রবিবার, ১২ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

মুদ্রাস্ফীতি রোধ

কথার কথা নয়, বাস্তবেও হোক

দুই বছরের করোনাঘাতের পর তার রেশ কাটিয়ে ওঠার আগেই রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাবস্থা সৃষ্টি করেছে। এ মন্দাবস্থার কবলে পড়েছে বাংলাদেশও। দেশের অর্থনীতি করোনাঘাত থেকে রক্ষায় সরকার দৃষ্টিকাড়া সাফল্য অর্জন করলেও রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ধকল মোকাবিলায় যে হিমশিম খাচ্ছে তা একটি নির্জলা সত্যি। রাশিয়া ও ইউক্রেন দুনিয়ার সবচেয়ে বড় খাদ্য রপ্তানিকারক দেশ। ভোজ্য তেল ও জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে রাশিয়ার অবস্থান বেশ ওপরে। ইউক্রেনও অন্যতম ভোজ্য তেল রপ্তানিকারক। যুদ্ধের কারণে দুই দেশের রপ্তানি ব্যাহত হওয়ায় বিশ্ববাজারে আগুন লেগেছে ভোজ্য তেল, জ্বালানি তেল, গমসহ খাদ্যপণ্যে। স্বভাবতই বাংলাদেশকে এসব পণ্য আমদানিতে কয়েক হাজার কোটি টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে বাজেটে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনলে কোনো প্রশ্ন ছাড়াই কর দিয়ে বৈধ করা যাবে এমন সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী পড়েছেন তোপের মুখে। বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, বিশ্বের আরও ১৭টি দেশ এ ধরনের অ্যামনেস্টি দিয়ে টাকা ফেরতের সুযোগ দিয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স, নরওয়ে ছাড়াও এশিয়ার মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া রয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, টাকার একটা ধর্ম আছে। যেখানে সুখ পায়, যেখানে রিটার্ন বেশি পায় সেখানে চলে যায়। টাকা যারা সুটকেসে করে পাচার করে কোনো প্রমাণ রেখে পাচার করে না। এখন ডিজিটাল যুগ। বিভিন্নভাবে পাচার হয়ে যায়। এ কারণেই কর দিয়ে সে টাকা ফেরত আনার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের পক্ষে-বিপক্ষে বলার সুযোগ রয়েছে। নীতিগতভাবে আমরা পাচারকারীদের কোনো ধরনের সুযোগ দেওয়ার বিরুদ্ধে। তবে সুযোগ না দিলে পাচারকৃত অর্থ যে ফিরে আসবে না তা-ও সত্য। অর্থমন্ত্রী বাজেটোত্তর সম্মেলনে ব্যয়ের ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রতার কথা বলেছেন। বলেছেন মুদ্রাস্ফীতি রোধের কথা। তা যাতে কথার কথা না হয় আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর