রবিবার, ৫ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

দূষণের শহর ঢাকা

জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে

বায়ু ও শব্দ দূষণ রাজধানীর ২ কোটি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত করার পাশাপাশি দুরারোগ্য রোগের বিস্তার ঘটাচ্ছে। বায়ুদূষণের দিক থেকে ইদানীং ঢাকা সর্বদাই তৎপর শীর্ষস্থানে যাওয়ার জন্য। শব্দদূষণের শিরোপা পেতেও উঠেপড়ে লেগেছে এই নগরী। যানজটের কারণে ঢাকা অচল নগরীর খেতাব অর্জন করেছে ইতোমধ্যে। এ বছরের ৩ এপ্রিল ঢাকার মূল সড়কগুলোয় গাড়ির গতির ওপর গবেষণা চালিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট। যাতে দেখা গেছে, সেদিন ঢাকায় গাড়ির গড় গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার। ২০০৫ সালে বিশ্বব্যাংকের গবেষণায় সেসময় ঢাকায় ঘণ্টায় গাড়ির গড় গতি ছিল প্রায় ২১ কিলোমিটার। অভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকায় যানজটের কারণে স্বাস্থ্যগত যে সমস্যা তৈরি হয় তার দৈনিক ক্ষতি গড়ে ৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আর ঢাকা শহরের সড়ক দুর্ঘটনার কারণে আর্থিক ক্ষতি দৈনিক ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের চিকিৎসা খরচ, তাদের পরিবারের অন্যান্য খরচ, মৃত ব্যক্তির পরিবার তার আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যে ক্ষতির শিকার হচ্ছে এসব বিষয় বিবেচনা করে এ সংখ্যা দাঁড় করানো হয়েছে। ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জিপজেটের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, এশিয়ার শহরগুলোর মধ্যে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি মানসিক চাপের মধ্যে বাস করতে হয়।

এর একটি কারণ যানজট। যানজটে গাড়ির ইঞ্জিন চালু থাকায় ধোঁয়া সৃষ্টি হয়। গাড়ির ধোঁয়ায় রয়েছে সিসা। এ ছাড়া গাড়ি এক জায়গায় আটকে থাকার কারণে যে ধোঁয়া নির্গত হয় তাকে বলা হয় ইন-কমপ্লিট কমবাস্টন। এতে কার্বন মনোক্সাইড, ডাইঅক্সিন, নাইট্রিক অক্সাইড, সালফার অক্সাইড এ রকম নানা গ্যাস বাতাসের সঙ্গে মানুষের ফুসফুসে চলে যাচ্ছে। চিকিৎসকরা বলেন, এতে সুস্থ ফুসফুসেও শ্বাসকষ্ট হয়। যানজট, বায়ুদূষণ ও শব্দদূষণ নগরবাসীর মানসিক শান্তি কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি অসুস্থ করে তুললেও তা প্রতিকারের কেউ নেই। সরকার ও দুই সিটি করপোরেশন এ ব্যাপারে দায়বদ্ধ ভূমিকা পালন করবে, এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর