দেশে চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও লোডশেডিংয়ের জমানা আবার ফিরে এসেছে। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্ববাজারে গ্যাস, জ্বালানি তেল ও কয়লার দাম অবিশ্বাস্যহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। ভর্তুকি প্রত্যাহার করলে বিদ্যুতের দাম প্রায় দ্বিগুণ বাড়াতে হবে এবং পরিণতিতে প্রতিটি ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি দেখা দেবে। মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪ হাজার মেগাওয়াট। আর সরবরাহ করা হয় ১৩ হাজার ৭০ মেগাওয়াট। ঘাটতি ছিল ৯৩০ মেগাওয়াট। বর্তমানে উচ্চমূল্যের জন্য খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ থাকায় দিনে অন্তত ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি কম সরবরাহ করছে পেট্রোবাংলা। আন্তর্জাতিক বাজারে অন্যান্য জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে তেল বা কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনও বাড়ানো যাচ্ছে না। ঢাকার দুই বিতরণ কোম্পানি ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড ও ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি জানিয়েছে, সব মিলিয়ে তাদের ৩০০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ ঘাটতি হচ্ছে। ঘাটতি মেটাতে এলাকাভেদে ৩০ মিনিট করে লোডশেডিং করা হচ্ছে। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এক অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি লোডশেডিংয়ে এলাকাভিত্তিক সময় নির্ধারণ করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। স্মর্তব্য, দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগে যে এলএনজির দাম ছিল ৫-৬ ডলার তা ৩৫ থেকে ৪০ ডলারে ঠেকেছে। জ্বালানি তেল ও গ্যাস আমদানি অর্থনীতির ওপর ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি করছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারে সংযমের কোনো বিকল্প নেই।