শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

অর্থ খরচের মচ্ছব

এ ঐতিহ্যের অবসান হোক

অর্থবছরের শেষ মুহূর্তে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে চলছে অর্থ খরচের মচ্ছব। বরাদ্দকৃত অর্থ যাতে কোনোভাবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত না যায় তা নিশ্চিতে চলছে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার ‘ধর মুরগি-কর জবাই’ নীতি। বরাদ্দের টাকা খরচ করতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মন্ত্রী-সচিবদের দফতর থেকে শুরু করে অনুবিভাগগুলোর কক্ষ-করিডোর এমনকি ওয়াশরুমেরও সংস্কার চলছে। সংস্কারের চেয়ে সৌন্দর্যবর্ধনের দিকেই মনোযোগ বেশি কর্মকর্তাদের। বরাদ্দের অর্থ খরচ করতে এ মুহূর্তে সচিবালয়ের কমবেশি ২০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বিভিন্ন দফতরে চলছে মেরামত ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। কাঠমিস্ত্রি, বৈদ্যুতিক লাইনম্যান, টেলিফোন অপারেটরসহ কারিগররা রাতদিন কাজ করছেন। ফলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে শোনা যাচ্ছে হাতুড়ি-বাটালের শব্দ। প্রতিটি অর্থবছরের শেষ মাসে বিভিন্ন খাতের বরাদ্দ খরচের ধুম পড়ে যায় এবং এটি সরকারি অফিসগুলোর ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। যেসব আসবাবপত্র আরও কয়েক বছর ব্যবহার করা যেত সেগুলোও বাদ দিয়ে নতুন আসবাবপত্র কেনা হয়। জুনে বরাদ্দ ফেরত না দিতে কারণে-অকারণে খরচ করেন মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর কর্তাব্যক্তিরা। আর এসব করতে যত কেনাকাটা হবে ততই লাভ! প্রতিটি জিনিস বাজারমূল্যের চেয়ে ৫-৬ গুণ বেশি দাম ধরে খরচ করা হয়- এ এখন ওপেন সিক্রেট। এ বছর এমন একসময় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে অপচয়ের মচ্ছব চলছে যখন ভয়াবহ বন্যায় দেশের ৪০ লাখের বেশি মানুষ অসহায় অবস্থার শিকার। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে গম, চাল, ভোজ্য ও জ্বালানি তেলের দাম আকাশচুম্বী। দেশের অর্থনীতি এখন এক যুগের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংকটে। জনগণের সেবক নামের মহাপ্রভুরা অর্থবছরের শেষ ভাগে খরচের উৎসব শুরু করেছেন যখন সরকার সব ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রতা অবলম্বনের চেষ্টা করছে। অপচয়ের এ অবতারদের জবাবদিহিতার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় যা ইচ্ছা তা-ই করাকে তারা কর্তব্য হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর