সোমবার, ৮ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

ডেথ রেফারেন্স

দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ প্রশংসনীয়

বিলম্বিত বিচার বিচারহীনতার নামান্তর এমন মূল্যায়ন বিচারব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত বিশিষ্টজনদের। বাংলাদেশে মামলার বিপরীতে বিচারকের সংখ্যা আদতেই কম। ফলে প্রায় প্রতিটি আদালতে মামলার স্তূপ গড়ে উঠছে। মামলা নিষ্পত্তিতে সময় ক্ষেপণ বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করছে। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী দায়িত্ব নেওয়ার পর মামলাজট কমানোর উদ্যোগ নেন। বিশেষ করে পুরনো মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির ওপর তিনি জোর দেন। এর ফলে দেশের ইতিহাসে প্রথমবার ৩০ মার্চ এক দিনেই ১২টি ডেথ রেফারেন্স মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে হাই কোর্টে। অবকাশকালীন ছুটিতে গঠিত ১১টি বিশেষ বেঞ্চ এসব রায় দেন। শুধু ওই এক দিনই নয়, চলতি বছরের শুরু থেকেই হাই কোর্টে গতি বেড়েছে ফাঁসির মামলা নিষ্পত্তিতে। মার্চের শেষ ১০ কার্যদিবসে ১১ বিশেষ বেঞ্চে ৩৫টি ডেথ রেফারেন্স মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। আর এ বছরের প্রথম ছয় মাসে নিয়মিত তিনটি বেঞ্চে আরও ৫৩টি মৃত্যুদন্ড অনুমোদনের মামলা নিষ্পত্তি হয়। সুপ্রিম কোর্টের তথ্যানুযায়ী, ৩০ জুন পর্যন্ত হাই কোর্টে ডেথ রেফারেন্স মামলা নিবন্ধন হয় ৯১টি। এর বিপরীতে একই সময়ে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৮টি। এ নিষ্পত্তির হার অন্য বছরগুলোর প্রায় সমান। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, এখনো বিচারাধীন ডেথ রেফারেন্স মামলা প্রায় সাড়ে ৮০০। আইন অনুযায়ী কোনো মামলায় নিম্ন আদালত থেকে দেওয়া মৃত্যুদন্ড হাই কোর্টের অনুমোদন ছাড়া কার্যকরের সুযোগ নেই। এ কারণে মৃত্যুদন্ডসংক্রান্ত মামলার নথিপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাই কোর্টে। কিন্তু মামলার তুলনায় বিচারকের সংখ্যা কম হওয়ায় ডেথ রেফারেন্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রায় পেতে বছরের পর বছর কেটে যায়। ডেথ রেফারেন্সের ক্ষেত্রে এ বছরের প্রথম ছয় মাসে নিষ্পত্তির হার অন্য সময়ের এক বছরের সমান হলেও এতে সন্তুষ্টির কোনো অবকাশ নেই। কারণ এ সময়ে হাই কোর্টে যে মামলা নিবন্ধিত হয়েছে, নিষ্পত্তিকৃত মামলা সংখ্যার দিক থেকে তার চেয়ে কম। মামলাজট কমাতে হলে নিষ্পত্তির হার আরও বাড়াতে হবে। এজন্য বিচারকের সংখ্যা যেমন বাড়ানো দরকার, তেমন আইনজীবীসহ আদালত-সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতার বিষয়টিও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর