রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা গণহত্যা

আন্তর্জাতিক আদালতের রায় তাৎপর্যপূর্ণ

রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে মামলা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছেন হেগের আন্তর্জাতিক আদালত। জাতিসংঘের এই সর্বোচ্চ আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল আফ্রিকার ক্ষুদ্র মুসলিম দেশ গাম্বিয়া। গণহত্যা মানবতার বিরুদ্ধে একটি জঘন্য অপরাধ। এ যুক্তিতে সংক্ষুব্ধ দেশ হিসেবে গাম্বিয়া আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হয়। মিয়ানমার গাম্বিয়ার এ মামলাকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে মামলাটি আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারাধীন হওয়ার যোগ্য নয় এমন আপত্তি তোলে। মিয়ানমারের দাবি ছিল, ২০১৯ সালে গাম্বিয়ার করা মামলাটি অগ্রহণযোগ্য এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের এ ব্যাপারে এখতিয়ার নেই। রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতাকে অধিকার সংগঠন ও জাতিসংঘের এক তদন্ত প্রতিবেদনে ১৯৪৮ সালের গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘনের সমতুল্য বলা হয়েছে। মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবীরা ফেব্রুয়ারিতে যুক্তি দেন, বিশ্ব আদালত কেবল রাষ্ট্রের মধ্যে মামলার শুনানি করে এবং ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার পক্ষ থেকে গাম্বিয়া রোহিঙ্গাদের অভিযোগ আনায় মামলাটি বাতিল করা উচিত। তাঁরা আরও দাবি করেন, গাম্বিয়া মামলাটি আদালতে আনতে পারে না কারণ এটি মিয়ানমারের ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত নয়, এবং মামলা দায়েরের আগে দুই দেশের মধ্যে আইনি বিরোধ ছিল না। গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিচারমন্ত্রী দাউদা জ্যালো বলেন, মামলাটি অগ্রসর হওয়া উচিত এবং এটি ওআইসি নয়, তাঁর দেশই এনেছে। জ্যালো আদালতকে বলেন, তাঁরা কারও প্রক্সি নন। এ বিষয়ে নেদারল্যান্ডস ও কানাডা গাম্বিয়াকে সমর্থন করে। হেগের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস মিয়ানমারের আপত্তির শুনানি শেষে মামলা চলার পক্ষে রায় দেওয়ার বিষয়টি তাৎপর্যের দাবিদার। এর ফলে গাম্বিয়ার মামলা দায়েরের যথার্থতা স্বীকৃত হয়েছে। স্মর্তব্য, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধন অভিযান শুরু হয়। প্রাণ বাঁচাতে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। মামলাটি রোহিঙ্গাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায় সৃষ্টি করলে তা হবে এক বড় অর্জন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর