বৃহস্পতিবার, ২ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

ট্রাফিক সিস্টেম

আগে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিন

বানরের গলায় মুক্তোর মালা নাকি মানায় না। ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় ট্রাফিক কন্ট্রোল সিস্টেমের আধুনিকীকরণে বাংলা প্রবচনটি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। বাস্তবতার দিকে পিঠ ঠেকিয়ে নিজেদের স্বার্থে প্রকল্প নেওয়ায় ২২ বছরে সরকারের ১৪৬ কোটি টাকাই শুধু অপচয় হয়েছে। স্মর্তব্য, ঢাকা আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের অধীন স্বয়ংক্রিয় সংকেত প্রদানের মাধ্যমে ট্রাফিকব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ উদ্দেশ্যে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০১-০২ সালে নয়টি ও ২০০৫ সালে ৫৯টি ট্রাফিক সিগন্যাল স্থাপন করা হয়। ২০০৬ সালে সরকারকে দেওয়া এক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক জানায়, দুর্বল রক্ষণাবেক্ষণের কারণে অল্প সময়ের মধ্যেই এগুলো অকার্যকর হয়ে পড়েছে। পরে ২০১২-১৩ সালে নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ প্রকল্পে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আরেকটি প্রকল্পের আওতায় ৭০টি ক্রসিংয়ে সোলার প্যানেল এবং টাইমার কাউন্টডাউন সিস্টেম যুক্ত করে। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ২০১১-১২ সালে ১৫ কোটি টাকায় সোলার প্যানেল ও টাইমার কাউন্টডাউন স্থাপন করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে ২০১৩ সালে নতুন সিগন্যাল লাইট স্থাপনে আরও সাড়ে ১১ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। কিন্তু ট্রায়ালেই ব্যর্থ হওয়ায় নতুন সিগন্যাল সিস্টেম বাদ দিয়ে পুরনো ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় ফিরে যেতে হয়। পরে আবার ২০১৮ সালে একই প্রকল্পে রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেমের জন্য ভারত থেকে ১৩৪টি রিমোট আনা হয়।

এ প্রকল্পে ব্যয় হয় ২৭ কোটি টাকা। পাইলটিং হিসেবে ছয়টি স্থানে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ট্রাফিক সিস্টেম চালু হলেও এক বছর পর তা নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে হাতের ইশারায় পরিচালিত হচ্ছে ২ কোটি মানুষের মেগা সিটি ঢাকার ট্রাফিক সিস্টেম। দুনিয়াজুড়ে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল কাজ করলেও ঢাকায় তা ব্যর্থ হয়েছে কর্তাব্যক্তিদের বাস্তবতাবিবর্জিত পদক্ষেপের কারণে। কিন্তু রাস্তার ধারণক্ষমতা না দেখে যানবাহনের সংখ্যা বাড়ানোর কান্ডহীন পন্থা সবকিছুই ভ-ুল করে দিচ্ছে। ট্রাফিকব্যবস্থায় সুস্থতা ফিরিয়ে আনতে সেদিকে আগে নজর দেওয়া দরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর