বৃহস্পতিবার, ৯ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

অনিয়ম বন্ধ হওয়া উচিত

দেশে উচ্চশিক্ষার বিস্তারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চালুর সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে এক বৈপ্লবিক ঘটনা। তবে তা এখন লাখ লাখ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। হাতে গোনা কয়েকটি বাদে সিংহভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সার্টিফিকেট বিক্রির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ফলে দেশে স্পুটনিক গতিতে উচ্চশিক্ষিত বেকার সৃষ্টি হচ্ছে। যারা পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য বোঝায় পরিণত হচ্ছে। বাংলাদেশে ১ লাখের বেশি বিদেশি কাজ করছেন গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্পে। তারা শত শত কোটি টাকা প্রতি বছর নিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশ থেকে। অথচ তাদের স্থানে বসানোর জন্য জনশক্তি তৈরি হচ্ছে না সার্টিফিকেট-সর্বস্ব উচ্চশিক্ষায় মগ্ন থাকার কারণে। এ প্রেক্ষাপটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অনিয়ম, অসংগতি নিয়ে কঠোর হচ্ছে সরকার। পাঠদানের অনুমতি পেলেও একাডেমিক কার্যক্রম শুরু না করা, মামলায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকা, স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। নিয়ম মেনে না চলা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পথে এগোচ্ছে সরকার। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে হবে দেশের ২২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে। এটি করতে না পারলে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধসহ আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউজিসি। এর আগে সাময়িক সনদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও স্থায়ী ক্যাম্পাসে সম্পূর্ণ কার্যক্রম স্থানান্তর করা হয়নি এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে চিঠি দিয়েছিল ইউজিসি। চিঠিতে স্থানান্তর না হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পক্ষ থেকে জবাব পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে পুরোপুরি যেতে না পারলে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখতে হবে। এমন আলটিমেটামের আওতায় থাকা ২২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এমন বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে যেগুলো অভিজাতের তকমাধারী। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে যথেচ্ছা বন্ধের পদক্ষেপ অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। একই সঙ্গে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে কর্মমুখী শিক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হয় সেদিকেও সরকারের নজর থাকতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর