মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য

নিত্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে

ঈদুল আজহা সামনে রেখে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে চাঁদাবাজি। পাড়ার মাস্তান, টাউট, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসৎ সদস্যদের অশুভ জোটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। সারা দেশ থেকে রাজধানীতে গরু-ছাগলের ট্রাক আসার পথে চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছে। পশুর হাটের ঘাটে ঘাটে চলছে চাঁদাবাজদের মহোৎসব। সাধারণ মানুষের আশঙ্কা, এ বছর উন্মত্ত চাঁদাবাজির কারণে গরু-ছাগলের দাম ১৫-২০ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে। চাঁদাবাজদের পকেটে যেতে পারে অন্তত ১০০ কোটি টাকা। চাঁদাবাজির কারণে নিত্যপণ্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকছে না। রাজধানীতে ভ্যানে করে যে কাঁচামাল বিক্রি হয় তাতে ভ্যানপ্রতি গড়ে ১০০ থেকে ২০০ টাকা চাঁদা দিতে হয় রাজনৈতিক মাস্তান ও পুলিশের অসৎ সদস্যদের। রাজধানীতে যাত্রীবাহী বাস, লেগুনাসহ অন্যান্য পরিবহন থেকেও তোলা হয় চাঁদা। ঈদে যাত্রীদের চাপ থাকায় পরিবহন সেক্টরে বাড়তি আয় হয়। সে সুযোগে চাঁদাবাজরাও আদায় করে বাড়তি চাঁদা। পাড়া-মহল্লার ছোটখাটো দোকান থেকে শুরু করে ঢাকার পাইকারি বাজার এলাকায় চলে বড় অঙ্কের চাঁদাবাজি। এর বাইরে শিল্পপতি, বাড়িওয়ালা, নতুন নির্মাণাধীন ভবন, বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল থেকেও চাঁদা তোলা হয়। চলতি বছর চাঁদাবাজি নিয়ে এখনো কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও বিভিন্ন সেক্টরের মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। ঈদ এলেই দেশজুড়ে চাঁদাবাজের আনাগোনা বেড়ে যায়। কোথাও সরাসরি, কোথাও মাধ্যম ধরে চাওয়া হচ্ছে চাঁদা। বাংলাদেশ হকার ফেডারেশনের তথ্যমতে, রাজধানীতে নিয়মিত হকারের সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ। বছরের অন্যান্য সময় ছোট হকারপ্রতি ১০০ আর বড় হকারপ্রতি ৩০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করে লাইনম্যানরা। এলাকাভেদে হিসাবটা কমে-বাড়ে। চাঁদাবাজদের কারণে নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়ছে। সরকারের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। নিজেদের স্বার্থেই সরকারকে চাঁদাবাজদের সামাল দিতে হবে। চাঁদাবাজ যে-ই হোক, তার নখর ভাঙতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর