সোমবার, ২৩ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

উভয় সংকটে পড়েছেন পুতিন

মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার পিএসসি (অব.)

উভয় সংকটে পড়েছেন পুতিন

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ৮৯তম দিন চলছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য এতবড় হুমকি আর কখনো তৈরি হয়নি। শুধু ইউরোপ নয়, এই যুদ্ধের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রচন্ড অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে, বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। যুদ্ধ কত দিনে শেষ হবে তা কেউ বলতে পারছে না। দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কাই সবাই প্রকাশ করছেন। কিন্তু এর শেষ পরিণতি কোনো পক্ষের জন্যই ভালো হবে না। এ ব্যাপারে সবাই মোটামুটি একমত। তবে এর পরিণতির স্বরূপ নিয়ে ভিন্ন মত আছে। যুদ্ধটা রাশিয়া শুরু করেছে। তাই আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী রাশিয়া আগ্রাসী রাষ্ট্র। তবে রাশিয়ার অনেক অজুহাত আছে এবং তার ভিত্তিও আছে। কিন্তু যুদ্ধ কোনোভাবে সমর্থনযোগ্য নয়। যুদ্ধের মাধ্যমে কোনো সমস্যার সমাধান কখনো হয়নি, হয় না। বরং একটি যুদ্ধ আরেকটি যুদ্ধের ক্ষেত্র তৈরি করেছে। তারপরও যুদ্ধ হচ্ছে এবং আগামীতে হয়তো হবে। কারণ, মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্সে (এমআইসি), অর্থাৎ বিশ্বের বড় বড় অস্ত্র ব্যবসায়ী এবং শাসকগোষ্ঠী যুদ্ধের মাধ্যমে লাভবান হয়। বিগত সময়ে এমনো দেখা গেছে, কোনো কোনো শাসক ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য যুদ্ধকে কৌশল হিসেবে বেছে নিয়েছেন। কিন্তু তাতে দেশ ও দেশের মানুষ সব সময়ই ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে মুশকিল হলো জনমানুষের বড় এক অংশের মনস্তাত্ত্বিকতা এমন যে, যুদ্ধ ঘোষণার সাহস ও তাতে জয়ী হওয়া শাসককে বরমাল্য ভূষিত করার প্রচন্ড একটা প্রবণতা সবদেশেই লক্ষ্য করা যায়।

প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ২২ বছর ধরে রাশিয়ার ক্ষমতায় আছেন। রাশিয়া বিশাল বড় দেশ, পৃথিবীর এক নম্বর বৃহত্তম। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর, বিপুল সম্ভাবনার দেশ। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর নব্বই দশকজুড়েই রাশিয়ার সবকিছু বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যায়। শুধু সোভিয়েত আমলে নয়, তার আগেও কয়েক শ বছরজুড়ে রাশিয়ান সাম্রাজ্যের শক্তিমত্তা, সমৃদ্ধি ও মর্যাদা সমগ্র ইউরোপের জন্য ঈর্ষার বিষয় ছিল। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন পতন-পরবর্তী বিপর্যয়কর পরিস্থিতি থেকে আবার যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে তার কৃতিত্ব রাশিয়ার মানুষ পুতিনকে দেয়। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসায় দেশের অভ্যন্তরে পুতিনের একটা বড় জনপ্রিয়তা তৈরি হয়। কিন্তু মুশকিল হয়েছে অন্য জায়গায়। পুতিন ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চান। নিঃসন্দেহে পুতিন অত্যন্ত অভিজ্ঞ একজন নেতা। তিনি ভালো করে জানেন, দশকের পর দশক ক্ষমতায় থাকতে হলে শুধু অভ্যন্তরীণ উন্নতি নয়, দেশের মানুষকে নিজের প্রতি আবিষ্ট রাখতে হলে আরও বৃহত্তর কিছু করা প্রয়োজন। সে কারণেই হয়তো মানুষের কাছে রাশিয়ার ভূতপূর্ব সমৃদ্ধি ও মর্যাদার কথা তুলে ধরছেন এবং বলছেন, তিনি রাশিয়াকে সেই জায়গায় আবার নিয়ে যাবেন।

পশ্চিমা বিশ্বের ন্যাটো বাহিনীকে পূর্বদিকে আরও সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত এই সময়ে পুতিনের জন্য একটা বড় অজুহাত সৃষ্টি করে দেয়। কিন্তু একচ্ছত্র, একনায়কতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার সহজাত সীমাবদ্ধতা হলো রাষ্ট্রের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও তার চালকগণ নিজেদের দুর্বলতাকে ঢাকা দেওয়া এবং পদ-পদবি ও সুযোগ-সুবিধা রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ শাসকের ইচ্ছাকেই প্রাধান্য দিয়ে মতামত প্রকাশ করেন, কঠিন বাস্তবতা এবং সঠিক ও সত্য মূল্যায়ন কখনো তুলে ধরেন না। আজকে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া যেরকম অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে সেটাই আমার কথার যথার্থতা প্রমাণ করে। একচ্ছত্র, একনায়কতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের একটা আমুদে উদাহরণ দিই। বাংলাদেশের অন্যতম কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমান ‘ক্রীতদাসের হাসি’ গ্রন্থে আরবের আব্বাসীয় শাসক বাদশা হারুন-অর-রশিদের কথা উল্লেখ করেছেন। বাদশা হারুন ও রাজকবি আবু নওয়াসের মধ্যে কথোপকথন। কবি নওয়াস একবার বাদশাকে বললেন, হুজুর আপনার বিচার ভুল। বাদশা একটু ক্রোধের সঙ্গে বললেন, ‘আমার কাজি, আমির-ওমরা এত লোক, যারা প্রতি দিন বিচার করে তারা তো আমার বিচারে কোনো ভুল দেখল না। নওয়াসের উত্তর, ‘জাঁহাপনা তারা যখন আপনার চোখ দিয়েই দেখে তখন নিজেদের চোখ ব্যবহার করে না, আর যখন নিজেদের চোখকেও দেখার কাজে লাগায় তখন আপনার চোখের ঝিলিক তারা আগেই দেখে নেয়। এ বিষয়ে বাল্মিকীর রামায়ণেও একটা কথার উল্লেখ আছে। মায়াবিশারদ মারীচ রাক্ষসরাজ রাবণকে সীতাহরণের মতো দুষ্কর্ম থেকে বিরত থাকার জন্য বলেছিলেন। যারা সতত প্রিয় কথা বলে এমন লোক অনেক আছে, কিন্তু অপ্রিয় অথচ হিতকর বাক্যের বক্তা ও শ্রোতা দুর্লভ। আজকে ৮৯তম দিনে যুদ্ধের চিত্র দেখে বলা যায়, রাশিয়ার সমরবিদগণসহ অন্য সভাসদ যুদ্ধ শুরু হলে পরিস্থিতি কোন দিকে যেতে পারে তার আগাম মূল্যায়নে হয়তো চরম ভুল করেছেন, আর নয়তো আসল চিত্র ঢাকা রেখে প্রভুর ইচ্ছা অনুযায়ী কথা বলেছেন।

ইউক্রেন সেনাবাহিনীর প্রতিরোধযুদ্ধের সক্ষমতা এবং ন্যাটো দেশসমূহের সামগ্রিক প্রতিক্রিয়া রাশিয়ান কূটনীতিক ও সমরবিদরা বুঝতে পারেননি। যুদ্ধে ঘোষিত লক্ষ্য অর্জনে এতদিন সময় লাগতে পারে এবং তার বিরূপ প্রভাবে বিশ্বব্যাপী কী রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তার আগাম মূল্যায়নে ভুল করেছে রাশিয়া। ফলে বিশ্ব থেকে রাশিয়া ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। ৮৯ দিন যুদ্ধ চলছে, অথচ ইউক্রেনের অভ্যন্তরে একটিও বড় সামরিক লক্ষ্য রাশিয়া অর্জন করতে পারেনি। কিন্তু সব জায়গায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনা ঘটছে। রাজধানী কিয়েভের সন্নিকটে এসেও রাশিয়ান বাহিনী পশ্চাদপসরণ করেছে। দ্বিতীয় বড় শহর খারকিভ থেকেও রাশিয়ান বাহিনী পিছু হঠছে। দক্ষিণের বড় শহর মারিউপোলের দখল নিতে রাশিয়াকে অনেক ঘাম ঝরাতে হয়েছে। ইউক্রেনের বড় সমুদ্রবন্দর ওডেসায় রাশিয়ান বাহিনী সর্বাত্মক অভিযান চালালেও ধ্বংসযজ্ঞ সাধিত হচ্ছে, কিন্তু পুরো শহর সহজে দখলে আসবে-তা মনে হচ্ছে না। ডনবাস অঞ্চলের পুরোটা এখনো রাশিয়ার দখলে আসেনি। তাহলে ৮৯ দিনের যুদ্ধে রাশিয়ার অর্জন কী? সুতরাং বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতির মূল্যায়নে বলতে হবে, পুতিনের ঘোষিত লক্ষ্য ডিনাজিফিকেশন অর্থাৎ ইউক্রেনে ক্ষমতার পরিবর্তন এবং ডিমিলিটারাইজেশন অর্থাৎ ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে নিষ্ক্রিয়করণ-দুই লক্ষ্যের একটিও অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে। উল্টো যুদ্ধ শুরুর আগে ন্যাটো বাহিনী রাশিয়ার জন্য যতটুকু হুমকি ছিল তার থেকে ভবিষ্যতের জন্য হুমকি আরও বৃদ্ধি পেল। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে ইউরোপ এখন বেশি ঐক্যবদ্ধ। প্রায় সব ন্যাটো দেশ সামরিক খাতে বড় অঙ্কের বাজেট বৃদ্ধি করেছে। রাশিয়ার সঙ্গে ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটারের স্থলসীমান্তের দেশ ফিনল্যান্ড দ্রুতই ন্যাটোতে যোগ দেবে। প্রায় ২০০ বছরের নিরপেক্ষতা বর্জন করে বাল্টিক সাগরের প্রভাবশালী দেশ সুইডেনও ন্যাটোতে যোগ দিচ্ছে। কিছু বাধা থাকলেও মনে হয় সব বাধা অতিক্রম করে শিগগিরই দেশ দুটি ন্যাটোর সদস্য হবে। ফিনল্যান্ড ও সুইডেন জনসংখ্যায় ছোট হলেও ভৌগোলিকভাবে মধ্যম আয়তনের দেশ। আর দুটোই শিল্প সমৃদ্ধ এবং অর্থনীতি ও মগজি শক্তিতে অনেক শক্তিশালী। এত দিন রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটোর দুটি মিনি রাষ্ট্র এস্তোনিয়া ও লাটভিয়ার স্থলসীমান্ত ছিল। বড় স্থলসীমান্তের দেশ ইউক্রেনকে ন্যাটো বাহিনীতে যোগ দেওয়া ঠেকাতে গিয়ে এখন নতুন করে আরেকটি বড় স্থলসীমান্তের দেশ শুধু নয়, বাল্টিক সাগরের প্রভাবশালী দুটো দেশ ন্যাটোতে যোগ দিচ্ছে। তাহলে রাশিয়ার জন্য যুদ্ধের মূল লক্ষ্যই তো বিলীন হয়ে গেল। এসবের কিছুই রাশিয়ার আগাম মূল্যায়নে ধরা পড়েনি। নির্মোহ, যথার্থ বিশ্লেষণ হলে ধরা পড়ার কথা ছিল। দুয়েকটি বাদে সব ন্যাটো সদস্য দেদার ইউক্রেনে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিচ্ছে। আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র গোলাবারুদসহ আসছে বিপুল পরিমাণ খাদ্য ও লজিস্টিক সহায়তা। এমতাবস্থায় রাশিয়ার সামরিক বিজয় ঘটবে সেটা বোধ হয় এখন আর কেউ মনে করছে না। তবে এটাও ঠিক, ন্যাটো বাহিনী ইউক্রেনের অভ্যন্তরে সরাসরি যুদ্ধে জড়াবে না, এই প্রতিশ্রুতি রক্ষিত হলে শিগগিরই রাশিয়া পরাজিত হয়ে ফিরে যাবে সেটাও কেউ মনে করছে না। দীর্ঘায়িত যুদ্ধের একপর্যায়ে ন্যাটো বাহিনী আকস্মিকভাবে বা দুর্ঘটনাবশত যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়া সম্পূর্ণ একা হয়ে পড়বে। কারণ, রাশিয়ার কোনো আনুষ্ঠানিক সামরিক মিত্র নেই। সেরকম হলে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা তো নেই, বরং ডনবাস অঞ্চলে যতটুকু এলাকার ওপর নিয়ন্ত্রণ আছে সেটাও রাশিয়াকে হারাতে হতে পারে। ধরে নিই প্রতিশ্রুতি মোতাবেক ন্যাটো সরাসরি যুদ্ধে যোগ দিল না এবং যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলো। তাহলে শেষ ফল বা পরিণতি কী হতে পারে। এ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত ও বিশ্লেষণ আছে। ইউক্রেন সম্পূর্ণভাবে রাশিয়ার দখলে চলে যাবে এটা বোধ হয় স্বয়ং রাশিয়া সেনাবাহিনী এখন আর ভাবে না। সেজন্যই তারা রাজধানী কিয়েভ ও খারকিভ থেকে অনেকটাই পিছু হটেছে। কিন্তু সামরিক অভিযান জোরদার করেছে ডনবাস অঞ্চল এবং দক্ষিণের মারিউপোল ও খেরসন শহর এলাকায়। লক্ষ্য এসব এলাকা দখলে নিয়ে ২০১৪ সালে সংযুক্ত করা ক্রিমিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার মূল ভূখন্ডের স্থলপথে সংযোগ স্থাপন করা। কিন্তু এই সীমিত লক্ষ্য অর্জন করা রাশিয়ার পক্ষে কতটুকু সম্ভব হবে সেটাও এখন প্রশ্নাধীন। তাহলে বিকল্প কী। দুটো বিকল্প আছে, দুটোই পুতিনের জন্য দুঃসংবাদ। প্রথম বিকল্প যুদ্ধ বিরত ঘোষণা করা। তারপর ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসা। তার মাধ্যমে পুতিন কতখানি অর্জন করতে পারবে? তাতে কি পুতিনের মুখ রক্ষা ও মান রক্ষা হবে? দর-কষাকষির টেবিলে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্ব। হতে পারে ডনবাস অঞ্চলসহ ইউক্রেনের অভ্যন্তর থেকে সব সৈন্য প্রত্যাহারে পুতিন যদি রাজি হয় তাহলে ইউক্রেন ন্যাটো বাহিনীতে যোগ না দেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারে। কিন্তু ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ ঘোষণার আগে জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলর ওলফ শুলজ ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ মস্কো সফরে এসে পুতিনকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দেবে না, রাশিয়া যেন যুদ্ধে না যায়। এখন রাশিয়ান সেনাবাহিনীর বিশাল হতাহতের ঘটনাসহ কঠিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে যেরকম নিদারুণ ভোগান্তিতে রাশিয়ার মানুষ পড়েছে তার দায়-দায়িত্ব কে নেবে। পুতিনকে সবাই দায়ী করবেন এই মর্মে যে, এটাই যদি মেনে নিতে হবে তাহলে এই যুদ্ধের কী প্রয়োজন ছিল। রাশিয়ার জনগণের কাছে পুতিনের কোনো উত্তর থাকবে না। সুতরাং যুদ্ধবিরতি ও আলাপ-আলোচনার পথে পুতিনের জন্য সুখবর নেই। দ্বিতীয় বিকল্প, যত দীর্ঘমেয়াদি হোক যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া। তাতে কোনো পক্ষেরই একচেটিয়া বিজয় অর্জনের সম্ভাবনা এখন আর নেই। যুদ্ধ যতই দীর্ঘ হোক না কেন, ইউক্রেনকে সতেজ রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে পশ্চিমা বিশ্ব। তাতে ইউক্রেনের ক্ষয়ক্ষতি আরও বৃদ্ধি পাবে, এটা ঠিক। কিন্তু একই সঙ্গে দিন যত যাবে ততই রাশিয়ার সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তি খর্ব হতে থাকবে। ন্যাটো দেশগুলো হয়তো সেটাই চাচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার ধাক্কায় সার্বিক অর্থনীতিতে ধস নামলে রাশিয়ার মানুষ সব ভয় উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমে আসবে। তখন পুতিনের ভাগ্যে কী ঘটবে সেটা কেউ এখন বলতে পারবে না। কিন্তু ভালো কিছু হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। সুতরাং পুতিন এখন না পারছে সামনে এগোতে, না পারছে পিছু হটতে। জলে বাঘ, ডাঙায় কুমির।

লেখক : রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

[email protected]

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর