ছে হারাম পরিত্যাগ করা। হালাল খাবার, হালাল পানীয়, হালাল ও পবিত্র কাপড় পরিধান করা। হারাম উপার্জনে সম্পৃক্ত থেকে দোয়া করলে সেই দোয়া কখনো কবুল হবে না বরং তা অকল্যাণই বয়ে আনবে। আমাদের মনে রাখতে হবে পৃথিবীতে যত অকল্যাণ ও মুসিবত আসে তা আল্লাহর ইচ্ছাতেই সংঘটিত হয়। সে জন্য নিয়তিকে দোষারোপ না করে আল্লাহর কাছে দোয়া করা আমাদের উচিত। আল্লাহ বলেন, ‘পৃথিবীতে বা ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের ওপর যে বিপর্যয় আসে আমি তা সংঘটিত করার আগেই বিস্তারিত বিবরণসহ একটি গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করে রেখেছি। যা আল্লাহর জন্য সহজ। এটা এ জন্য যে, তোমরা যা হারিয়েছো তাতে যেন তোমরা বিমর্ষ না হও এবং যা তিনি তোমাদের দিয়েছেন তার জন্যও যেন বেশি উৎফুল্লও না হও। আল্লাহ উদ্যত ও অহংকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আল হাদিদ, আয়াত ২২-২৪)

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর