শনিবার, ১৬ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

নামাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত

মো. আমিনুল ইসলাম

নামাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত

ইসলাম ধর্মের ভিত্তি পাঁচটি। তার দ্বিতীয়টি নামাজ। হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘বেহেশতের চাবি হচ্ছে নামাজ, আর নামাজের চাবি হলো অজু।’ (মুসনাদে আহমাদ) নামাজ সম্পর্কে আল কোরআনে আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলেন, ‘হে মুসলমানরা! তোমরা নামাজ প্রতিষ্ঠা কর, জাকাত দাও ও রসুলের আনুগত্য কর, আশা করা যায় তোমাদের ওপর দয়া করা হবে।’ (সুরা আন নুর, আয়াত ৫৬) আল্লাহ আরও বলেন, ‘হে নবী! সূর্য ঢলে যাওয়ার পর থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত (সময়ের ভিতর) নামাজ প্রতিষ্ঠা করবে এবং ফজরের নামাজ ও কোরআন তিলাওয়াতের প্রতি যত্নবান হবে অবশ্য ফজরের নামাজ ও কোরআন তিলাওয়াত হচ্ছে ফেরেশতাদের হাজিরা দেওয়ার সময়।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ৭৮) রসুল (সা.) বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে আল্লাহ রব্বুল আলামিন নামাজ আদায়কারীকে পাঁচটি পুরস্কার দান করবেন- ১. রিজিকের অভাব দূর করে দেবেন ২. কবরের আজাব মাফ করে দেবেন ৩. কেয়ামত দিবসে আমলনামা ডান হাতে দেবেন ৪. পুলসিরাত সহজে (অতি দ্রুত) পার করে দেবেন ৫. বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।’ একজন মোমিন মুসলমানের জীবনে এর চেয়ে বড় পুরস্কার আর কী হতে পারে।

আল কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা নামাজগুলোর ওপর একান্ত যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাজের ব্যাপারে এবং তোমরা আল্লাহর জন্য বিনীতভাবে দাঁড়িয়ে থাক।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ২৩৮) মুনাফেকরা লোক দেখানোর উদ্দেশে নামাজ পড়ে। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘এরা যখন নামাজে দাঁড়ায় তখন একান্ত আলস্যভাবেই দাঁড়ায়, তারা কেবল লোকদের দেখায়, এরা আল্লাহকে আসলে কমই স্মরণ করে।’ (সুরা নিসা, আয়াত ১৪২) হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা বল তো, যদি তোমাদের কারও দরজার সামনে একটি পুকুর থাকে যাতে সে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে তবে তার শরীরে কোনো ময়লা থাকতে পারে? সাহাবিরা উত্তরে বললেন, না কোনো ময়লাই থাকবে না। এরপর তিনি বললেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দৃষ্টান্ত এমনই। এর বিনিময়ে আল্লাহ নামাজির সব গুনাহ মাফ করে দেন।’ (বুখারি, মুসলিম) রসুল (সা.) যখন মিরাজে গমন করেন মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন তখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেন রসুল (সা.) ও তাঁর উম্মতের ওপর। কোরআনে মহান আল্লাহ সর্বমোট ৮২ বার নামাজের কথা বলেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা নামাজ প্রতিষ্ঠা কর, জাকাত প্রদান কর এবং রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু কর।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ৪৩) ‘হে নবী! আমার বান্দাদের মধ্যে যারা মোমিন তাদের বলুন নামাজ কায়েম করতে।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত ৩১) নামাজের গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। আল্লাহ আরও বলেন, ‘যারা কিতাবকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে এবং নামাজ প্রতিষ্ঠা করে আমি এরূপ সৎকর্মশীলদের কর্মফল নষ্ট করি না।’ (সুরা আরাফ, আয়াত ১৭০) রসুল (সা.) বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এক জুমা থেকে আরেক জুমা ও তাদের মধ্যবর্তী সময়ের জন্য কাফফারাস্বরূপ।’ (মুসলিম) রসুুল (সা.) আরও বলেন, ‘কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব হবে, যদি এ বিষয়ে ঠিক থাকে তবে সে মুক্তি পাবে এবং সফলকাম হবে। আর যদি এ বিষয়ে ঠিক না থাকে তবে সে ব্যর্থ এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত।’ (তিরমিজি)। আল্লাহ আমাদের সবাইকে নামাজের গুরুত্ব বোঝা ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের তৌফিক দান করুন।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার।

সর্বশেষ খবর