শিরোনাম
শনিবার, ১৮ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

এ টাকা কাদের টাকা

অর্থ পাচার বন্ধে কঠোর হোন

স্বল্পোন্নত থেকে নিম্নমধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়া সত্ত্বেও স্বীকার করতেই হবে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ গরিব। গরিবি সীমার নিচে হতদরিদ্রের সংখ্যাও বিপুল। এটা যেমন মুদ্রার এক পিঠ, তেমন অন্য পিঠে রয়েছে দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের ধনী হয়ে ওঠার কাহিনি। দেশে ধনীর সংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়ছে। রূপকথার আলাদিনের চেরাগের বদৌলতে পাল্টে যাচ্ছে কিছু মানুষের ভাগ্য। দৃশ্যত যাদের কোনো আয়ের উৎস নেই তারাও পরিণত হচ্ছে শত কোটি টাকার মালিকে। সরকারি চাকরি করে কোনো রকমের জীবনযাপন সম্ভব হলেও অনেকে একই ধরনের জাদুর প্রদীপের কল্যাণে অবিশ্বাস্য ধরনের সম্পদের মালিক হচ্ছেন। এ ধরনের ধনকুবেররা তাদের সম্পদ পাচার করছেন বিদেশে। আর এ কারণেই নানান আইনি কাঠামো ও আদালতের নির্দেশনার পরও সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোয় বাংলাদেশিদের টাকা জমানো কমছে না। বরং টাকা জমানোর পরিমাণ আগের রেকর্ড ভেঙেছে। শুধু গত ১২ মাসে ওই দেশটির ব্যাংকগুলোয় বাংলাদেশিরা জমা করেছেন ২ হাজার ৯২৮ কোটির টাকার বেশি। সব মিলিয়ে বাংলাদেশিদের মোট জমার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। এ অর্থ আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সুইজারল্যান্ডের ন্যাশনাল ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনের ডাটা অংশে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এখানে বিশ্বের বিভিন্ন জাতীয়তার ব্যক্তিদের সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে মোট জমার পরিমাণ উল্লেখ করা আছে। তবে বরাবরের মতোই টাকা জমা করা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করেনি সুইস ব্যাংকগুলো। সেই সঙ্গে কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি নিজের জাতীয়তার পরিবর্তন ঘটিয়ে অর্থ আমানত করে সে হিসাবও নেই এ ৮ হাজার ২৭৫ কোটি টাকার মধ্যে। পাশাপাশি কেউ যদি সোনা, হীরা বা মূল্যবান কোনো সম্পদ সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোয় রাখেন সে অর্থও নেই এ হিসাবে। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের বিপুল অর্থ জমা থাকার ঘটনা প্রমাণ করেছে দুর্নীতিবাজদের কাছে বাংলাদেশের মানুষ কতটা অসহায়, কতটা জিম্মি। দেশের আইনের কর্তৃত্ব নিয়েও তা প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। প্রয়োগ পর্যায়ে তা যে অর্থবহ ভূমিকা রাখতে পারছে না সেটি আজ প্রমাণিত।

এ সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে হবে। পাচার বন্ধে কঠোর হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর