মঙ্গলবার, ২৮ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

সুন্দরবনের পর্যটন

সুন্দরবনের পর্যটন

পদ্মা সেতু চালুর পর সুন্দরবন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে। এটি একটি সুখবর। তবে সতর্কও থাকতে হবে। বিশ্বের বৃহত্তম বাদাবন সুন্দরবন বিশ্ব-ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃত। এ বনকে সংলগ্ন জনপদগুলোর ফুসফুস হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। নয়নাভিরাম এ বাদাবন বাংলাদেশকে ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষায় অবদান রাখছে। বিশ্বের সেরা বাঘ প্রজাতি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসভূমি সুন্দরবন। এ বনের চিত্রল হরিণ হরিণকুলের মধ্যে সেরা। যার মায়াবী আকর্ষণ সত্যিকার অর্থেই অনন্য। বাংলাদেশের গর্বের ধন এ বাদাবন ব্যবহারকারীদের অসচেতনতায় পরিবেশগত ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে। সুন্দরবন রক্ষায় সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা না থাকায় বন ও বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় ব্যত্যয় ঘটছে। বনের নদী-খালে নিয়ন্ত্রণহীন নৌযান চলাচলের পরিণতিতে পরিবেশ দূষণ নিশ্চিত হচ্ছে। সুন্দরবন থেকে অতিরিক্ত সম্পদ আহরণে হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশের ভারসাম্য। বিশ্বের বৃহৎ বাদাবন সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বনভূমিতে প্রায় ৫ হাজার প্রজাতির উদ্ভিদ, ১৯৮ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ৫৭৯ প্রজাতির পাখি ও ১২৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে। দেশের পর্যটনের জন্য অফুরন্ত সম্ভাবনার স্থল এ বাদাবন। কিন্তু সুন্দরবন নিয়ে বড় ধরনের গবেষণা না থাকায় সমন্বয়হীনতার কবলে পড়ছে বন বিভাগ ও প্রশাসনের সব পদক্ষেপ। বিশেষজ্ঞদের মতে, বনে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় সুন্দরবনের নদী-খাল দিয়ে যান্ত্রিক নৌযান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যান্ত্রিক যানবাহন জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। সুন্দরবনের ওপর অনেক মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভরশীল।

বংশপরম্পরায় যারা এ বাদাবনকে তাদের জীবিকার উৎস হিসেবে ভাবতে অভ্যস্ত। এসব মানুষের বড় অংশের জন্য বিকল্প কাজের সৃষ্টি করে সুন্দরবন থেকে লাগামহীনভাবে সম্পদ আহরণে বাদ সাধতে হবে। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয় এমন সব কর্মকান্ড কঠোরভাবে বন্ধ করা জরুরি। বন এলাকার জলাশয় যাতে দূষণের শিকার না হয় সেদিকেও রাখতে হবে সুতীক্ষণ নজর। সুন্দরবনের পর্যটন সম্ভাবনা কাজে লাগাতে এমন পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে বন কোনোভাবে দূষণের শিকার না হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের অশুভ প্রভাব মোকাবিলায় সুন্দরবনের সুরক্ষায় আরও বেশি যত্নবান হওয়া জরুরি।

              মোহাম্মদ সোহেল ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর