স্বপ্নের পদ্মা সেতু গতকাল উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লাখ লাখ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে। উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে অংশ নেয় অন্তত ১০ লাখ মানুষ। টেলিভিশনের পর্দায় অনুষ্ঠানটি দেখেছে অন্তত ১০ কোটি দর্শক। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে নতুন যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। দেশের ৫১ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো মেগা প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হলো। বাংলাদেশের অর্থনীতি কতটা সামর্থ্যরে অধিকারী তারও প্রমাণ রেখেছে এ সেতু নির্মাণ। পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকসহ সহযোগী দাতা সংস্থাগুলো অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড়ের আগমুহূর্তে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের একটি অশুভ মহলের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে প্রকল্প থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়। দুর্নীতির আষাঢ়ে গল্পকে তারা অজুহাত হিসেবে খাড়া করে। ফলে ভাবমূর্তির সংকটের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। সে মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। এ ঘোষণা বাস্তবতাবিবর্জিত আখ্যা দেন বিদেশি দাতা সংস্থাগুলোর এ-দেশি মোসাহেবরা। পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়বে এমন তত্ত্বও হাজির করেন তারা। কিন্তু পদ্মা সেতু প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুধু নয়, একই সময়ে বাংলাদেশে রেকর্ড পরিমাণ উন্নয়নকাজও হয়েছে। যার পরিমাণ আগের ১০০ বছরের সব উন্নয়ন কর্মকান্ডের চেয়ে বেশি। ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মিত এ সেতুর নির্মাণ ব্যয় উঠে আসবে ১৮ বছরের টোল থেকে। প্রধানমন্ত্রী শুধু সেতু উদ্বোধনই করেননি, তিনিই এ সেতুর প্রথম টোলদাতা। পদ্মা সেতু নির্মাণে সময় লেগেছে সাত বছর এবং এ সাত বছরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোয় জমির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৫০ গুণ। শিল্পায়নের মহাউদ্যোগও শুরু হয়েছে ২১টি জেলাজুড়ে। পদ্মা সেতু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ সারা দেশের মানুষের নবজাগরণে অবদান রাখবে- এমনটিই প্রত্যাশিত।