রবিবার, ২৯ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

কৃষিশ্রমিকের অভাব

যান্ত্রিকীকরণের উদ্যোগ নিন

কৃষিশ্রমিকের আকাশচুম্বী চাহিদা পূরণে হিমশিম খাচ্ছেন ধান চাষিরা। দেশবাসীর খাদ্য জোগাতে চাষিরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যে ধান উৎপাদন করছেন, সে লাভের গুড় পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলছে। এ বছর হাওর এলাকাসহ সারা দেশে ধান কাটতে গিয়ে কঠিন সমস্যায় পড়েছেন ধান চাষিরা। তিন বেলা খাবার ও ১২০০ টাকা মজুরি দিয়েও ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠেছে। প্রায় তিন গুণ বেশি মজুরি দিয়ে ধান কাটার শ্রমিক নিয়োগ করায় ধানের উৎপাদন খরচ সংগত কারণেই বেড়েছে। বহু এলাকায় শ্রমিক না পেয়ে চাষিরা সময়মতো ধান কাটতে পারেননি। ঝড়বৃষ্টিতে জমিতে ঝরে গেছে উৎপাদিত ধানের উল্লেখযোগ্য অংশ। এ ধারা চলতে থাকলে আগামীতে ধান চাষে উৎসাহ হারাবে চাষিরা। পরিণতিতে দেশে খাদ্যাভাব অনিবার্য হয়ে উঠবে। এ সমস্যার সমাধানে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের তাগিদ দিয়েছেন অভিজ্ঞজনেরা। তাঁদের মতে, যান্ত্রিকীকরণ সম্ভব হলে ধান কাটা ও প্রক্রিয়াজাত করার খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। কৃষিশ্রমিকের যে অভাবে ভুগতে হচ্ছে যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে তার ইতি ঘটানো সম্ভব হবে। পাশাপাশি ধান চাষে কৃষকের উৎসাহ ধরে রাখতে উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাও জরুরি। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ধান চাষ করে কৃষক তাদের প্রাপ্য লাভ পাচ্ছেন না। এর আগে গম চাষে লাভ না হওয়ায় চাষিরা গম চাষে উৎসাহ হারিয়েছেন। পরিণতিতে দেশে এখন যে গম উৎপাদিত হচ্ছে, তা এক দশক আগের চেয়ে অনেক কম। চলতি বছর গমের চাহিদা পূরণে বিদেশ থেকে গম আমদানি নিশ্চিতকরণে সরকারকে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে। ধান ও গমের উৎপাদন ধরে রাখতে কৃষি আধুনিকীকরণের কোনো বিকল্প নেই। এজন্য কৃষকবান্ধব নীতি গ্রহণ করতে হবে। বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ- প্রতি ক্ষেত্রে ভর্তুকি বাড়ানোর কথা ভাবা যেতে পারে। এটি চাষিদের প্রতি দয়া নয়, তাদের অধিকার বলে ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর