শুক্রবার, ১০ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

অনুসরণযোগ্য রায়

আদালতকে অভিনন্দন

আদালতের রায়ে বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষই খুশি, এমনটি কল্পনাতীত মনে হলেও তেমনটিই ঘটেছে সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেনের আদালতে। বুধবার ব্যতিক্রমধর্মী এক রায়ের মাধ্যমে তিনি ৪৫ দম্পতির মুখে এনে দিয়েছেন বিষাদের বদলে অমলিন হাসি। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে স্ত্রীদের দায়েরকৃত পৃথক ৪৫টি মামলায় স্বামীদের ঠাঁই হয়েছিল জেল হাজতে। স্ত্রীরা স্বামীগৃহ থেকে ঠাঁই নিতে বাধ্য হয়েছিলেন স্বজনদের কাছে। বাবা ও মায়ের আইনগত লড়াইয়ে সন্তানরা পড়ে বিপাকে। তারা পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছে দীর্ঘ সময়। এক পর্যায়ে আদালত ভাঙা সংসারে জোড়া লাগানোর উদ্যোগ নেন। এরই ফলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সদ্ভাব বজায় রাখা, যৌতুক দাবি, অত্যাচার-নির্যাতন না করাসহ পাঁচ শর্তে আসামিদের আপসে মুক্তি দেওয়া হয়। শর্ত ভাঙলে আবারও মামলা চালু হবে বলে সতর্ক করেন বিচারক। আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, ৪৫টি পরিবারকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য এ রকম আদেশ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্ন দম্পতিরা সন্তানাদি ও পরিবার-পরিজন নিয়ে আগের মতো সংসার করতে পারবেন। বাবা ও মায়ের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমার কারণে এসব পরিবারের শিশুরা পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। দীর্ঘদিন ধরে মামলা চালাতে গিয়ে উভয় পরিবার আর্থিক ও মানসিক ক্ষতির মধ্যে পড়ে। এর প্রভাব এসে পড়েছে তাদের সন্তানদের ওপর। ফলে শিশু সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। আদালতের এ ব্যতিক্রমী রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন দম্পতিরা। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ থেকে বেরিয়ে পরিবার ও সন্তানাদি নিয়ে নতুনভাবে বাঁচার সুযোগ পেয়ে খুশি তারা।  মামলায় সাধারণত দুই পক্ষের এক পক্ষ জেতে, যারা হারেন তারা ভোগেন হতাশায়। কিন্তু সুনামগঞ্জে বিচারকের উদ্যোগে ৪৫টি মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিই শুধু নয়, ৪৫টি পরিবারের শান্তি ও স্বস্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। আদালতকে আমাদের অভিনন্দন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর