বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

জাওয়াহিরি হত্যাকান্ড

জঙ্গিবাদের জন্য বড় আঘাত

বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরিকে ড্রোন হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আল-কায়েদা-প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার ১১ বছর পর জঙ্গি সংগঠনটির সহপ্রতিষ্ঠাতা জাওয়াহিরিকে হত্যা করা হলো। কাবুলের একটি আবাসিক এলাকায় ড্রোন হামলা চালিয়ে জাওয়াহিরিকে হত্যা করা হলো। পাকিস্তানের একটি ক্যান্টনমেন্টের গোপন আস্তানায় হামলা চালিয়ে লাদেনকে হত্যা করা হয়। মার্কিন সেনারা সরাসরি সে হত্যা অভিযানে অংশ নেন। জাওয়াহিরিকে হত্যার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে ড্রোন প্রযুক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান শত্রু হিসেবে দেখা হতো লাদেন ও জাওয়াহিরিকে। আল-কায়েদার দুই শীর্ষ নেতার হত্যাকান্ডের পর এ জঙ্গি সংগঠনের তৎপরতা কিছুটা হলেও স্তিমিত হয়ে পড়বে। ১৯৫০ সালে মিসরের এক ধনাঢ্য পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন আয়মান আল জাওয়াহিরি। জঙ্গিবাদী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ার আগে তিনি মূলত একজন সার্জন ছিলেন। বারবার কারাবরণ ও নিপীড়নের মুখে একপর্যায়ে মিসর থেকে পাকিস্তানে পালিয়ে যান। সেখানে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে মুজাহিদিনদের সংগঠিত করেন। ওই সময় জাওয়াহিরির সঙ্গে পরিচয় হয় ওসামা বিন লাদেনের। উভয়ে মিলে গড়ে তোলেন আল-কায়েদা। ২০১১ সালে পাকিস্তানে এক অভিযানে লাদেনকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র। এর পর থেকে দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন জাওয়াহিরি। তাকে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে চালানো হামলার মূল রূপকার মনে করা হয়। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ‘২২ মোস্ট ওয়ানটেড সন্ত্রাসী’ তালিকায় ২ নম্বরে তার নাম ছিল। ১ নম্বরে ছিল ওসামা বিন লাদেনের নাম। সে সময় জাওয়াহিরির মাথার জন্য ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে জাওয়াহিরির হত্যাকান্ডকে বিশেষ গুরুত্বের চোখে দেখা হচ্ছে। কারণ আল-কায়েদার তৎপরতা এ অঞ্চলেই বেশি। তালেবানদের পিতৃসংগঠন হিসেবে ভাবা হয় আল-কায়েদাকে। আফগানিস্তানে তালেবান শাসন কায়েমের পর জাওয়াহিরি কাবুলেই বসবাস করছিলেন। এ হত্যাকান্ডের মাধ্যমে মার্কিন নাগরিকদের হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশোধস্পৃহার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হলো। জঙ্গিবাদের জন্য জাওয়াহিরি হত্যাকান্ড বড় এক আঘাত বলে বিবেচিত হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর