মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

ডলার ঘাটতি

সমাধানের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে

ডলার ঘাটতি দেশের ব্যাংকিং খাতের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রেকর্ড পরিমাণ রপ্তানি আয়ের পরও স্বস্তি মিলছে না। কারণ জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানি খাতে খরচ বেড়েছে স্পুটনিক হারে। ভোজ্য তেল ও খাদ্য আমদানিতেও ব্যয় হচ্ছে বাড়তি অর্থ। ফলে বৈদেশিক বাণিজ্যে দেশি ব্যাংকগুলো বিদেশি ব্যাংকের এলসি নিশ্চিতকরণের প্রতিশ্রুতি পূরণে বিলম্ব করছে। পরিণতিতে ব্যাংকগুলোকে এলসি কনফারমেশন ফি বেশি দিতে হচ্ছে। ডলার ঘাটতিও তাতে বেড়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে আমদানি-রপ্তানির খরচও বাড়ছে। কভিডের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ব্যাংকাররা আন্তব্যাংক বাজার আরও স্বাধীনভাবে পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। যাতে তারল্যের প্রবাহ নির্বিঘœ থাকে। কোনো ব্যাংকেরই যাতে নির্ধারিত সময়ে অর্থ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি পূরণের সক্ষমতা নষ্ট না হয়। এসবের মধ্য দিয়ে বিশ্বজুড়ে দেশের ব্যাংকগুলোর সুনাম ধরে রাখতে হবে। নির্ধারিত সময়ে অর্থ পরিশোধে বিলম্ব অন্য পক্ষের কাছে ডিফল্ট হিসেবে চিহ্নিত হয়। এমন ঘটনা নিয়মিত ঘটলে বিনিয়োগকারী কিংবা ঝুঁকি গ্রহণকারীদের কাছে আকর্ষণ হারায় সেই বাজার। বিশ্ববাজারের অস্থিরতায় আমদানি খাতে বিপুল অর্থ ব্যয় হওয়ায় ভারসাম্য রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। এ কথা ঠিক, ভোজ্য ও জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতা থেমেছে। কয়েক দিন ধরে এ পণ্য দুটির দাম কমেছে। কিন্তু জ্বালানি তেলের দাম এখনো এত বেশি যে যা কিনে চাহিদা পূরণ কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। বিশ্বমন্দায় অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে মুদ্রার মূল্যায়ন এ পর্যন্ত কমই হয়েছে। কিন্তু অর্থনীতিবিদের অনেকেই কৃত্রিমভাবে টাকার দাম ধরে না রেখে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে। তাতে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম হয়তো বাড়বে। আমদানির বেলায় টাকার হিসাবে খরচ হয়তো বেড়ে যাবে, তবে তা আমদানি নিরুৎসাহ করার ক্ষেত্রেও অবদান রাখবে। তবে এর ফলে দেশে মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা থাকবে কি না তা-ও বিবেচনায় আনতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর