রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

কোরআন তিলাওয়াতের ফজিলত

মো. আমিনুল ইসলাম

কোরআন তিলাওয়াতের ফজিলত

মহাগ্রন্থ আল কোরআন হলো হেদায়াতের আলোকবর্তিকা। মুসলমানদেও পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। এ কোরআন মহান রব্বুল আলামিন হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর সুদীর্ঘ ২৩ বছর ধরে নাজিল করেন। কোরআন হলো মানবজীবনের সব সংকট উত্তরণের এবং বিপদ থেকে নাজাত পাওয়া ও পরকালের মুক্তির উৎস। অতএব কোনো মানুষ যদি কোরআন আঁকড়ে জীবন পরিচালিত করে তাহলে সে কখনো পথভ্রষ্ট হবে না এবং কেউ তাকে বিপথে পরিচালিতও করতে পারবে না। আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলেন, ‘এ সেই কিতাব, যাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। এটি মুত্তাকিদের জন্য পথপ্রদর্শক।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ২) মুত্তাকি হলো সে যে আল্লাহর আদেশ মেনে নিয়ে এবং তাঁর নিষেধ থেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে থেকে তাঁর অসন্তুষ্টি ও শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। একমাত্র মুত্তাকিরাই কোরআন পাঠের মাধ্যমে হেদায়েত লাভ করতে পারে।

আল্লাহ আরও বলেন, ‘আর এটি বরকতময় কিতাব, যা আমি নাজিল করেছি। সুতরাং তোমরা তার অনুসরণ কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, যাতে তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হও।’ (সুরা আনয়াম, আয়াত ১৫৫) কোরআনের পরিচয় দিতে গিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘হে মানুষ! এ কিতাবে তোমাদের মালিকের কাছ থেকে তোমাদের কাছে যা কিছু পাঠানো হয়েছে তোমরা তার অনুসরণ কর এবং তার বদলে তোমরা অন্য কোনো অভিভাবকের অনুসরণ কোরো না, আসলে তোমাদের কম লোকই উপদেশ মেনে চলে।’ (সুরা আরাফ, আয়াত ৩) মানুষের সুবিধার্তে আরবি ভাষায় কোরআন নাজিল করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘এভাবেই আমি কোরআনকে আরবি ভাষায় অবতীর্ণ করেছি এবং তাতে বিশদভাবে বিবৃত করে দিয়েছি সতর্কবাণী যাতে তারা ভয় করে অথবা তাদের জন্য এটা উপদেশবাণীতে পরিণত হয়।’ (সুরা ত্বা হা, আয়াত ১১৩)

হজরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঠেকে ঠেকে কোরআন পাঠ করে এবং তা তার জন্য কঠিন মনে হয়, তবে সে এ পাঠের জন্য দ্বিগুণ সওয়াব অর্জন করবে।’ (মুসলিম) হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআন পড়েছে এবং তা মুখস্থ করেছে, এরপর হালালকে হালাল এবং হারামকে হারাম জেনেছে আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করবেন।’ (তিরমিজি, মিশকাত) একজন মোমিন মুসলমানের জন্য এর চেয়ে বড় পুরস্কার আর কী হতে পারে? আল কোরআনে আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব কোরআন তিলাওয়াত করে, সালাত কায়েম করে ও আল্লাহর দেওয়া রিজিক থেকে গোপনে বা প্রকাশ্যে দান করে তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির, আয়াত ২৯) সুতরাং এ আয়াতে কোরআন তিলাওয়াতের ব্যাপারে আল্লাহ নিজেই আমাদের তাগিদ দিয়েছেন পাশাপাশি নামাজ কায়েম ও দান-সদকা করার ব্যাপারেও গুরুত্বারোপ করেছেন। কোরআনের বিধান যারা মানে না তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আল্লাহ বলেন, ‘তার চাইতে বড় জালিম আর কে আছে, যাকে তার মালিকের আয়াতগুলো স্মরণ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং সে এর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে এবং যা কিছু গুনাহ তার হাত দুটো অর্জন করেছে।’ (সুরা আল কাহাফ, আয়াত ৫৭) সুতরাং কোরআন তিলাওয়াত ও তদনুযায়ী আমল করার মাধ্যমে আমরা যেন পরকালের শাস্তি থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে প্রতিদিন কোরআন পড়ার তৌফিক দান করুন।

                লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর