অগ্নিকান্ডসহ যে কোনো বিপর্যয়কর ঘটনায় ভরসা হিসেবে বিবেচিত হন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। গত ১০ বছরে বাংলাদেশে শিল্পায়ন হয়েছে আগের ২০ বা ৩০ বছরের বেশি। একের পর এক বহুতল ভবনও তৈরি হয়েছে। বেড়েছে জাতীয় অর্থনীতির পরিসর। অথচ এ সময়ে যৌক্তিক কারণেই ফায়ার স্টেশনের সংখ্যা দ্বিগুণ হলেও বাড়েনি লোকবল। বাড়েনি কেমিক্যাল আগুন নেভানোর সক্ষমতা। সীতাকুন্ডের আগুনলানা গুদাম সম্পর্কে তথ্য গোপন করায় আগুনের ভয়াবহতা বেড়েছে। নয়জন ফায়ার কর্মীর প্রাণহানিও ঘটেছে একই কারণে। রাসায়নিকের আগুন নেভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষিত ১৫০ জন ফায়ার কর্মী রয়েছেন। তাদের কাজের জন্য রয়েছে বিশেষ সরঞ্জামাদি ও পোশাক। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে এমন প্রশিক্ষিত ১১ জন ফায়ার কর্মী থাকলেও শিল্প এলাকা সীতাকুন্ড ও পাশের কুমিরা ফায়ার স্টেশনে এ ধরনের প্রশিক্ষিত কেউ ছিলেন না। রাসায়নিকের আগুন নেভানোর জন্য বিদেশে প্রশিক্ষিত কর্মীদের নিয়ে ‘হ্যাজম্যাট’ নামের একটি ইউনিট রয়েছে ফায়ার সার্ভিসের। এ ধরনের আগুনের ক্ষেত্রে ‘কেমিক্যাল প্রটেকশন স্যুট’ নামের বিশেষ পোশাক পরে কাজ করেন তারা। সদর দফতরসহ বিভাগীয় শহরে রাখা হয় এ দলের সদস্যদের। নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিকটস্থ ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা সাধারণ আগুন হলে নিজে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করবেন। তবে আগুন রাসায়নিক হলে অবশ্যই প্রশিক্ষিত হ্যাজম্যাট ইউনিটকে খবর দেবেন। সীতাকুন্ডে আগুন নেভাতে যেসব ফায়ার কর্মী গিয়েছিলেন তারা মনে করেছিলেন হয়তো গার্মেন্ট পণ্যে আগুন লেগেছে। আগুন নেভাতে পানি ব্যবহার করার সঙ্গে সঙ্গে তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। কেমিক্যালের আগুন জানলে ফায়ার কর্মীরা সে ধরনের প্রস্তুতিই নিতেন। আগুন নেভাতে আসতেন প্রশিক্ষিত কর্মীরা। ফায়ার সার্ভিসের আধুনিকীকরণের প্রকল্প ১০ মাস স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঝুলে থাকাও দুর্ভাগ্যজনক। ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বাড়াতে এ প্রকল্প সম্পর্কে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।