মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

শাহজালালে হয়রানি

কর্তৃপক্ষের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙুক

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঐতিহ্যগতভাবে যেন ভোগান্তির আরেক নাম। দেশের এই প্রধান বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হয়রানির দিক থেকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে এ বিমানবন্দরের কাস্টম বিভাগ। এ বিভাগে সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হন প্রবাসে থাকা কর্মজীবীরা। মধ্যপ্রাচ্য কিংবা মালয়েশিয়া থেকে যারা আসেন তাদের মানুষ বলেই মনে করেন না কাস্টমসের অতিমানবরা। অস্ট্রেলিয়া-আমেরিকা-কানাডার মতো দূর দেশ থেকে দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি নিয়ে যারা আসেন তাদের লাগেজ পেতেই বিমানবন্দরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে তিন-চার ঘণ্টা। প্রতিটি ফ্লাইটের ৪০০-৫০০ যাত্রীকে একজন একজন করে পরীক্ষা করায় ভয়াবহ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। বিমানবন্দর থেকে বের হওয়া পর্যন্ত পদে পদে চলে ভোগান্তি। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় কাস্টমস হল পার হওয়ার সময়। দুই-তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে কাস্টমস হল পেরিয়ে গাড়িতে ওঠার সময় পড়তে হয় আরেক দফা ভোগান্তিতে। ভাড়ায় চালিত গাড়ি ও সিএনজি অটোরিকশার দাপটে যাত্রীদের জন্য আসা গাড়ি বিমানবন্দর এলাকায় ঢুকতে দীর্ঘ লাইনের মুখে পড়ে। যাত্রীদের লাগেজ নিয়ে টানাটানি শুরু করে রেন্ট-এ কারের চালকরা। গাড়ি পার্কিং এরিয়াসহ যত্রতত্র বসানো হয়েছে ¯œ্যাকসের দোকান। ছিনতাইকারী, মাদকসেবীসহ নানা অপরাধীর ভিড় সেখানে লেগেই থাকে। বিশ্বের কোনো বিমানবন্দরে এমন চিত্রের দেখা মেলে না। এসব স্পর্শকাতর এলাকায় দোকান বসানোয় নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়েছে। বিমানবন্দরে যাত্রীদের প্রবেশ-বের হওয়ার পথে এ ধরনের দোকান বসানোর ঘটনা নজিরবিহীন। এ অনিয়মের সঙ্গে বিমানবন্দর- সংশ্লিষ্টদের পকেটপূর্তির সম্পর্ক থাকায় তা দেখার কেউ নেই। বিশেষত দূরবর্তী দেশ থেকে আসা যাত্রীরা শাহজালালে যে হয়রানির শিকার হন তা অকল্পনীয়। শাহজালালে যাত্রী হয়রানির পেছনে থাকে উৎকোচ বা পকেটপূর্তির ইতিকথা। বিমানবন্দর-সংশ্লিষ্ট ক্লিনার থেকে কাস্টমস কর্মকর্তা পর্যন্ত সবার বিষয়ে তদন্ত করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙুক, এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর