সোমবার, ৩০ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

বিপাকে চা চাষিরা

ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করুন

পঞ্চগড়ের ক্ষুদ্র চা চাষিরা চায়ের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না এমন অভিযোগ তুলেছেন। জেলা প্রশাসন প্রতি কেজি চা পাতার দাম ১৮ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও চা কারখানাগুলো সিন্ডিকেট করে ১২ টাকার বেশি দাম দিতে অস্বীকার করছে। প্রতি ১০০ কেজি চা পাতা কেনার সময় পাতা ভেজা থাকার কাল্পনিক অভিযোগ তুলে ২৫ শতাংশের দাম দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে কারখানাগুলো। চা পাতার ন্যায্যমূল্যের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেও লাভ হয়নি চাষিদের। ১৮ মে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে কাঁচা চা পাতার মূল্য নির্ধারণ কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রতি কেজি কাঁচা চা পাতার মূল্য ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কারখানাগুলো থেকে অবৈধভাবে চা পাতা বিক্রি বন্ধের জন্য একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠনের উদ্যোগের কথাও জানানো হয়। কিন্তু সভার সিদ্ধান্ত মানছে না কারখানাগুলো। চা চাষিদের দাবি প্রতি কেজি কাঁচা চা পাতা উৎপাদনে পানি সেচ ও কীটনাশক প্রয়োগে ১৫-১৬ টাকা ব্যয় হয়। চা প্রক্রিয়াজাত কারখানাগুলো নীলকরদের মতো চা চাষিদের কাঁচা চা পাতার ন্যায্য দাম না দিয়ে তাদের জীবন-জীবিকাকে হুমকির মুখে ফেলছেন বলেও চাষিদের অভিযোগ। চা চাষিরা কয়েক বছর আগে কাঁচা চা পাতার মূল্য কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা পেলেও প্রায় তিন বছর ধরে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বর্তমানে উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেন না তারা। ফলে চা চাষিদের মধ্যে শুরু হয়েছে হাহাকার। পঞ্চগড়ে চা চাষের ইতিহাস খুব বেশি দীর্ঘ নয়। চা চাষ করে সমৃদ্ধির মুখ দেখার স্বপ্নে এদিকে ঝুঁকেছিলেন ক্ষুদ্র চাষিরা। কিন্তু তাদের স্বার্থ দেখার কেউ না থাকায় চা চাষের ভবিষ্যৎই বিপন্ন হতে চলেছে। বর্তমানে চা চাষিরা যে দামে চা বিক্রি করছে এ অর্থে লাভ দূরের কথা উৎপাদন খরচও মিটছে না। চা শিল্পের স্বার্থেই ক্ষুদ্র চাষিদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হবে। পঞ্চগড়ে চা উৎপাদন বজায় রাখতে প্রশাসনের ইতিবাচক ভূমিকার বিকল্প নেই। চা কারখানাগুলোর নীলকরসুলভ আচরণ বন্ধে প্রশাসন সক্রিয় হবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর