শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রস্তাবিত ওষুধ আইন

প্রয়োগের ক্ষেত্রে দৃঢ় হতে হবে

ওষুধ উৎপাদনে বাংলাদেশ প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। বেশ কিছু ওষুধ বিদেশ থেকে আমদানি করা হলেও দেশ থেকে রপ্তানি হয় তার চেয়ে বেশি। বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকার মতো উন্নত দেশগুলোয়ও। এটি যেমন একটি আলোকিত দিক তেমন অন্ধকারের দিক হলো বাংলাদেশে নকল-ভেজাল ওষুধও তৈরি হয় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে। গ্রামের স্বল্পশিক্ষিত গরিব মানুষের অজ্ঞতা পুঁজি করে নকল ও ভেজালকারীরা অবাধে চালাচ্ছে ব্যবসা। সরকার দেশের হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোয় বিনামূল্যে সরবরাহ করে কোটি কোটি টাকার ওষুধ। সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীনদের সে ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়ার কথা। কিন্তু হাসপাতাল ও ক্লিনিকের একশ্রেণির অসৎ কর্মকর্তার কারসাজিতে সেসব ওষুধের একাংশ বাইরে পাচার হয়ে যায়। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়ার বদলে বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে বাধ্য করা হয়। এ নৈরাজ্যের অবসানে সরকারি ওষুধ চুরি ও ভেজাল এবং লাইসেন্স ছাড়া ওষুধ উৎপাদনের বিরুদ্ধে কড়া আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ওষুধ আইন, ২০২২-এর খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী কেউ সরকারি ওষুধ চুরি করে বিক্রি করলে ১০ বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। একইভাবে ভেজাল ও লাইসেন্স ছাড়া ওষুধ উৎপাদন করলেও ১০ বছরের জেল বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় বিধান রাখা হয়েছে। সরকারি ওষুধ চুরি বন্ধে কঠোর সাজার ব্যবস্থা অপরাধীদের নিরস্ত করতে সাহায্য করবে আমরা এমন আশাই করতে চাই। নকল-ভেজাল বা লাইসেন্স ছাড়া ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত আইনে কঠোর সাজার যে বিধান রাখা হয়েছে তা প্রশংসাযোগ্য। তবে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে তা যেন শুধু কাগজ-কলমে সীমাবদ্ধ না থাকে। অপরাধীদের দমনে সঠিকভাবে আইন প্রয়োগের কোনো বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে দুর্বলতা থাকায় দেশে অপরাধ দমনে জুতসই আইন থাকলেও তার প্রয়োগের অভাবে অপরাধীদের মনে ভয় ঢুকছে না। প্রস্তাবিত আইনের ক্ষেত্রে তা যাতে না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর