শুক্রবার, ১০ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

পাহাড়-টিলায় ধস

অপরাধীদের আইনের আওতায় আনুন

একসময় সিলেট ছিল পাহাড় ও টিলার দৃষ্টিনন্দন জনপদ। কালের বিবর্তনে এ জেলা তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। সিলেট থেকে ক্রমান্বয়ে উধাও হচ্ছে পাহাড় ও টিলা। আইন অনুযায়ী পাহাড় ও টিলা কাটা বেআইনি। কিন্তু অতিলোভী ভূমিখেকোরা নানা কৌশলে মাটি কেটে সমতল করে ফেলছে একের পর এক পাহাড় ও টিলা। টিলার মাটি কেটে ঝুঁকিপূর্ণভাবে তৈরি করা হচ্ছে ঘরবাড়ি। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় দিন দিন এসব ঝুঁকিপূর্ণ বসতির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সরকারি হিসাবে ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের এসব পরিবারের কোনো তালিকা বা সংখ্যা না থাকলেও আনুমানিক হিসাবে তা ১০ হাজারের কম নয়। সারা বছর টিলার পাদদেশে বসবাসকারী এসব পরিবারকে নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা না থাকলেও বর্ষা এলেই বেড়ে যায় আতঙ্ক। বিশেষ করে টিলা ধসে প্রাণহানির পর টনক নড়ে প্রশাসনের। এ বছর বর্ষা মৌসুমের আগেই ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় জেলার বিভিন্ন উপজেলায় টিলাধস শুরু হয়েছে। গত এক মাসে জৈন্তাপুর ও গোলাপগঞ্জে টিলাধসে পাঁচজনের প্রাণহানি ঘটেছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই সিলেটের পাহাড় ও টিলার পাদদেশে বসবাসকারীদের মধ্যে বাড়ে উদ্বেগ। অতিবর্ষণে টিলা ও পাহাড় ধসে প্রাণহানি ঘটে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গত তিন সপ্তাহের মধ্যে সিলেট সদর, গোলাপগঞ্জ, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও ফেঞ্চুগঞ্জে টিলাধস ঘটেছে। সিলেট মহানগর ও সদর উপজেলায় প্রায় ২০০ টিলা রয়েছে। অন্য উপজেলাগুলোয়ও টিলার পরিমাণ প্রায় সমসংখ্যক। প্রভাবশালীরা টিলার মাটি কেটে বিক্রি করায় টিলাধস বেড়েছে। অভিন্ন চিত্র চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং দেশের তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের। বর্ষা মৌসুমে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড় ও টিলা ধসে প্রাণহানি নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ মূলত সমতলভূমির দেশ। পাহাড় ও টিলাগুলো এ দেশের প্রকৃতিতে বৈচিত্র্য সৃষ্টি করেছে। যারা এ বৈশিষ্ট্য নষ্ট করছে তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর