শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি

কর্তাদের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙুক

রাজধানীর অভিজাত কিংবা অনভিজাত এলাকার মধ্যে খোঁড়াখুঁড়ির দিক থেকে কোনো বৈষম্য নেই। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ইচ্ছা হলেই রাস্তা খোঁড়ে এবং কাজ শেষে যেনতেনভাবে ভরাট করে দায় সারে। সেবা কিংবা উন্নয়নের অজুহাতে নাগরিক জীবন দুর্বিষহ করাকে তারা কর্তব্য বলে ভাবে। এ কর্তব্য পালনে এক সংস্থার খোঁড়াখুঁড়ি শেষ হতেই এগিয়ে আসে আরেক সংস্থা। সমন্বয়ের অভাবে সিটি করপোরেশন বা সরকারি টাকার শ্রাদ্ধ হয়। প্রচলিত প্রবাদ- লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন। পকেট থেকে টাকা ব্যয়ের বদলে পকেটপূর্তির সম্ভাবনা যেহেতু থাকে সেহেতু সব সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্তারা খোঁড়াখুঁড়িতে দারুণ উৎসাহী। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গুলশান-১ থেকে মহাখালী আমতলী সড়কে চলছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বৃহৎ কর্মযজ্ঞ। সড়কের মধ্যখানে মিডিয়ামওয়ের পাশে প্রায় ১০ ফুট অংশ কেটে ফেলে রাখা হয়েছে। ড্রেন নির্মাণে কোথাও রাখা হয়েছে পাইপ। এখনো চলছে সড়ক খননের কাজ। রাস্তা পারাপার হতে গিয়ে অনেক পথচারী গর্তে পড়ে আহত হচ্ছেন। একই অবস্থা গুলশান-২ এলাকার বিভিন্ন সংযোগ সড়কের। এ এলাকায় ডেসকো বৈদ্যুতিক সংযোগের জন্য সড়ক খুঁড়ে রেখেছে। প্রায় এক মাস ধরে ওই সড়কের অচলাবস্থা। বৈদ্যুতিক সংযোগের জন্য তারা ইচ্ছামতো খোঁড়াখুঁড়ি করেছে। কাজের ধরন এমন যে, ঢিমেতালে যেভাবে হোক তারা তাদের কাজ করছে। অপরিকল্পিত কাজের জন্য নগরবাসীর সীমাহীন দুর্ভোগ সইতে হলেও সেদিকে তাদের কোনো দৃষ্টি নেই। গুলশানের ৮০, ৮৪, ৯০, ১০৪ নম্বর সড়কের ১ ফুট অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। সংস্কারকাজ করতে গিয়ে সড়ক খুঁড়ে ফেলে রাখা হয়েছে মাটি, বালু। এতে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। ওপরের চিত্রটি রাজধানীর সবচেয়ে অভিজাত এলাকার। যেখানে খোঁড়াখুঁড়ির বিরুদ্ধে হইচই করার লোকের অভাব নেই। রাজধানীর অন্য এলাকাগুলোকে তো সারা বছরই ভুগতে হয় খোঁড়াখুঁড়ির ভোগান্তিতে। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজে সমন্বয় থাকলে জনভোগান্তি অন্তত অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব হতো। কিন্তু বোধগম্য কারণেই সে পথে যেতে সবার আপত্তি। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙলে স্বস্তি ফিরে পাবেন নগরবাসী।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর