রবিবার, ১৯ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

বন্যার করাল গ্রাস

দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে হবে

দেশের বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে এবং জাতিকে এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে। করোনা মহামারির প্রভাবে গত দুই বছর দেশের অর্থনীতি এগিয়েছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। সে আঘাত কাটিয়ে ওঠার আগেই রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশকে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি করেছে। জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গম, চাল, ডালসহ অনেক পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে দ্বিগুণ বা তার চেয়ে বেশি বৃদ্ধি পাওয়ায় মারাত্মক ধকলে ভুগছে অর্থনীতি। সে বিপদ মোকাবিলার দুঃসময়ে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে চেপে বসেছে বন্যার ছোবল। বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ১০টি নদ-নদীর পানি ১৩ পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেটের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। সুনামগঞ্জের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সড়ক ও রেল যোগাযোগ। সিলেট-সুনামগঞ্জে বিদ্যুৎ কেন্দ্র ডুবে যাওয়ায় অন্ধকারের শিকার সাড়ে ৪ লক্ষাধিক গ্রাহক। সিলেটসহ বিভিন্ন অঞ্চলে পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ। দুর্গতদের উদ্ধারে নামানো হয়েছে সেনা ও নৌ বাহিনী। ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় সিলেট ও রংপুর অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি হাতিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬০ ও চিলমারী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। দুধকুমার নদের পাটেশ্বরী পয়েন্টে পানি ৯ সেন্টিমিটার ওপরে উঠে যায়। ধরলার পানি কুড়িগ্রাম পয়েন্টে ৯ ও তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছিল। সুরমার পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ১০৮, সিলেট পয়েন্টে ৭০ ও সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ভয়াবহ বন্যায় স্তব্ধ হয়ে পড়েছে উপদ্রুত এলাকার জনজীবন। দুর্গতরা ইতোমধ্যে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে ভুগছে। বন্যার্তদের পাশে স্থানীয় প্রশাসন এবং সেনা ও নৌ বাহিনী দাঁড়ালেও তা যথেষ্ট নয়। এ অবস্থায় সমাজের অবস্থাপন্ন মানুষদের সহমর্মিতার হাত বাড়াতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোকে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর