রবিবার, ৭ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

জ্বালানি তেল

মূল্য সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত যৌক্তিক

ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেনের দাম প্রতি লিটার ৩৪ থেকে ৪৬ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের মূল্য বরাবরই অনেক কম ছিল। একাধিকবার তেলের দাম বাড়ানোর গুঞ্জন উঠলেও সরকার সে পথে হাঁটেনি। এবার বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে কভিড-পরবর্তী বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য তেলের দাম বাড়ানো ছাড়া কোনো উপায়ই ছিল না। সরকারের তরফেও আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম অবিশ্বাস্য হারে বেড়ে যাওয়ার কারণে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। এর আগে গত বছরের নভেম্বরে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। সে সময় ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানো হয়। শুক্রবার নতুন দাম ঘোষণার পর পেট্রোল পাম্পগুলোয় দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, যত দিন সম্ভব ছিল তত দিন সরকার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির চিন্তা করেনি। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই কিছুটা অ্যাডজাস্টমেন্টে যেতে হচ্ছে। ২০১৬ সালের এপ্রিলে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য কমিয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী মূল্য পুনর্বিবেচনা করা হবে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বিগত ছয় মাসে জ্বালানি তেল বিক্রিতে ৮০১৪.৫১ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে সরকার যে যুক্তি দেখিয়েছে তাতে দ্বিমত পোষণের সুযোগ নেই। আইএমএফসহ দাতা সংস্থাগুলো জ্বালানি ক্ষেত্রে বিপুল ভর্তুকিকে অর্থনৈতিক ঝুঁকি হিসেবে দেখছে। ফলে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থেই জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির অপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে সরকার। তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে পরিবহন ভাড়া যাতে লাগামহীন না বাড়ে সেদিকে সরকারকে তীক্ষè নজর রাখতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলে দাম সমন্বয় করা হবে। জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রায় শতভাগ আমদানিনির্ভর। এ ক্ষেত্রে বেশি দামে তেল আমদানি করে কম দামে বিক্রির সুযোগ থাকা উচিত নয়। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে সঙ্গে সঙ্গে সমন্বয় করা হবে এমনটিই যৌক্তিক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর