রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগের আছেন একজন শেখ হাসিনা

নঈম নিজাম

আওয়ামী লীগের আছেন একজন শেখ হাসিনা

অন্য সবার মতো আড্ডা আমাকেও টানে। কখনো কখনো মন চায় তুলতে চায়ের কাপে ঝড়। সে আড্ডা হোক রাজনীতি, হোক সাহিত্য। কথা হচ্ছিল আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে। বর্তমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলছিলাম। টেবিলে ছিলেন আমার আরেক সহকর্মী। আলোচনা জমে আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেওয়া-না নেওয়া নিয়ে।  চায়ের কাপে ঝড়ে শ্রীলঙ্কার বর্তমান হাল, ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্ববাস্তবতা ও সরকারের সামনের চ্যালেঞ্জ বাদ পড়ে না। উঠে আসে আগামী ভোটে বাংলাদেশ নিয়ে আমেরিকা ও ভারতের ভূমিকা কী হবে এবং কূটনীতিকরা কেন এত তৎপর এখন বাংলাদেশ নিয়ে। প্রশ্ন আমাদের। জবাব দিচ্ছেন নেতা। আবার তিনি আমাদের কাছেও ছুড়ে দিচ্ছেন প্রশ্নের বাণ। নেতা বললেন, ‘বিএনপি কিংবা বিদেশি কেউই আমাদের জন্য ফ্যাক্টর নয়। বাংলাদেশের রাজনীতি বিদেশনির্ভর নয়। অন্য কোনো দেশের রাষ্ট্রদূত আর হাইকমিশনারের ইশারায় এ দেশে কিছু হবে না। লাভ হবে না ঘোলা পানিতে বিএনপির মাছ শিকারের চেষ্টা। সুশীল আর ডক্টরদের দেশ-বিদেশে নানামুখী তৎপরতা ভেস্তে যাবে যদি আমরা ঠিক থাকি।’ মনোযোগ দিয়ে কথাগুলো শুনছিলাম। বললাম, আমরা ঠিক থাকি বলতে কী বোঝাতে চাইছেন? আরেকটু খোলাসা করুন। জবাবে সেই নেতা বললেন, ‘আমরা মানে আওয়ামী লীগকে বুঝিয়েছি। আমাদের নেতা-কর্মীদের কর্মকান্ডের কথা বলছি। সাধারণ মানুষ সরকারি দলের কর্মকান্ড দেখে। কিন্তু কতিপয় অর্বাচীন বুঝে না বুঝে যা খুশি তা করে। নিজেরা নিজেরা মারামারি হানাহানিতে লিপ্ত হয়। অকারণে বিতর্ক তৈরি করে। লাগামহীন আচরণের প্রকাশ ঘটায়। বাস্তবতা বুঝতে চায় না। এতে মানুষ হতাশ হয়। ক্ষুব্ধ হয়, ব্যথিত হন সরকারি দলের কর্মীরাই। আমাদের সমস্যা নিজেদের অভ্যন্তরের ঝামেলা নিয়ে। বাইরের চক্রান্ত আগেও ছিল, এখনো আছে। এগুলো সামাল দিয়েই আওয়ামী লীগ আজকের অবস্থানে।’

কথাগুলো পছন্দ হলো। আওয়ামী লীগ ঐতিহ্যবাহী একটি অভিজ্ঞ পুরনো রাজনৈতিক দল। যুগে যুগে এ দলটি বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। এ দল মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে। শেখ হাসিনা সারাটা জীবন বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ নিয়ে লড়েছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন মানুষের অধিকার। তাঁর ত্যাগ-তিতিক্ষার সুফল ভোগ করছে আজকের আওয়ামী লীগ। তিনি গড়েছেন টানা ক্ষমতার রেকর্ড। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ জানে কী করে আন্দোলন করতে হয়। কী করে আন্দোলন ব্যাহত করতে হয়। দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে ও ভিতরে থাকার সমান অভিজ্ঞতা দলটির। এ দলের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়ে কিছু করার শক্তি এখন বিএনপির নেই। টানা ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির ভিতরে ক্লান্তি তৈরি হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর তৈরি হয়েছে হতাশা। বিএনপি এখন আর আগের অবস্থানে নেই। তারা দলের চেয়ারপারসনের মুক্তির জন্য কোনো আন্দোলন গড়তে পারেনি। দাঁড়াতে পারেনি নেত্রীর পাশে। এখনো দলের ভিতরে-বাইরে সমস্যার শেষ নেই। বেগম খালেদা জিয়া এখন শারীরিকভাবে অসুস্থ। হাসপাতাল, মামলা-মোকদ্দমা আর জেল নিয়ে তিনি কাবু। সাধারণ নেতা-কর্মীরা তাঁর শারীরিক অবস্থান নিয়ে চিন্তিত। দলের আরেক শীর্ষ নেতার অবস্থান লন্ডনে। বিদেশের মাটিতে বসে বাংলাদেশের রাজনীতিতে শীর্ষ পর্যায়ে নেতৃত্ব দেওয়া যায় না। কঠিন এ পরিবেশে দল সামাল দিতে লড়ছেন মির্জা ফখরুল। তিনি কতটা পারবেন তা বলার সময় আসেনি। তবু ভদ্রলোক হিসেবে মির্জা ফখরুল দেশ-বিদেশে একটা অবস্থান গড়েছেন। টিকে আছেন।

ক্ষমতা ও বিরোধী দলের রাজনৈতিক বাস্তবতা সম্পূর্ণ আলাদা। সরকারি দলে চাওয়া-পাওয়ার হিসাব। বিরোধী দলে হামলা-মামলা আর কারাগার। আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সময় বিরোধী দলে ছিল। হামলা-মামলাসহ কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে আজকের অবস্থানে। আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি দুঃসময় কেউ মোকাবিলা করেনি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর এ দলটি দীর্ঘ ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে ছিল। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮০ ছিল দলটির জন্য এক দুঃসহ পরিস্থিতি। তারপর পথপরিক্রম ও কঠিন বাস্তবতায় নেতারা সিদ্ধান্ত নিলেন দল টেকাতে নিয়ে আসবেন বঙ্গবন্ধুকন্যাকে। আওয়ামী লীগের লাখ লাখ কর্মী নেত্রীর আগমনের খবরকে স্বাগত জানালেন। দলে উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হলো। এ কর্মীরাই ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ভরসা। শেখ হাসিনাও টিকে আছেন তাঁদের ভালোবাসায়। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নেওয়ার পথ তৈরি ১৯৭৭ সালে। সে বছরের ৩ ও ৪ এপ্রিল ঢাকার ইডেন হোটেলে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সে সম্মেলনের দলাদলি কর্মীদের মধ্যে নীরব আলোচনায় নিয়ে আসেন শেখ হাসিনাকে। সম্মেলনে মিজানুর রহমান চৌধুরী দলের সভাপতির অন্যতম দাবিদার ছিলেন। মোল্লা জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে সম্মেলন উদ্বোধন করেন সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন। সে সম্মেলনে ফণীভূষণ মজুমদার, জহিরুল কাইউমসহ অনেক নেতা সরাসরি বিরোধিতা করলেন মিজান চৌধুরীর। তরুণ নেতারা এতে সায় দিলেন। সে কাউন্সিলে সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনকে আহ্বায়ক করা হয়েছিল অস্থায়ীভাবে। পরে আবদুল মালেক উকিল সভাপতির দায়িত্ব নেন। আবদুর রাজ্জাক হন সাধারণ সম্পাদক। তোফায়েল আহমেদ সাংগঠনিক সম্পাদক।

সেই সম্মেলনে মিজানুর রহমান চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছিলেন, ‘নেতা চলে গেলেও কর্মী রেখে গেছেন। যদি দেশে কোনো দিন বেসামরিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের পক্ষেই সে সরকার গঠন সম্ভব।’ মিজান চৌধুরীর সেই বক্তৃতা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সাহসী করেছিল। ভাবনা তৈরি করেছিল শেখ হাসিনাকে ঘিরে। আওয়ামী লীগের পরের সম্মেলন হয় ১৯৮১ সালের ১৩-১৫ ফেব্রুয়ারি। সে সম্মেলনের এক বছর আগে থেকেই নেতারা দিল্লি আসা-যাওয়া শুরু করেন। তাঁরা বঙ্গবন্ধুকন্যাকে অনুরোধ জানাতে থাকেন দলের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য। অনুরোধ নিয়ে বারবার গিয়েছিলেন ডা. এস এ মালেক, জিল্লুর রহমান, আইভি রহমান, আবদুস সামাদ আজাদ, কোরবান আলী, আমির হোসেন আমু, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীসহ সিনিয়র নেতারা। ১৯৮১ সালের সম্মেলনে শেখ হাসিনার নাম সভানেত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আওয়ামী লীগকে এক রাখার জন্য, কর্মীদের উজ্জীবিত করতে এর কোনো বিকল্প ছিল না। সম্মেলনের পর আবার দিল্লি যান আবদুল মালেক উকিল, ড. কামাল হোসেন, জিল্লুর রহমান, আইভি রহমান, টাঙ্গাইলের আবদুল মান্নান, আবদুস সামাদ আজাদ, কোরবান আলী, জোহরা তাজউদ্দীন, সাজেদা চৌধুরী, গোলাম আকবর চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদসহ অনেক নেতা। আলাদাভাবে সবার আগে যান এস এ মালেক। তাঁরা নেত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন দেশে ফেরার তারিখ নিয়ে। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা সারা দেশে তখন একজনের জন্যই অপেক্ষা করতে থাকেন। সে অপেক্ষার অবসান ঘটে একই বছরের ১৭ মে।

শেখ হাসিনা হাল ধরার আগে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা ছিল। টিকে থাকা নিয়ে আশঙ্কা ছিল। এক কঠিন পরিবেশ-পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৩৪। সে বয়সে এত বড় একটি দলের হাল ধরার বিষয়টি ছিল চ্যালেঞ্জের। বঙ্গবন্ধুর মেয়ে সে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার কাছাকাছি নিয়ে যান। জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা হন। ১৯৮৬ সালের মতোই ১৯৯১ সালে ষড়যন্ত্রের কবলে পড়ে ক্ষমতায় আসতে পারেনি আওয়ামী লীগ। অসীম ধৈর্য নিয়ে এক হাতে তিনি সব মোকাবিলা করেছেন। তাঁর একক কর্মতৎপরতায় ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। পাঁচ বছর না যেতেই ২০০১ সালে আবারও আওয়ামী লীগকে ঘিরে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। আওয়ামী লীগের পছন্দের সিইসি সেই চক্রান্তের জালে ছিলেন। সহায়তা পাওয়া যায়নি আওয়ামী লীগ মনোনীত রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর সারা দেশে তান্ডব শুরু হয়। সে তান্ডব থামাতে সেনাবাহিনী নামাতে হয়েছিল খালেদা জিয়ার সরকারকে। সারা দেশে চালানো হয় অপারেশন ক্লিনহার্ট। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে সেনাবাহিনী ফিরে যায়। কিন্তু শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চক্রান্ত শেষ হয়নি। এবার বঙ্গবন্ধুকন্যাকে হত্যা করতে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থার প্রধান এ ঘটনায় অভিযুক্ত হয়ে এখন কারাগারে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় মৃত্যুর হাত থেকে আল্লাহ তাঁকে রক্ষা করেছেন। আল্লাহ তাঁকে দিয়ে দেশের জন্য বড় কাজ করাতে চান বলে বাঁচিয়ে রেখেছেন মানুষের জন্য।

শুধু ২১ আগস্ট নয়, ১৯৮১ সালে দেশে আসার পর ১৯৯৬ সালের আগে এবং ২০০১ সালের পর বারবার হামলার মুখে পড়েছিলেন শেখ হাসিনা। মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলেন। কারাবরণ করেছিলেন। কিন্তু চরম ধৈর্য ধরে তিনি পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। সামাল দিয়েছেন দলের ভিতর-বাইরের সব। সাদা চোখে অনেক বাস্তবতা এখন হয়তো অনেকে ভুলে গেছেন। আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে বাকশাল গঠন না হলে আওয়ামী লীগ ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালেই ক্ষমতায় আসত। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো না। ড. কামাল হোসেন, মোস্তফা মহসীন মন্টুদের চ্যালেঞ্জ সামলিয়েছেন। আবদুর রাজ্জাককে ঘরে ফিরিয়ে এনেছেন। বিলুপ্ত করেছেন রাজ্জাকের বাকশাল। ১৯৯১ সালের নির্বাচনের সময় এবং পরে আমরা শেখ হাসিনার সঙ্গে সারা দেশ সফর করেছি। মানুষের ভালোবাসা দেখেছি তাঁর জন্য। বাংলাদেশের মানুষের সেই ভালোবাসার জবাব দিচ্ছেন তিনি ক্ষমতায় এসে উন্নয়নের চমক দিয়ে। তাঁর দর্শন, চিন্তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব আওয়ামী লীগকে নতুন উচ্চতা দিয়েছে। নতুন মাত্রায় এনেছে। তৈরি করেছে আশার আলো। দেশ-বিদেশে বাংলাদেশ নিয়ে বেড়েছে প্রত্যাশা। পাকিস্তানের মতো দেশও এখন কথায় কথায় উপমা টানে বাংলাদেশের উন্নয়নের। প্রশংসা করে পদ্মা সেতুর। এ সাফল্য শেখ হাসিনার। এ সাফল্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক ধারার। বাংলাদেশের আগামী দিনের সুস্থ উন্নয়ন ধারাবাহিকতায় মানুষের প্রত্যাশা বেড়েছে। তৈরি হয়েছে নতুন স্বপ্ন। কতিপয় অর্বাচীনের বালখিল্য আচরণে এ অর্জন ব্যাহত হতে পারে না। শেখ হাসিনা নিজেও তা কাউকে করতে দেবেন বলে মনে করি না।

সব সময় অতি উৎসাহীরা সর্বনাশ করে আওয়ামী লীগের। দেশ-বিদেশে ক্ষুণ্ণ করে সুনাম। কতিপয় মন্ত্রী, এমপি, নেতা ও আমলার দায়ভার পুরো দল কেন নেবে? একজন এমপির কাজ মারধর করা নয়। দায়িত্বশীল সহযোগী সংগঠনের নেতাদের দায়িত্ব কমিটি বাণিজ্য নয়। মাঠপর্যায়ের অনেক নেতা-কর্মীই দুঃখ করেন কমিটি বাণিজ্য নিয়ে। হতাশা ব্যক্ত করেন সম্মেলন না করা নিয়ে। আড়াই বছর ধরে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের কমিটি করার অনুরোধ রক্ষা করতে পারেনি কেন্দ্রীয় যুবলীগ। এ সংগঠন এখন যে লাউ, সেই কদু। ওমর ফারুক চৌধুরীর সমালোচনাকারীদের একজন বললেন, তিনি সিদ্ধান্ত দিতেন ক্ষিপ্রগতিতে। বেলা শেষে সংগঠন করে ঘরে ফিরতেন। এখন ঠিক বিপরীতটা। সেদিন এক এমপি দুঃখ করলেন ছাত্রলীগ নিয়ে। বললেন, কমিটি নিয়ে দুই পক্ষ থেকেই টাকা নিচ্ছে তারা। এভাবে কমিটি বাণিজ্য আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সংস্কৃতি নয়। গতিশীল নেতৃত্ব তৈরি না হলে, যোগ্য নেতা না এলে রাজনীতিতে সরকারি আমলাদের দাপট স্বাভাবিকভাবে বাড়বে। চাকরিকালীন অনেক আমলাকে গত ১২ বছরে আওয়ামী লীগার হতে দেখেছি। আবার বদলাতেও দেখেছি। অবসরে গিয়ে অনেকে নতুন হিসাব করেন। ভুলে যান চাকরিকালীন অতি আওয়ামী লীগ সাজার কথা। আবার কেউ সাজেন সুশীল। টক-শোয় কথা বলেন আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অথবা কোনো কমিশনে পাঁচ বছরের নতুন নিয়োগ না পেলে তারা ক্ষোভ ব্যক্ত করেন। ভুলে যান চাকরিকালীন পাওয়ার কথা। আওয়ামী লীগ আমলানির্ভর হতে পারে না। আওয়ামী লীগ কামলানির্ভর রাজনৈতিক দল। এ দলে বারো রকমের মানুষের সমাবেশ আছে। কিন্তু মাঠের কর্মীদের বিষয়টি আলাদা। তাঁদের চাওয়া-পাওয়ার হিসাব নেই। তাঁরা কাজ করেছেন বঙ্গবন্ধুর জন্য। কাজ করছেন বঙ্গবন্ধুকন্যার জন্য। কী পেয়েছেন কী পাননি সে হিসাব মেলান না। আর সে হিসাব মেলান না বলেই আওয়ামী লীগ টিকে আছে।  টিকে থাকবে। শেখ হাসিনা যত দিন আছেন এ দলের চিন্তার কিছু দেখি না। তিনি এক হাতেই সামাল দিচ্ছেন সবকিছু। ভরসার কেন্দ্রবিন্দু একজনই।

                লেখক : সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।

সর্বশেষ খবর