রবিবার, ৭ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

শিক্ষার্থীদের শারীরিক নির্যাতন

এ নিষ্ঠুরতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শারীরিক ও মানসিক শাস্তি বন্ধে সরকার ২০১০ সালের ৯ আগস্ট একটি পরিপত্র জারি করে। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক শাস্তি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা যে অনেকেই তোয়াক্কা করছেন না তার প্রমাণ কুমিল্লার বরুড়ায় শিক্ষকের নির্যাতনে এক মাদরাসাছাত্রের মৃত্যু। মৃত মো. সিহাব উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের শশইয়া গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে। সে স্থানীয় মেড্ডা আল মাতিনিয়া নুরানি মাদরাসার ছাত্র। কয়েকদিন আগে শিক্ষক আবদুর রব সিহাবকে বেত্রাঘাত করেন বেপরোয়াভাবে। এতে সিহাব অসুস্থ হয়ে পড়লে শিক্ষকরা তাকে ওষুধ খাওয়ান। তাতেও সুস্থ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার মাদরাসা থেকে তাকে বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকরা দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পথে শুক্রবার বেলা ১টায় সিহাবের মৃত্যু হয়। শিক্ষার্থীদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বন্ধে সরকার বিভিন্ন সময় পরিপত্র ও নির্দেশনা জারি করলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তা উপেক্ষিত। শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের কথা চাউর হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তকে গা ঢাকা দিতে সহায়তা করে। শিশু নির্যাতন যে একটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ, সে বিচার-বিবেচনা মাথায়-মনে কোথাও ঠাঁই পায় না। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও এমন ঘটনা ঘটছে। তবে এ নির্যাতনের রূপ একটু ভিন্ন। ছাত্রাবাসে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মীদের নির্যাতনের শিকারে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের নির্মম আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ নির্মমতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল হতে হবে। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নয়, বাড়িতেও শিশুরা শাসনের নামে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। শিক্ষক-অভিভাবক সবাইকেই নির্যাতনের মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে। সরকারি পরিপত্র যথেষ্ট না হলে আইন প্রণয়নের কথা ভাবতে হবে।

সর্বশেষ খবর