রবিবার, ২৬ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

আল্লাহর উদ্দেশ্যে বন্ধুত্ব...

মো. আমিনুল ইসলাম

আল্লাহর উদ্দেশ্যে বন্ধুত্ব...

ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায় আমরা সবাই মুসাফির।

মুসাফিরের উদ্দেশ্য সহযাত্রীদের সঙ্গে ভালোবাসা, একতা, বন্ধুত্ব এবং অন্যের হক আদায় করে সহাবস্থান বজায় রেখে দুনিয়ার জীবন শেষ করা। কারণ এ দুনিয়া হলো আল্লাহর পথের মনজিলগুলোর অন্যতম। কারও সঙ্গে আল্লাহর উদ্দেশ্যে বন্ধুত্ব স্থাপন করা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহ রব্বুল আলামিন যার মঙ্গল চান তিনি তাকে উৎকৃষ্ট বন্ধু দান করেন। যেন সে আল্লাহকে ভুলে গেলে তাকে স্মরণ করিয়ে দেন। আমাদের মনে রাখতে হবে দুজন মোমিন বন্ধু পরস্পর মিলিত হলে একের দ্বারা অন্যের ধর্মীয় উপকার না হয়ে পারে না। রসুল (সা.) বলেন, ‘যে দুই ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে বন্ধুত্ব স্থাপন করে আল্লাহ সেই ব্যক্তিকে অধিক ভালোবাসেন যে তার নিজের বন্ধুকে অধিক ভালোবাসে। তিনি আরও বলেন, ‘কেয়ামতের কঠিন দিনে আল্লাহ বলবেন, যেসব বান্দা আমার জন্য পরস্পর বন্ধুত্ব করেছিলে আজ তারা কোথায়? আজ আমি এ কঠিন দিনে তাদের আমার আরশের ছায়ায় আশ্রয় দেব।’ রসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে তার মুসলিম ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একজন ফেরেশতা তার পেছনে ঘোষণা করে বলে আল্লাহর বেহেশত তোমার জন্য মুবারক হোক।’ বন্ধুত্ব করতে হবে তার সঙ্গে যার আছে আল্লাহর ওপর অগাধ বিশ্বাস। আল কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘মোমিন পুরুষ ও মোমিন নারীরা একে অন্যের বন্ধু। এরা মানুষকে ন্যায় কাজের আদেশ দেয়, অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে। তারা নামাজ কায়েম করে, জাকাত আদায় করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসুলের অনুসরণ করে। এরাই হচ্ছে সেসব মানুষ, যাদের ওপর আল্লাহ অচিরেই দয়া করবেন। অবশ্যই আল্লাহ পরাক্রমশালী ও কুশলী।’ (সুরা আত তওবা, আয়াত ৭১) আল্লাহ আরও বলেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা কখনো ইহুদি-খ্রিস্টানদের নিজেদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ কোরো না, কেননা এরা নিজেরা সব সময় একে অন্যের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেউ যদি এদের কাউকে বন্ধু বানিয়ে নেয় তাহলে সে অবশ্যই তাদের দলভুক্ত হয়ে যাবে। আর আল্লাহ কখনই জালিমদের হেদায়েত দান করেন না।’ (সুরা আল মায়েদা, আয়াত ৫১) এ আয়াতটি বন্ধু নির্বাচনের ব্যাপার স্পষ্ট করেছে। সুতরাং বন্ধু নির্বাচনে আমাদের সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। ইমাম গাজ্জালি (রহ.) বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে তিনটি গুণের দিকে লক্ষ্য রাখার কথা বলেছেন। ১. নেককার ও পুণ্যবান ২. চরিত্রবান ৩. জ্ঞানবান। ইমাম জাফর আস সাদিক (রহ.) বলেন, ‘পাঁচ রকম ব্যক্তির সঙ্গে বন্ধুত্ব করা সমীচীন নয়। তারা হলো- ১. মিথ্যাবাদী ২. নির্বোধ ৩. ভীরু ৪. পাপাচারী ৫. কৃপণ ব্যক্তি।’

আল্লাহ রব্বুল আলামিন আরও বলেন, ‘ইমানদার ব্যক্তিরা কখনো ইমানদারদের বদলে কাফেরদের নিজেদের বন্ধু বানাবে না, যদি তোমাদের কেউ তা করে তবে আল্লাহর সঙ্গে তার কোনো সম্পর্কই থাকবে না।’ (সুরা আল ইমরান, আয়াত ২৮) সুতরাং আমাদের জীবনে বন্ধু নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

 

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার।

সর্বশেষ খবর