সোমবার, ২৫ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

ক্যাপাসিটি চার্জ

অপচয় রোধের বিষয়ে ভাবতে হবে

বিদ্যুৎ খাতের ক্যাপাসিটি চার্জ অর্থনীতির জন্য বিড়ম্বনা ডেকে আনছে। চাহিদার তুলনায় দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ঢের ঢের বেশি। কিন্তু গ্যাস ও ডিজেলের অভাবে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। উৎপাদন হোক বা না হোক দেশি-বিদেশি সব বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অলসভাবে বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া অপচয়ের শামিল। এ ক্ষেত্রে সরকারকে কঠোর হতে হবে এবং চুক্তি বাতিলের উদ্যোগ নিতে হবে। স্মর্তব্য, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য সরকার ১৬ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা ভাড়া দিয়েছে। অর্থাৎ এ খাতে প্রতি মাসে ১ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে চাহিদা কম থাকায় অলস বসে থাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকেও ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয় সরকারকে। আবার দিনের বেলা কিছু কেন্দ্র আছে বিদ্যুৎ উৎপাদনে না থাকলেও সেগুলো পিক লোডে চলে। এগুলোর ক্যাপাসিটি চার্জও স্ট্যান্ডবাই অবস্থায় দিতে হয়। সার্বক্ষণিক যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চলছে সেগুলোকেও আমাদের সার্বক্ষণিক ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়। সরকারি-বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র সব জায়গাতেই বিদ্যুতের উৎপাদন খরচের একটি অংশ হচ্ছে ক্যাপাসিটি চার্জ। বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ১৫ টাকা হলে এর মধ্যে ১৩ টাকা জ্বালানি ও ২ টাকা হচ্ছে ক্যাপাসিটি খরচ। আবার যখন বিদ্যুৎ কেন্দ্র অলস বসে থাকে তখন জ্বালানি খরচ হচ্ছে না, অথচ তখনো বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে। প্রয়োজন না থাকায় তখন হয়তো সরকার বিদ্যুৎ নিচ্ছে না কিন্তু ক্যাপাসিটি চার্জ ঠিকই দিচ্ছে। যেসব কেন্দ্র আদৌ ব্যবহার হচ্ছে না বা খুব কম ব্যবহার হচ্ছে, সেসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জই বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ক্ষেত্রে সরকারকে কঠোর হতে হবে।  চুক্তি স্থগিত করে সেগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। বিশেষত, দেশের অর্থনীতিতে ক্যাপাসিটি চার্জ যেহেতু বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে সেহেতু এ ক্ষেত্রের অপচয় রোধ করা জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর