শনিবার, ২৮ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

সালাত ইসলাম ধর্মের মূলভিত্তি

মো. আমিনুল ইসলাম

সালাত ইসলাম ধর্মের মূলভিত্তি

ইসলাম ধর্ম পাঁচটি ভিত্তির ওপর স্থাপিত। তার মধ্যে নামাজ শীর্ষে। নামাজ এমন একটি ইবাদত যার মাধ্যমে বান্দা ও তার প্রভুর সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হয়। যে বান্দা অত্যন্ত বিনয়, নম্রতা, ভক্তি ও আন্তরিকতার সঙ্গে পবিত্র অবস্থায় নামাজ আদায় করে সে তার মহান প্রভুর সান্নিধ্যে উপনীত হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারে। একজন বান্দার জন্য এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে? আল কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৩) আল্লাহ আরও বলেন, ‘আমার স্মরণের জন্য সালাত আদায় কর।’ (সুরা ত্বহা, আয়াত ১৪) রসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কারও ঘরের দরজার সামনে যদি কোনো নদী থাকে আর তাতে তোমরা যদি প্রতিদিন পাঁচবার গোসল কর, এরপর তার শরীরে কি কোনো ময়লা থাকতে পারে? সাহাবিরা উত্তরে বললেন, না তার শরীরে কোনো ময়লা থাকতে পারে না। নবী করিম (সা.) বললেন, ঠিক তেমনি যে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত পবিত্রতার সঙ্গে আদায় করল, আল্লাহ রব্বুল আলামিন তার সমস্ত পাপ ঠিক তেমনি করে মোচন করে দেন।’ (মুসলিম) সুবহানাল্লাহ! পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সঠিকভাবে আদায় করতে পারলে এর চেয়ে বড় সৌভাগ্যের আর কী হতে পারে? সালাত একজন মুসলমানের জীবনের সবচেয়ে বড় নিয়ামত। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে আল্লাহ রব্বুল আলামিনের নৈকট্য লাভ করতে হলে সালাতকে মনেপ্রাণে আঁকড়ে ধরতে হবে এবং বিনয় ও ভক্তি সহকারে আল্লাহর প্রতি সালাতের মাধ্যমে আনুগত্য প্রদর্শন করতে হবে।

নামাজ আদায়ের শর্তসমূহ :

১. নামাজ আদায়ের প্রথম শর্ত শরীর ও পরিধেয় কাপড় পবিত্র হওয়া। পাশাপাশি প্রয়োজন অন্তরের পবিত্রতা। কারণ অন্তর পবিত্র না হলে মূল পবিত্রতার প্রাণশক্তি নষ্ট হয়। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার কর। যেগুলো তোমাদের আমি রিজিক হিসেবে দান করেছি এবং শুকরিয়া আদায় কর আল্লাহর যদি তোমরা তাঁর বান্দা হও। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৭২)

২. সালাতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কিংবা সালাতের পরও লজ্জাস্থান ঢেকে রাখা ফরজ। একেই ইসলামী পরিভাষায় পর্দা বলা হয়। পর্দা নারী-পুরুষ সবার জন্য ফরজ।

৩. নামাজ আদায়ের আগে মনকে দুনিয়ার যাবতীয় বিষয় থেকে মুক্ত করে পুরোপুরি বিনয় ও ভক্তির সঙ্গে উত্তমভাবে শরীরের অঙ্গগুলোর পূর্ণাঙ্গ নিয়োজিতকরণের মাধ্যমে সালাত আদায় করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আল্লাহর আনুগত্য লাভের উদ্দেশ্যেই সালাত আদায় করছি যা আমার জন্য পরকালের সম্বল হিসেবে গণ্য হবে।

৪. সালাত আদায় করতে হবে খুশিমনে। আল্লাহ আমাকে দেখছেন এ কথাটি মনে রাখতে হবে। সুতরাং বিনম্রচিত্তে প্রফুল্ল মন নিয়ে সালাত আদায় করতে হবে অত্যন্ত ভক্তি ও শ্রদ্ধার সঙ্গে। আল কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা নিজেদের এবং তোমার পরিবার-পরিজনকে সে আগুন থেকে রক্ষা কর যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর। যাতে নিয়োজিত রয়েছে কঠোর স্বভাব, পাষাণ হৃদয়ের ফেরেশতারা। তারা আল্লাহর আদেশ অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয় তারা তা-ই করে।’ (সুরা তাহরিম, আয়াত ৬) সুতরাং দোজখের আগুনের ইন্ধন থেকে নিজকে ও পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করতে বিনম্র চিত্তে সালাত আদায় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার।

সর্বশেষ খবর